এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

সোমবার, ১৩ মে, ২০২৪

একটি  বিশেষ সতর্কতা মূলক পোষ্ট।

 একটি বিশেষ সতর্কতা মূলক পোষ্ট।


বাঁচতে হলে জানতে হবে। মিনিকেট চালের ভাত গরমকালেও অনেকক্ষণ ভালো থাকে! আহারে! কত ভালো চাল! তাইনা?


আসুন জেনে নিই আসলেই কি আমরা ভালো চাল খাচ্ছি?নাকি আবর্জনা?


❌ মিনিকেট নামে কোন ধান চাষ হয়না বাংলাদেশে। 

তাহলে, এই চাল বাজারে আসে কোথা থেকে- এই প্রশ্নের উত্তর খুব সহজ, মিনিকেট চাল তৈরী হয় কারখানায়।


🌾দেশী জাতের ধান (মোটা চালের) চালকলে আসার পর শুরু হয় তেলেসমাতি। প্রথমে ধানের খোসা ছাড়ান হয়। খোসা ছাড়ানোর পর চালের অকৃত্রিম/ন্যাচারাল রঙে কিছুটা খয়েরি/বাদামি আভা থাকে। এরপর কেমিক্যাল ও হোয়াইটনার মেশিনের মাধ্যমে চালের খয়েরি/বাদামি আভার আবরণটিকে আলাদা করা হয়। এই আবরণটি বাদ দেওয়ার পর চাল কিছুটা সরু ও সাদা হয়। এখানেই শেষ নয়, পলিশার মেশিনের মাধ্যমে পলিশ করলেই হয়ে গেল মিনিকেট চাল।


🗣️এবার প্রশ্নের তীর তাক করে কেউ বলতেই পারেন- মোটা চালকে এতোভাবে প্রসেস করে মিনিকেট বানালে তো চাল ব্যবসায়ীর ক্ষতি। 

এবার ক্ষতির হিসেবটা করা যাক- ১০০০কেজি মোটা চাল প্রসেস করে মিনিকেট বানালে সাধারণত চাল পাওয়া যায় ৯৩৩কেজি, সাদা খুদ ২৬.৫ কেজি, কালো খুদ ১৪কেজি, মরা চাল ৪.৫ কেজি, ময়লা ০.৭৫ কেজি এবং পলিশ ২৭ কেজি। যোগ করলে দেখা যায় এক হাজার কেজি চাল প্রসেস করার পর পাওয়া যাচ্ছে প্রায় ৬কেজি বেশী। 

এই ছয় কেজি হচ্ছে জলীয় বাষ্প ও পানি। রাইস ব্রান তেল কারখানাগুলো পলিশ কিনে নেয়, সাদা খুদ বাজারে চালের অর্ধেক দামে বিক্রি হয়। কালো খুদ আর মরা চাল পশুখাদ্য হিসেবে বিক্রি হয়। ভাবছেন চাল প্রসেসের খরচ কত? ১০০০কেজি মোটা চাল প্রসেস করে মিনিকেট বানাতে খরচ হয় মাত্র ৯০০টাকা হতে ১৫০০টাকা। অর্থাৎ কেজিপ্রতি ৯০পয়সা থেকে দেড় টাকা।


🤔মোটা চাল প্রসেস করে মিনিকেট বানিয়ে বিক্রেতা একটু বেশী লাভ করলে ক্রেতার ক্ষতি কি? 

ছোট ক্ষতি হচ্ছে ক্রেতা চিকন চালের দামে মোটা চাল কিনছেন, অর্থাৎ কেজিতে ১৫থেকে ২০টাকা পর্যন্ত ঠকছেন। বড় ক্ষতি হলো কেজিতে ১৫ থেকে ২০টাকা বেশী দিয়ে মিনিকেট চাল নয়, ক্রেতা কিনছেন মোটা চালের আবর্জনা। কারণ, প্রসেস করার মাধ্যমে চালের উপরি আবরণ (bran অর্থাৎ pericarp, seed coat, aleurone layer, embryo) বা পুষ্টিকর অংশ বাদ দেওয়া হয়।

উল্লেখ্য, চালের সর্বমোট ৮৫ ভাগ ভিটামিন B3 থাকে pericarp–এ, প্রোটিন আর ফ্যাট থাকে Aleurone layer -এ, খনিজের ৫১ ভাগ ও মোট আঁশের ৮০ ভাগ থাকে bran –এ, ভিটামিন B1 ও ভিটামিন E থাকে embryo -তে। চালের সব পুষ্টিকর উপাদান তেলের মিলে বিক্রির জন্য প্রসেস করে আলাদা করার পর চাল আর চাল থাকেনা, হয়ে যায় চালের আবর্জনা।


❌ মিনিকেট চাল নামে চালের আবর্জনাকে যতোটা ক্ষতিকর মনে করছেন বাস্তবে আরও বেশী ক্ষতিকর। মোটা চালকে মিনিকেটে রূপান্তর করার বিভিন্ন পর্যায়ে সোডিয়াম হাইড্রোক্লোরাইড, সোডিয়াম হাইড্রোক্লোরাইড + টুথপেস্ট +এরারুটের মিশ্রণ, সোয়াবিন তেল, ফিটকারি, বরিক পাউডার ব্যবহার করা হয়। প্রতি মৌসুমেই বের হয় নিত্য নতুন কৌশল।


❌ মিনিকেট চালে কখনো পোকা ধরেনা। কারণ পোকাও জানে এই চাল খাওয়ার যোগ্য নয়, এতে পুষ্টিগুণ নেই। 

অথচ দেখতে সুন্দর এই অখাদ্যকে আমি আপনি আমাদের পরিবার কে নিশ্চিন্তে খাওয়াচ্ছি এবং নিজেরাও খাচ্ছি! 

কিন্তু কেন!?😕


✨শুধু চাল নয়, এমন আরও হাজারো অখাদ্য, আবর্জনা আমরা প্রতিনিয়ত খেয়ে যাচ্ছি জেনে- না জেনে আর তার ফলাফল স্বরূপ ভুগতে হচ্ছে কঠিন কঠিন রোগে সেই সাথে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য রেখে যাচ্ছি এক ভয়াবহ অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও জীবনব্যবস্থা! 

হিসেব টা মেলানো খুবই সহজ, বাড়িতে কোনো মুরব্বী থাকলে একটু জেনে নিতে হবে আগেকার দিনে তারা কেমন খাবার খেয়ে জীবন যাপন করেছে আর তাদের রোগ বালাই কেমন ছিলো এবং তাদের চিকিৎসা-ই বা কেমন ছিলো।

আজকের দিনে আমরা হাজারো নিত্য নতুন রোগে আক্রান্ত হচ্ছি আর নিত্য নতুন ঔষধ সেবন করে চলেছি যা একটা রোগকে ঠিক করে আরো শত রোগের জন্ম দিচ্ছে আমাদের শরীরে। এ যেনো এক চোরাবালির মধ্যে ডুবে আছি আমরা।


"সুস্বাস্থ্য যেমন

সকল সুখের মূল, 

ঠিক তেমন

স্বাস্থ্যকর খাবার সুস্বাস্থের মূল।"


ফেইসবুক থেকে নেওয়া 

রবিবার, ১২ মে, ২০২৪

পিরোজপুরের মাদ্রাসাছাত্রী আমিনাকে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের আশীর্বাদসূচক চিঠি 

 পিরোজপুরের মাদ্রাসাছাত্রী আমিনাকে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের আশীর্বাদসূচক চিঠি দেখে বোঝা যায় সেই সময় রবীন্দ্রনাথের জনপ্রিয়তা সকল প্রকার বাঙালীর কাছে কত বেশি ছিলো! সময়টা ১৯৪০ এর দিকে। আমিনার পোশাক এবং চিঠিতে আমিনার নিজের নামের আগে 'কুমারী' শব্দের ব্যবহারটাও লক্ষণীয়।


শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতীর রবীন্দ্রভবন মহাফেজখানায় রবীন্দ্রনাথের কয়েক হাজার চিঠির সচিবকৃত অবিকল নকল সংরক্ষিত আছে। কবির হাতে লেখা মূল চিঠি প্রাপকের কাছে ডাকে পাঠানোর আগে তাঁর সচিব চিঠির অনুলিপি করে রাখতেন। তাঁকে লেখা ভক্ত–অনুরাগী ও অন্যদের মূল চিঠি কবি সযত্নে রক্ষা করতেন।


এমনই একটি চিঠি রবীন্দ্রভবনের নথিতে পাওয়া যায় দুই দশক আগে। চিঠিটি জনৈক কিশোরী আমিনা মোজাহারের লেখা। তারিখ ১৩ জ্যৈষ্ঠ ১৩৪৭ বঙ্গাব্দ। তৎকালীন বৃহত্তর বরিশালের অবিভক্ত বাকেরগঞ্জ জেলার পিরোজপুর মহাকুমার স্বরূপকাঠি থানার আকলম গ্রাম থেকে পাঠানো কয়েক লাইনের সম্বোধনহীন ছোট চিঠি। নিচে লেখিকার ঠিকানা: চতুর্থ শ্রেণি, আকলম আহমদিয়া জুনিয়র মাদ্রাসা, স্বরূপকাঠি, বাকেরগঞ্জ।


কাজী আমিনা মোজাহার কাজী মোজহার উদ্দীন আহমদ ও হাকিমুন্নেছার কন্যা। স্বরূপকাঠির আকলম আহমদিয়া জুনিয়র মাদ্রাসার ওই তালেবে এলেম- পরবর্তীতে বরিশাল সৈয়দানুন্নেসা স্কুল থেকে প্রবেশিকা (১৯৪৭), ঢাকার ইডেন কলেজ থেকে আইএ (১৯৪৯), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় অনার্স এবং এমএ (১৯৫৮) পাস করেন। হলি ক্রস কলেজ ও ময়মনসিংহ মুমিনুন্নেসা কলেজে শিক্ষকতার পর পাবলিক সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষা দিয়ে পূর্ব পাকিস্তান এডুকেশন সার্ভিসে যোগ দিয়ে চট্টগ্রাম কলেজ, তিতুমীর কলেজ ও ঢাকা কলেজে অধ্যাপনা করেন। তিনি সওগাতসহ অন্যান্য সাময়িকপত্রে রচনা প্রকাশ করেন এবং ভাষা ও বিরচন নামে পাঠ্যবই লেখেন। পরিণত বয়সে আমিনা চারণ করেছেন তাঁর রবীন্দ্রস্মৃতি। পাঠ্যবইয়ে আর চয়নিকায় কবির কবিতার সঙ্গে প্রথম পরিচয় তাঁর। প্রবেশিকা পাঠ্য বাংলা সংকলনে ‘শা–জাহান’ কবিতার আবৃত্তি শুনেছিলেন। পাঠ্যবইয়ে শামসুন্নাহার মাহমুদ ও আনোয়ারা [বাহার] চৌধুরীর লেখা রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে প্রবন্ধ পড়েছেন। তাঁর নিজের কথায়:


‘আমি রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে একটা মধুর আত্মীয়তা অনুভব করতে লাগলাম। আর এই স্পর্ধাটুকুই তাঁকে চিঠি লিখতে উদ্বুদ্ধ করলো আমাকে।...একদিন অতি সঙ্গোপনে বাড়ির সবাইকে লুকিয়ে একখানা চিঠি লিখে ফেললাম।’


এক গরমের দুপুরে পোস্টমাস্টার আমিনার বাবাকে ডেকে পাঠালেন। মোজহার উদ্দীন রবীন্দ্রনাথের প্রতীক [মনোগ্রাম] আঁকা চিঠিটি মেয়েকে দিলেন।

চিঠি পাওয়ার পর বালিকার প্রতিক্রিয়া:

‘আমি পড়তে পারলাম না। আমার সমস্ত হৃদয়মন বারবার শিহরিত হতে লাগল। আমি বিছানায় শুয়ে কাঁদলাম। বাবাও জোহরের নামাজ পড়ে জায়নামাজে বসে মোনাজাত করতে করতে কাঁদলেন।’ (উদ্ধৃত, কাজী সাইফুদ্দীন ওমর, ‘স্বরূপকাঠির প্রত্যন্ত পল্লীগ্রামে রবীন্দ্রনাথের চিঠি’)।


আমিনার যে সম্বোধনহীন চিঠির আশীর্বাদী উত্তর দিয়েছিলেন কবি, সেই চিঠির পাঠ:


➡️ আকলম

১৩ই জ্যৈষ্ঠ

আপনি আমাকে চিনেন না। কিন্তু আমি আপনাকে চিনি। বাংলা বইয়ের মধ্যে আপনাকে দেখেছিও। আপনি আমাদের ছোট ছেলেমেয়েদের খুব ভালবাসেন। আবার আমরা চিঠি লিখলে উত্তরও নাকি দেন। তাই আমি চিঠি লেখছি (ক.) উত্তর দিবেন কিন্তু। আচ্ছা আপনাকে কি বলে ডাকব?

কুমারী আমিনা মোজাহার

চতুর্থ শ্রেণী

আকলম আহমদিয়া জুনিয়র মাদ্রাসা

পো. স্বরূপকাঠি, বাকেরগঞ্জ।


↔️ কবির ছোট আশীর্বাদী চিঠির বয়ান:

GOURIPUR LODGE

KALIMPONG

কল্যাণীয়াসু

তোমার চিঠিখানি পেয়ে খুশি হলুম। আমার আশীর্বাদ গ্রহণ কর। ইতি ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৩৪৭

শুভার্থী

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।


ছবিতে সেই আমিনা মোজাফফর যাকে রবীন্দ্রনাথ পত্র পাঠান।


⭕ এমন সব পোস্ট দেখতে চাইলে ফলো করুন। ⭕

সকাল ০৭ টার সংবাদ তারিখ: ১২-০৫-২০২৪

 সকাল ০৭ টার সংবাদ

তারিখ: ১২-০৫-২০২৪


সংবাদ শিরোনাম:


এ বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ হবে আজ - ফল হস্তান্তর করা হবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে।


দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে টেকসই কৌশল উদ্ভাবনের জন্য প্রকৌশলীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান।


ক্ষমতায় থাকার সময় ভারতের সঙ্গে শত্রুতা করে অবিশ্বাস সৃষ্টি করেছিল বিএনপি - বললেন ওবায়দুল কাদের।


দেশের চলচ্চিত্রকে এগিয়ে নিতে সবধরণের পদক্ষেপ নেবে সরকার - জানালেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী।


গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে হামলা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে রাফাহ থেকে আরো কয়েক হাজার বাসিন্দাকে সরে যাওয়ার নির্দেশ ইসরাইলের।


আজ মিরপুরে টি-টোয়েন্টি সিরিজের পঞ্চম ও শেষ  ম্যাচে সফরকারী জিম্বাবুয়ের মোকাবেলা করবে বাংলাদেশ।

শনিবার, ১১ মে, ২০২৪

এক কোম্পানীতে ছিলো এক পিপড়া। সে প্রতিদিন ৯টায় অফিসে ঢুকতো। তারপর কারো সঙ্গে সময় নষ্ট না করে সঙ্গে সঙ্গে কাজে বসে যেত

 🤨এক কোম্পানীতে ছিলো এক পিপড়া। সে প্রতিদিন ৯টায় অফিসে ঢুকতো। তারপর কারো সঙ্গে সময় নষ্ট না করে সঙ্গে সঙ্গে কাজে বসে যেত।


সে যে পরিমাণ কাজ করত, তাতে কোম্পানির উৎপাদন হতো প্রচুর এবং এর ফলে সে আনন্দের সঙ্গেই জীবন নির্বাহ করত।


ওই অফিসের সিইও সিংহ অবাক হয়ে দেখত, এই পিঁপড়াটি কোনো ধরনের সুপারভিশন ছাড়াই প্রচুর কাজ করছে। সিংহ ভাবল, পিঁপড়াকে যদি কারও সুপারভিশনে দেওয়া হয়, তাহলে সে আরও বেশি কাজ করতে পারবে।


কয়েক দিনের মধ্যেই সিংহ একটি তেলাপোকাকে পিঁপড়ার সুপারভাইজার হিসেবে নিয়োগ দিল। সুপারভাইজার হিসেবে এই তেলাপোকাটির ছিল দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা, আর সে দুর্দান্ত রিপোর্ট লিখতে পারত।


তেলাপোকাটি প্রথমেই সিদ্ধান্ত নিল, এই অফিসে একটি অ্যাটেনডেন্স সিস্টেম থাকা উচিত।


কয়েক দিনের মধ্যেই তেলাপোকার মনে হলো, তার একজন সেক্রেটারি দরকার, যে তাকে রিপোর্ট লিখতে সাহায্য করবে। … সে একটা মাকড়সাকে নিয়োগ দিল এই কাজে যে সব ফোনকল মনিটর করবে, আর নথিপত্র রাখবে।


সিংহ খুব আনন্দ নিয়ে দেখল যে তেলাপোকা তাকে প্রতিদিনের কাজের হিসাব দিচ্ছে আর সেগুলো বিশ্লেষণ করছে গ্রাফের মাধ্যমে। ফলে খুব সহজেই উৎপাদনের ধারা সম্পর্কে ধারণা নেওয়া যাচ্ছে এবং সিংহ সেগুলো বোর্ড মিটিংয়ে ‘প্রেজেন্টেশন’ আকারে পেশ করে বাহবা পাচ্ছে।


কিছুদিনের মধ্যেই তেলাপোকার একটি কম্পিউটার ও লেজার প্রিন্টার প্রয়োজন হলো এবং এগুলো দেখভালের জন্য আইটি ডিপার্টমেন্ট গঠন করল। আইটি বিশেষজ্ঞ হিসেবে নিয়োগ পেল মাছি।


আমাদের কর্মী পিঁপড়া, যে প্রতিদিন অফিসে এসে প্রচুর কাজ করে মনের সুখে গান গাইতে গাইতে বাসায় ফিরত, তাকে এখন প্রচুর পেপার ওয়ার্ক করতে হয়, সপ্তাহের চার দিনই নানা মিটিংয়ে হাজিরা দিতে হয়।


নিত্যদিন এসব ঝামেলার কারণে কাজে ব্যাঘাত ঘটায় উৎপাদন কমতে লাগল, আর সে বিরক্ত হতে লাগল।


সিংহ সিদ্ধান্ত নিল, পিঁপড়া যে বিভাগে কাজ করে, সেটাকে একটা আলাদা ডিপার্টমেন্ট ঘোষণা করে সেটার একজন ডিপার্টমেন্ট প্রধান নিয়োগ দেওয়ার এটাই উপযুক্ত সময়।


সিংহ ঝিঁঝিপোকাকে ওই ডিপার্টমেন্টের প্রধান হিসেবে নিয়োগ দিল। ঝিঁঝিপোকা প্রথম দিন এসেই তার রুমের জন্য একটা আরামদায়ক কার্পেট ও চেয়ারের অর্ডার দিল।


কয়েক দিনের মধ্যেই অফিসের জন্য স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যান তৈরি করতে ঝিঁঝি পোকার একটি কম্পিউটার ও ব্যক্তিগত সহকারীর প্রয়োজন হলো। কম্পিউটার নতুন কেনা হলেও ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে ঝিঁঝিপোকা নিয়োগ দিল তার পুরোনো অফিসের একজনকে।


পিঁপড়া যেখানে কাজ করে, সেখানে আগে ছিল চমৎকার একটা পরিবেশ। এখন সেখানে কেউ কথা বলে না, হাসে না। সবাই খুব মনমরা হয়ে কাজ করে।


ঝিঁঝিপোকা পরিস্থিতি উন্নয়নে সিংহকে বোঝাল, ‘অফিসে কাজের পরিবেশ’ শীর্ষক একটা স্টাডি খুব জরুরি হয়ে পড়েছে।


পর্যালোচনা করে সিংহ দেখতে পেল, পিঁপড়ার বিভাগে উৎপাদন আগের তুলনায় অনেক কমে গেছে।


কাজেই সিংহ কয়েক দিনের মধ্যেই স্বনামখ্যাত কনসালট্যান্ট পেঁচাকে অডিট রিপোর্ট এবং উৎপাদন বাড়ানোর উপায় বাতলে দেওয়ার জন্য নিয়োগ দিল।


পেঁচা তিন মাস পিঁপড়ার ডিপার্টমেন্ট মনিটর করল, সবার সঙ্গে ওয়ান টু ওয়ান কথা বলল। তারপর বেশ মোটাসোটা একটা রিপোর্ট পেশ করল সিংহের কাছে। ওই রিপোর্টের সারমর্ম হলো, এই অফিসে প্রয়োজনের তুলনায় কর্মী বেশি। কর্মী ছাঁটাই করা হোক।


পরের সপ্তাহেই বেশ কয়েকজন কর্মী ছাঁটাই করা হলো। বলুন তো, কে সর্বপ্রথম চাকরি হারাল?


ওই হতভাগ্য পিঁপড়া। কারণ, পেঁচার রিপোর্টে লেখা ছিল, ‘এই কর্মীর মোটিভেশনের ব্যাপক অভাব রয়েছে এবং সর্বদাই নেতিবাচক আচরণ করছে, যা অফিসের কর্মপরিবেশ নষ্ট করছে।


সংগৃহীত..

কাদম্বরীদেবী মারা যাওয়ার পর স্বজনদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে জ্যোতিরিন্দ্রনাথ বলেছিলেন, ‘তাঁকে ভালোবাসি’...

 কাদম্বরীদেবী মারা যাওয়ার পর স্বজনদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে জ্যোতিরিন্দ্রনাথ বলেছিলেন, ‘তাঁকে ভালোবাসি’...


১৯০৮ সালের মে মাস! এক ঊনষাট বছরের পুরুষ ব্যক্তিগত ডায়েরির পাতায় আনমনে লিখে রাখছেন কিছু শব্দের কোলাজ—


‘আজ আমার জন্মদিন— ৫৯ বৎসরে পদার্পণ করলুম— মেজো বৌঠানের কাছে ধুতি-চাদর-রুমাল ও পাঞ্জাবী পেলাম— মেজদাদা একটা বই দিয়েছেন— বৈকালে কোলদের নাচ হল— পানিবাবু— নরেন ডাক্তার এসেছিলেন—’


জন্মদিনে এইটুকু পাওয়া? এইটুকু মাত্র স্বীকৃতি হয়তো প্রাপ্য ছিল না মানুষটার। ওই ডায়েরির পাতা থেকে জানা যায়, ডায়েরি লেখকের লেখা ‘কিঞ্চিৎ জলযোগ’ নাটকটিও নাকি অভিনয় করা হয়েছিল সেদিন। অনেকেই এইবার অনুমান করে নিয়েছেন, কার কথা বলছি। এই উদাসী শব্দগুলি যিনি লিখেছিলেন, তিনি জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর। জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ির অত্যন্ত প্রতিভাবান এক সদস্য। দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং সারদা সুন্দরী দেবীর ষষ্ঠ সন্তান ছিলেন জ্যোতিরিন্দ্রনাথ। ১৮৪৯ সালের ৪ মে জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্ম হয়। বহুমুখী প্রতিভা নিয়ে পৃথিবীতে এসেছিলেন তিনি। রূপে, গুণে, উৎসাহে, উদ্দীপনায় সেই আমলের প্রতিভাবান তরুণ জ্যোতিরিন্দ্রনাথ একদিকে নাটক লিখছেন, অন্যদিকে অনুবাদ করছেন অদ্ভুত ক্ষিপ্রতায়। ‘সরোজিনী’, ‘অলীকবাবু’— এই নাটক দুটি অত্যন্ত সাড়া ফেলেছিল তখনকার নাট্যমহলে। বাংলা নাট্যসাহিত্যে অদ্ভুতনাট্যের ধারা তিনিই নিয়ে এসেছিলেন। তিনি বহুভাষাবিদ ছিলেন। গান লিখেছেন, ছবি এঁকেছেন, জমিদারি পরিচালনা করেছেন, স্বদেশি স্টিমারের প্রচলন করেছেন। ঠাকুরবাড়ির হিন্দুমেলা, স্বদেশী সভা, ভারতী পত্রিকা, তাঁতের কাপড় কল প্রতিষ্ঠা, শিকার ও বন্দুক চালনা শেখানো, সর্বজনীন পোশাকের প্রচলন— সব তাঁর উদ্যোগে সম্ভব হয়েছে। দেবেন্দ্রনাথ প্রতিষ্ঠিত ব্রাহ্মসভার সম্পাদকও ছিলেন তিনি। সেতার, পিয়ানো, ভায়োলিন, হারমোনিয়াম বাজাতেন অনায়াসে। বীণাবাদিনী নামে একটি সঙ্গীত বিষয়ক পত্রিকা  প্রকাশ করতেন। তাঁর আঁকা ছবি দেখে রোটেনস্টাইন মুগ্ধ হয়েছিলেন। বর্তমানে জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুরের আঁকা অনেক ছবি রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে সংরক্ষিত আছে।লালন ফকিরের একমাত্র ছবিটি তাঁরই আঁকা। জ্যোতিরিন্দ্রনাথ নীলচাষ করে অর্থ উপার্জন করেছিলেন একসময়। খুলনা ও বরিশালের ভিতর দিয়ে স্টিমার চলার প্রয়োজনে স্টিমারের শেল কিনেছিলেন তিনি। পরে তা ইঞ্জিনের সঙ্গে যুক্ত করে জাহাজ চালু করেন— সরোজিনী নামে। তারপর ফ্লোটিলা নামের ব্রিটিশ কোম্পানির সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এবং ভাগ্যের পরিহাসে এই জাহাজের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়। প্রতিভাবান  এই যুবক নিজের অজান্তে আরো একটি কাজ করে গিয়েছেন। একটি কিশোর ছেলেকে নিজের ব্যক্তিত্ব দিয়ে মুগ্ধ ও আবিষ্ট করে গিয়েছেন। সেই কিশোর ছেলেটি একদিন বিশ্বকবি হবেন। জগৎ জোড়া তাঁর নাম! সেদিনের কিশোর রবি তথা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জীবনের শেষে পৌঁছেও জ্যোতিদাদার কথা বলবেন বারবার। জ্যোতিরিন্দ্রনাথ বালককেও শ্রদ্ধা করতে জানতেন। তাই রবীন্দ্রনাথের প্রতিভা বিকশিত হয়েছিল নিজের মতো করে। একটা সময় জ্যোতিরিন্দ্রনাথই ছিলেন রবীন্দ্রনাথের পরম নির্ভরতার জায়গা। একথা কোনোদিন অস্বীকার করেননি রবীন্দ্রনাথ।


জ্যোতিরিন্দ্রনাথের স্ত্রী কাদম্বরী ছিলেন ঠাকুরবাড়ির কর্মচারী শ্যামলালের মেয়ে। সত্যেন্দ্রনাথ ও জ্ঞানদানন্দিনীর তখন অনেক আশা জ্যোতিরিন্দ্রনাথকে নিয়ে। কর্মচারীর মেয়ে  কাদম্বরীকে কোনোদিনই সুনজরে দেখতে পারেননি তাঁরা। নিজেদের অসন্তোষও তাঁরা যথেষ্ট প্রকাশ করেছিলেন। অথচ এই কাদম্বরীকে কেন্দ্র করেই জোড়াসাঁকোর তেতলার ছাদে জন্ম নিল ‘নন্দন কানন’! একসময় জ্যোতিরিন্দ্রনাথের প্রেরণায় কাদম্বরী ঘোড়ায় চড়ে তাঁর সঙ্গে গড়ের মাঠে হাওয়া খেতে যেতেন। কাদম্বরীকে পেয়ে জ্যোতিরিন্দ্রনাথের মন আরও উজ্জীবিত হয়ে উঠেছিল সেই সময়। ঘরোয়া পরিবেশে শুরু হল সাহিত্যচর্চা। কখনও জ্যোতিরিন্দ্রনাথ সস্ত্রীক চলে যেতেন চন্দননগরের গঙ্গাতীরে, মোরান সাহেবের বাগান বাড়িতে। রবীন্দ্রনাথ থাকতেন তাঁর প্রিয় দুটি মানুষের সঙ্গে। খোলা আকাশ, তিনটি উদার শিল্পী মন, তরুণ বয়স, অপার মুগ্ধতা —জ্যোতিরিন্দ্রনাথের জীবন তখন কানায় কানায় পরিপূর্ণ। ‘জীবনস্মৃতি’তে স্মৃতিচারণা করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ এই পূর্ণ বিকশিত পদ্মফুলের মতো মুহূর্তগুলির। ঠিক যেন ল রূপকথা! কিন্তু, জীবন বড়ো নিষ্ঠুর। তাই জ্যোতিরিন্দ্রনাথের জীবনটা রূপকথা হতে গিয়েও হল না। কাদম্বরীর একাকিত্ব, জ্যোতিরিন্দ্রনাথের উদাসীনতা, ভাগ্য বিপর্যয়, সন্তানহীনতা, জীবনের ব্যস্ততা— একে একে দুর্ভাগ্যের দূত হয়ে এল জ্যোতিরিন্দ্রনাথের জীবনে।


জ্যোতিরিন্দ্রনাথের মতো অমন নাট্যকার যেন গিরিশ ঘোষকে নিজের আসন ছেড়ে দিলেন। এই প্রসঙ্গে অমৃতলাল বসুকে বলেছিলেন, ‘নাট্যজগতে গিরিশচন্দ্র প্রবেশ করিয়াছেন, আমার নাটক রচনার আর প্রয়োজন নাই।’ ব্যবসায় ভরাডুবি আর স্ত্রীর আত্মহত্যা জ্যোতিরিন্দ্রনাথকে ভেঙে গুড়িয়ে দিয়েছিল। কাদম্বরী যখন মারা যান, জ্যোতিরিন্দ্রনাথের বয়স তখন পঁয়ত্রিশ। অথচ সারাজীবন অন্য কোনো নারী আসেনি তাঁর জীবনে। স্বজনদের প্রশ্নের উত্তরে শুধু বলেছিলেন, ‘তাঁকে ভালোবাসি।’ শুধুই অনুশোচনা? নাকি পথ ভুলে যাওয়া ভালোবাসার স্বীকৃতি? একরকম স্বেচ্ছা নির্বাসনই নিয়েছিলেন জ্যোতিরিন্দ্রনাথ। কাজ পাগল জ্যোতিরিন্দ্রনাথের জীবনের শেষ সময়টা কাটে রাঁচিতে, মোরাদাবাদ পাহাড়ে, শান্তিধামে। বিলাসী এই মানুষটির গৃহসজ্জা বলতে ছিল একটিমাত্র ছবি— নিজের হাতে আঁকা কাদম্বরী দেবীর পেনসিল স্কেচ। এই নির্বান্ধব পুরীতে জীবনের প্রিয় মানুষের ছবি বলে দেয় অনেক না বলা কথা। জ্যোতিরিন্দ্রনাথের বেদনার ইতিহাস বড়ো কম নয়! প্রিয় রবীন্দ্রনাথের চোখে তিনি ছিলেন আদর্শস্থানীয়। অথচ কাদম্বরীর মৃত্যু রবীন্দ্রনাথের মনে এই আদর্শের উচ্চতা থেকে তাঁকে যে নামিয়ে দিয়েছিল— একথা বুঝতেন তিনি। এই বেদনা বুকে নিয়েই তাঁর স্বেচ্ছা নির্বাসন। কবি বিহারীলাল চক্রবর্তী কাদম্বরীর মৃত্যুর পর ‘সাধের আসন’ কাব্যে জ্যোতিরিন্দ্রনাথকে রীতিমত আক্রমণ করেছিলেন কবিতার ভাষায়। রবীন্দ্রনাথও কি দায়ী করেননি তাঁকে? আর তিনি নিজে? হয়তো জীবনের এই পরিহাস তাঁর জন্য বরাদ্দ ছিল। জীবন তাঁকে যা যা দিয়েছে, সব কেড়ে নিয়েছে এক এক করে। সত্যেন্দ্রনাথ, জ্ঞানদানন্দিনীর পরিবারের অংশ হয়ে, নিজের হঠাৎ থেমে যাওয়া জীবনের গতি ছাড়াও নিজের  প্রকাশহীন শিল্পচর্চার গল্পই জ্যোতিরিন্দ্রনাথের জীবনের ট্র্যাজেডি।


১৯০৮ সালে লেখা জোতিরিন্দ্রনাথের ডায়েরি, বসন্তকুমার চট্টোপাধ্যায়ের লেখা জ্যোতিরিন্দ্রনাথের জীবনী থেকে তাঁর জীবনের ঘটনা জানা যায়। কিন্তু তাঁর ব্যথার কাহিনি কেউ লেখেনি। সত্যেন্দ্রনাথের পৌত্র সুবীরেন্দ্রনাথের প্রতি জীবনের শেষবেলাকার সবটুকু স্নেহ উজাড় করে দিয়েছিলেন জ্যোতিরিন্দ্রনাথ। হয়তো ঠাকুরবাড়ির এই বালকটিকে ফেলে আসা জীবনের অপূর্ণ ভালোবাসা দিয়ে স্বস্তি পেতে চেয়েছিলেন তিনি। ঠাকুরবাড়ির এই প্রতিভা পূর্ণ সিদ্ধি পেল না এক জীবনে। এক সময়ের উজ্জ্বল বহ্নিশিখার দীপ নিভে যাওয়ার গল্পটি সত্যি বড়ো বেদনার। জ্যোতিরিন্দ্রনাথ যেন এক অভিশপ্ত গন্ধর্ব। ১৯২৫ সালের ৪ মার্চ তাঁর শাপমুক্তি ঘটেছিল। 


সহায়ক গ্রন্থ :-


১. ঠাকুরবাড়ির অন্দরমহল, চিত্রা দেব।

২. ঠাকুরবাড়ির বাহিরমহল, চিত্রা দেব।

৩. কবিমানসী, প্রথম খণ্ড, জগদীশ ভট্টাচার্য।

৪. রবীন্দ্রনাথ ও রবীন্দ্রনাথ, পূর্ণানন্দ চট্টোপাধ্যায়।

Collected

স্মরনে দিগ্বিজয়ী নেপোলিয়ন বোনাপার্ট লিখেছেন - আবদুল্লা ইবন মামুদ ঋণ - রোর বাংলা

 স্মরনে দিগ্বিজয়ী নেপোলিয়ন বোনাপার্ট

লিখেছেন - আবদুল্লা ইবন মামুদ

ঋণ - রোর বাংলা

**************

ইতিহাসের বিখ্যাত কয়েকজন দিগ্বিজয়ীর নাম বলতে গেলে অবশ্যই শুরুতে একজনের নাম চলে আসবে যিনি নেপোলিয়ন বোনাপার্ট। অ্যালেক্সান্ডার দ্য গ্রেটের পরেই যার নাম। শূন্য থেকে শুরু হয়ে সম্রাট হওয়া, রহস্যময় ঘটনার সম্মুখীন হওয়া এবং সম্রাট-জীবন থেকে এক নির্জন দ্বীপে নির্বাসিত হয়ে মারা যাওয়া- এ সবই নেপোলিয়নের জীবনেরই ঘটনা। এ লেখাটি তাঁকে নিয়েই। যদিও ছোট একটি লেখায় সংক্ষিপ্তভাবে নেপোলিয়নের জীবনী আঁটানো সম্ভবপর না, তাও একটি ছোট প্রচেষ্টা।

১৭৬৯ এর ১৫ অগাস্ট। এ দিন নেপোলিয়নের জন্ম হয় করসিকা দ্বীপে। ফ্লোরেন্সের সমৃদ্ধ ট্র্যাডিশনওয়ালা এক ইতালিয় পরিবারে তার জন্ম, যদিও তারা বাস করতেন ফ্রান্সে। বাবা কার্লো আর মা মারিয়া। বাবা-মার চতুর্থ সন্তান, তৃতীয় পুত্র ছিলেন নেপোলিয়ন। [তার নামের ফরাসি উচ্চারণ কিন্তু নাপোলেওঁ বোনাপার্ত]

ফ্রেঞ্চ তার মাতৃভাষা ছিল না কখনোই, জীবনেও ঠিক বানানে ফ্রেঞ্চ লিখতে পারেন নি। কথা বলতেন ফ্রেঞ্চে, তবে তাতে থাকতো করসিকার টান। সারা বিশ্ব তাকে ফ্রেঞ্চ হিসেবে চিনলেও বিশুদ্ধ ফ্রেঞ্চ তিনি নন। ছোট থেকেই খুব মেধাবী ছিলেন তিনি। তুখোড় ছিলেন অংকে। আর অগাধ জ্ঞান ছিল ভূগোল আর ইতিহাস বিষয়ে। মহাবীর অ্যালেক্সান্ডার দা গ্রেট এর অভিযান তাকে বরাবর আকর্ষণ করত। স্বপ্ন দেখতেন দিগ্বিজয়ী হবেন অ্যালেক্সান্ডার-এর মতোই।

১৭৮৫ তে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করলেন নেপোলিয়ন, আর্মিতে হলেন সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট। ফ্রেঞ্চ রেভুলশন যখন চলছিল সে সময় তিনি ছিলেন প্যারিসে। ১৭৯২-তে হয়ে গেলেন আর্মির ক্যাপ্টেন। পরের ছয় বছরে আর্মির হয়ে অনেক অভিযানেই অংশ নেন তিনি। তার যুদ্ধের স্ট্র্যাটেজির কারণে তিনি বিখ্যাত হন। তবে এর মাঝে তিনি একবার গৃহবন্দিও হয়েছিলেন। আবার স্পাই-এর কাজও করেছিলেন!

১৭৯৮-তে ফ্রেঞ্চ আর্মির লক্ষ্য ছিল ব্রিটিশদের পরাজিত করা, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ব্যবসা ধ্বংস করা, পারলে টিপু সুলতানকে হাত করে ব্রিটিশদের হারানো যেতে পারে। তবে এর মাঝে তার মিশর ভ্রমণের ইচ্ছা জাগল এই গুরুত্বপূর্ণ অভিযানের আগে। বিশেষ করে পিরামিড দর্শন। তিনি অনেকজন অভিজ্ঞ, বিজ্ঞানী, ইতিহাসবিদ, পরিব্রাজক নিয়ে আলেক্সান্দ্রিয়া থেকে কায়রোর দিকে যান। সাথে তার বাহিনী।

মাত্র ১৫ কিলোমিটার দূরে তার আর্মিকে আক্রমণ করে মিসরের মামলুক বাহিনী মুরাদ আর ইব্রাহিম এর নেতৃত্বে। ফ্রেঞ্চ আর্মি যুদ্ধে জিতে যায়। এ যুদ্ধের নাম ছিল ব্যাটল অফ পিরামিড।

ব্যাটল অফ পিরামিড।তারা পিরামিডের কাছে পৌঁছে যান। রহস্যময় স্ফিংক্স দর্শনের পরে নেপোলিয়ন তাদের বললেন, “আমাকে একা থাকতে দাও। আমি একাই থাকব ভিতরে। তোমরা যাও। বাইরে থাকো।”

ফারাও খুফু এই পিরামিড বানিয়েছিলেন সেই কত হাজার বছর আগে, নিজের কবর হিসেবে। কিন্তু কী কারণে তার কবর এখানে দেয়া হল না সেটা জানা নেই। নেপোলিয়ন জানেন, কিংস চেম্বারের পাশেই আছে কুইন্স চেম্বার। তবে সেটা বেশি আকর্ষণীয় না। পিরামিডের ভেতরে কিংস চেম্বারে পৌঁছে তিনি বসে পড়লেন।

স্ফিংসের মূর্তির সামনে নেপোলিয়ন

বাইরে বসে গল্প করছিল যে কজন সৈন্য রয়ে গিয়েছিল পিরামিডের বাইরে। সাথে নেপোলিয়নের কাছের কয়েকজন। হাসি তামাশা চলছিল।

সাত ঘণ্টা পর হঠাৎ একজন সৈনিক পিরামিডের দিকে আঙ্গুল তুলে চিৎকার করে উঠল, “দেখ!” মশালের আলোতে একটা কালো আকৃতিকে বেরিয়ে আসতে দেখা গেল। একটু কিছু দূর দৌড়ালো, এরপর আবার বসে পড়ল, আবার উঠে দৌড়, এরপর আবার পড়ে গেল মাটিতে। আর আগাতে পারল না। মশাল নিয়ে কিছুদুর আগাতেই, সে চিনে ফেলল, নেপোলিয়ন ছাড়া কেউ না তিনি।

যে কজন সেখানে ছিল, সবাই ছুটে গেল। পানি খাওয়াল তাকে। থরথর করে কাঁপছেন নেপোলিয়ন। কথা বলছেন জড়িয়ে জড়িয়ে, “আমি হারবো… আমি হারবো… সময় কম।”

সে রাতে আর কিছু করা হলো না। নেপোলিয়নকে সেবা শুশ্রূষা করে সুস্থ করে তুলতেই কয়েকদিন চলে গেল। মাঝে তাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, “আপনি কী দেখেছিলেন ভেতরে?” তিনি উত্তর দেন, “এ বিষয়ে আমি কোনো কথা বলব না। আর কোনোদিন জিজ্ঞেস করবে না এটা নিয়ে।” একদম একই রকম ঘটনার সম্মুখীন অ্যালেক্সান্ডার দ্য গ্রেটও হয়েছিলেন!

১০ দিন পর নেপোলিয়ন জীবনের প্রথম কোনো যুদ্ধে হেরে গেলেন। নীল নদের যুদ্ধে ব্রিটিশ নেভির অ্যাডমিরাল নিলসনের নেতৃত্বে করা আক্রমণে নেপোলিয়নের ব্রিটিশ রাজ্য বিজয়ের স্বপ্ন চির ধূলিস্মাৎ হয়ে গেল।

কী পরিবর্তন হলো নেপোলিয়নের কেউ জানেন না। এ ঘটনাটাতে কেউ কেউ সন্দেহ প্রকাশ করেছেন যদিও। কিন্তু এ ঘটনার সত্যতা কি আসলেই নেই?

ফ্রান্সে ফিরেই তিনি ক্যু (coup) করলেন আর নিজে সর্বাধিনায়ক হয়ে গেলেন। কয়েক বছর পর নিজেকে ফ্রান্সের সম্রাট বলে ঘোষণা দিলেন। তার আগের সেই যুদ্ধের জাদু আর নেই। আশপাশের কিছু দেশ আক্রমণ করে ভাল একটা অবস্থান পেয়ে গেল ফ্রান্স ইউরোপে।

নেপোলিয়নের সিংহাসনে আরোহণ 

নেপোলিয়ন সিদ্ধান্ত নিলেন রাশিয়া আক্রমণ করবেন, তাঁর পুরনো সেই কারিশমা ফিরিয়ে আনবেন। ১৮১২-তে তিনি রাশিয়া আক্রমণ করলেন এবং খুব বাজেভাবে পরাজিত হলেন। পরের বছর খোদ তার নিজের দেশ ফ্রান্সই আক্রান্ত হল! তার আর্মি এত বাজেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল যে ফ্রান্স রক্ষার মতো শক্তি ছিল না। অস্ট্রিয়া, প্রুসিয়া, রাশিয়া, ব্রিটেন, পর্তুগাল, সুইডেন, স্পেন, জার্মান রাজ্যগুলো সব একসাথে ফ্রান্স আক্রমণ করে।

তার সময় শেষ হয়ে আসে, ফ্রান্স পরাজিত হয়। নেপোলিয়নের ভাগ্য হয় নির্বাসন। ইতালির কাছে এলবা দ্বীপে তিনি নির্বাসিত হলেন। অনেক চেষ্টা করে তিনি পালিয়ে যান, ১০ মাস পর।

আবার ক্ষমতা দখল করেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত চূড়ান্তভাবে ইতিহাসের কুখ্যাত কিংবা বিখ্যাত ওয়াটারলু যুদ্ধে হেরে যান। ১৮১৫ সালের ১৮ জুন রবিবার ইতিহাসের এই গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধ হয়েছিল বেলজিয়ামের ওয়াটারলুর কাছে। নেপোলিয়ন এই যুদ্ধে দুইটি সম্মিলিত শক্তি, ওয়েলিংটনের ডিউকের অধীন ব্রিটিশ সেনাবাহিনী এবং গাবার্ড ভন বুচারের অধীনে প্রুশিয়ান সেনাবাহিনীর নিকট পরাজিত হন। এই দু’ বাহিনী নেপোলিয়নের শত্রু ইউরোপীয় শক্তিগুলোর সাতটি বাহিনীর সম্মিলনে গড়ে ওঠা মিত্র বাহিনীর কেবল দুটো ফোর্স ছিল। এ যুদ্ধে হারার সাত দিনের মাথায় ক্ষমতা ছেড়ে দেন নেপোলিয়ন।

এবারে তার নির্বাসন হয় দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরের সেন্ট হেলেনা দ্বীপে। জীবনের শেষ ছয়টি বছর তিনি এই নির্বাসনে কাটান। একদম মৃত্যু পর্যন্ত বলা হয়, তিনি নাকি পাগল হয়ে গিয়েছিলেন। কেউ বলে তিনি আর্সেনিক বিষক্রিয়ায় মারা যান, কেউ বলে পাকস্থলির ক্যান্সারে। কে জানে কীভাবে মারা গিয়েছিলেন!

শুধু বলার মতো একটা ঘটনা আছে তার শেষ জীবনের। মৃত্যুশয্যায় যখন ছিলেন, তখন ফ্রান্স থেকে তার একজন কাছের বন্ধু তাকে দেখতে এসেছিলেন শেষবারের মতো তিনি এসে একটা প্রশ্ন করেছিলেন তাকে, “সেই এত বছর আগে, কিংস চেম্বারে কী দেখেছিলে তুমি?”

নেপোলিয়ন অবশেষে উত্তর দেয়ার জন্য মুখ খুললেন। কিন্তু বলতে গিয়েও আর বললেন না- “থাক, কী লাভ। বললেও তুমি জীবনেও আমাকে বিশ্বাস করবে না।”

দিগ্বিজয়ী নেপোলিয়ন সমাহিত হন এ গোপন কথাটা নিজের সাথে নিয়েই। এককালের সম্রাট নির্বাসিত হয়ে করুণ এক মৃত্যুকে বরণ করে নিলেন।

মেজারমেন্ট চার্ট

 🍞 মেজারমেন্ট চার্ট


(🔴নতুন কোর্সের জন্য খুবই জরুরি। তাই আগে থেকেই শেয়ার করে রাখলাম।) 


মেজারমেন্ট কাপের মাপ বুঝতে অনেকেরই সমস্যা হয়। আবার কোনো রেসিপিতে কাপের মাপ থাকলে, কোনো রেসিপিতে থাকে গ্রামের মাপ। তাই মাপে অনেকেরই গন্ডগোল হয়ে যায়। কিন্তু টেনসনের কোনো কারন নেই। স্মার্ট কুকিং থাকতে আপনারা এত চিন্তা করবেন কেন?


চলুন আজকে দেখব মেজারমেন্ট কাপ কত গ্রাম। কিভাবে গ্রাম, কাপ অথবা মিলি লিটারে মাপামাপি করবেন। লিকুইড বা শক্ত জিনিসের মাপ কিন্তু আলাদা।


শুরুতেই বলে নেই যেকোনো লিকুইড জিনিসের মাপ হয় মিলি তে। তাই পানি, দুধ, তেল ইত্যাদি মাপতে পারবেন মিলি হিসাবে। 


আবার ময়দা, চিনি এইরকম শক্ত জিনিসে মাপ হয় গ্রামে। এখন এই দুইটা জিনিসই একসাথে মাপার উপায় কি?


উপায় হলো ওয়েট স্কেল অথবা মেজারমেন্ট কাপ। আপনার যদি একটা ওয়েট মাপার কিচেন মেশিন অথবা মেজারমেন্ট কাপ থাকে, তাহলে খুব সহজেই পরিমাপ করতে পারবেন।


মেজারমেন্ট কাপ চার্ট


এখন চলুন মূল হিসাবে চলে যাই-


🧸তরল জিনিসের মেজারমেন্ট (পানি, দুধ, জুস, তেল ইত্যাদি)


১ কাপ = ২৪০ মিলি


৩/৪ কাপ = ১৮০ মিলি


২/৩ কাপ = ১৬০ মিলি


১/২ কাপ = ১২০ মিলি


১/৩ কাপ = ৮০ মিলি


১/৪ কাপ = ৬০ মিলি


১ টেবিল চামচ = ১৫ মিলি


১ টেবিল চামচ = ১৫ মিলি


১ চা চামচ = ৫ মিলি


🧸ময়দা


মেজারমেন্ট কাপ = গ্রাম


১ কাপ = ১৪০ গ্রাম


৩/৪ কাপ = ১০৫ গ্রাম


২/৩ কাপ = ৯৫ গ্রাম


১/২ কাপ = ৭০ গ্রাম


১/৩ কাপ = ৫০ গ্রাম


১/৪ কাপ = ৩৫ গ্রাম


১ টেবিল চামচ= ১০ গ্রাম


🧸মেজারমেন্ট কাপ না থাকলে


১ কাপ = ১৬ টেবিল চামচ / ৪৮ চা চামচ


৩/৪ কাপ = ১২ টেবিল চামচ / ৩৬ চা চামচ


২/৩ কাপ = ১১ টেবিল চামচ / ৩২ চা চামচ


১/২ কাপ = ৮ টেবিল চামচ / ২৪ চা চামচ


১/৩ কাপ = ৫ টেবিল চামচ / ১৬ চা চামচ


১/৪ কাপ = ৪ টেবিল চামচ / ১২ চা চামচ


🧸কোকো পাউডার


মেজারমেন্ট কাপ = গ্রাম


১ কাপ = ১০৫ গ্রাম


৩/৪ কাপ = ৮০ গ্রাম


২/৩ কাপ = ৭০ গ্রাম


১/২ কাপ = ৫৫ গ্রাম


১/৩ কাপ = ৩৫ গ্রাম


১/৪ কাপ = ২৫ গ্রাম


১ টেবিল চামচ= ৭ গ্রাম


🧸চিনি


মেজারমেন্ট কাপ = গ্রাম


১ কাপ = ২০০ গ্রাম


৩/৪ কাপ = ১৫০ গ্রাম


২/৩ কাপ = ১৩৫ গ্রাম


১/২ কাপ = ১০০ গ্রাম


১/৩ কাপ = ৭০ গ্রাম


১/৪ কাপ = ৫০ গ্রাম


১ টেবিল চামচ= ১৫ গ্রাম


🧸আইসিং সুগার


মেজারমেন্ট কাপ = গ্রাম


১ কাপ = ১৬০ গ্রাম


৩/৪ কাপ = ১২০ গ্রাম


২/৩ কাপ = ১০৫ গ্রাম


১/২ কাপ = ৮০ গ্রাম


১/৩ কাপ = ৫৫ গ্রাম


১/৪ কাপ = ৪০ গ্রাম


১ টেবিল চামচ= ১০ গ্রাম


🧸কর্নফ্লাওয়ার


মেজারমেন্ট কাপ = গ্রাম


১ কাপ = ১২৫ গ্রাম


৩/৪ কাপ = ৯৫ গ্রাম


২/৩ কাপ = ৮৫ গ্রাম


১/২ কাপ = ৬৫ গ্রাম


১/৩ কাপ = ৪০ গ্রাম


১/৪ কাপ = ৩০ গ্রাম


১ টেবিল চামচ = ৮ গ্রাম


🧸বাটার


মেজারমেন্ট কাপ = গ্রাম


১ কাপ = ২২৫গ্রাম


৩/৪ কাপ = ১৬৫ গ্রাম


২/৩ কাপ = ১৫০ গ্রাম


১/২ কাপ = ১১২ গ্রাম


১/৩ কাপ = ৭৫ গ্রাম


১/৪ কাপ = ৫৫ গ্রাম


১ টেবিল চামচ= ১৫ গ্রাম


১ চা চামচ= ৫ গ্রাম


🧸ক্রিম


মেজারমেন্ট কাপ = গ্রাম


১ কাপ = ২৩৫গ্রাম


৩/৪ কাপ = ১৭৫ গ্রাম


২/৩ কাপ = ১৫৫ গ্রাম


১/২ কাপ = ১২০ গ্রাম


১/৩ কাপ = ৮০ গ্রাম


১/৪ কাপ = ৬০ গ্রাম


১ টেবিল চামচ= ১৫ গ্রাম


🧸ঈস্ট


গ্রাম = মেজারমেন্ট কাপ 


 ১২ গ্রাম = আড়াই চা চামচ ( ২ এবং ১/২)


 ১০ গ্রাম = ২ চা চামচ 


 ৭ গ্রাম = ১ + ৩/৪  চা চামচ 


 ৬ গ্রাম = দেড় চা চামচ


 ৫ গ্রাম = ১ চা চামচ + ১/৪ চা চামচ


 ৪ গ্রাম = ১ চা চামচ


 ৩ গ্রাম = ৩/৪ চা চামচ


 ২ গ্রাম = আধা চা চামচ


 ১ গ্রাম = ১/৪ চা চামচ


🧸বেকিং সোডা বা লবন


গ্রাম = মেজারমেন্ট কাপ 


 ১৪ গ্রাম = ২ চা চামচ 


 ১২ গ্রাম = ১ + ৩/৪  চা চামচ 


১০ গ্রাম =  দেড় চা চামচ


 


৯ গ্রাম = ১ + ১/৪  চা চামচ 


৮ গ্রাম = ১ চা চামচ


 ৫-৬ গ্রাম -- ৩/৪ চা চামচ


 ৫ গ্রাম -- ১ চা চামচ + ১/৪ চা চামচ


 ৪ গ্রাম -- ১/২ চা চামচ


 ২ গ্রাম -- ১/৪ চা চামচ


Smart Cooking follow for more updates

শ্রদ্ধেয় পঙ্কজকুমার মল্লিক। জন্মদিনে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি ‌

 এমন দিনে তারে বলা যায় ........‌‌🏵️🏵️

       

১৯২৭ সালের সেপ্টেম্বর মাস... কলকাতায় সেদিন অঝোর ধারায় বৃষ্টি চলছে....।  ক্যানিং স্ট্রিট থেকে বেরিয়ে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ-র ফুটপাথ-এর একটি গাড়ি বারান্দায়  বেশ কিছু পথচলতি মানুষ বৃষ্টি থেকে বাঁচতে দাঁড়িয়েছিলেন।  গাড়িবারান্দাটির লাগোয়া একটি ডিসপেন্সরি, বাইরে সাইনবোর্ড  "ডক্টর রামস্বামী আয়েঙ্গার" । চেম্বারে কেউ নেই। সাদা ধুতি..এবং সাদা শার্ট পড়া এক দীর্ঘদেহী যুবকও সেই বৃষ্টি থেকে মাথা বাঁচানোর ভিড়ে উপস্থিত । একসময় যুবক টি  নিজের মনে গুণ-গুণ করে গান ধরলেন।  সাহেবী পোষাক পরিহিত ডাক্তারবাবু টি ছিলেন গানের ভক্ত। অনেকদিন কলকাতায় থাকার সূত্রে বাংলা গান মায় রবীন্দ্র সঙ্গীতের অনুরাগী ছিলেন। বাইরে থেকে গান কানে যেতেই  তিনি দরজার কাছে এসে কান পেতে শুনলেন এক যুবক গাইছে..."এমন দিনে তারে বলা যায়.../এমন ঘনঘোর বরষায়...।" ডাক্তার  রামস্বামী তার পিঠে টোকা মেরে বললেন  ......কাম ইন'!


যুবকটি বিস্মিত হয়ে ভিতরে এসে বসার পর ডাক্তার-বাবু বললেন..."গানটি আবার করো তো।"  এবার আরও বিস্ময় তবুও এই বর্ষায় আশ্রয়দাতা বলে কথা!  তাই আবারও সে গান ধরলো...'এমন দিনে তারে বলা যায়....' ।

বিস্ময়ের তখনও বাকি ছিলো। ভাঙ্গা ভাঙ্গা বাংলায় যিনি কথা বলছিলেন সেই দক্ষিণ ভারতীয় ডাক্তার দ্বিতীয় কলি থেকে নিজেও গাইতে শুরু করলেন যুবকটির সাথে। তাকে হেসে  বললেন, আমি একটু আধটু গাইতে পারি এর বেশি কিছু না...।" এরপর উচ্ছ্বসিত হয়ে যুবকটিকে বললেন..." Do you want to Broadcast..? কলকাতায় রেডিও স্টেশন হয়েছে, সেখানে আমার কিছু জানাশোনা আছে। তোমার নাম-ঠিকানা দিয়ে যাও, সময়মতো যোগাযোগ করে নেব। বৃষ্টি থামতে যুবকটি নাম-ঠিকানা লিখে চলে গেলো। 


হপ্তা দুয়েক পর যুবকটির বাড়ির সামনে একটি পালকি থামলো, সেখান থেকে বেরিয়ে এলেন সেই দক্ষিণ ভারতীয় ডাক্তার বাবু । সহাস্য মুখে বললেন.." Get Ready ! আমার সাথে চলো।  যুবক-কে নিয়ে এলেন সোজা টেম্পেল চেম্বার্সে অফিসে।  বললেন..'এই দ্যাখো,এই হল রেডিও স্টেশন...।'    

সেইসময় স্টেশন ডিরেক্টর ছিলেন স্টেপলটন সাহেব আর প্রোগ্রাম ডিরেক্টর নৃপেন মজুমদার, তিনিই সর্বেসর্বা । রামস্বামী তাকে গিয়ে বললেন."মিস্টার মজুমদার এই সেই যুবক যার কথা বলেছিলাম আপনাকে।.ছেলেটির গান একবার শুনুন।  নৃপেন বাবু গান শুনে বললেন,"অপেক্ষা করুন..আজই আপনার গান ব্রডকাস্ট হবে। যুবক তো শুনে হতবাক, প্রথম দিনেই!  ডাক্তার বাবু হেসে বললেন,দেখলেন আমার কান ? ঠিক একটা রত্ন খুঁজে পেয়েছি ।"

                 

সেই দিন বিকেলে অর্থাৎ ২৬ সেপ্টেম্বর ১৯২৭ সালে কলকাতার বেতার কেন্দ্র থেকে যুবকের গলায় দু-টি গান সরাসরি সম্প্রচারিত হলো । প্রথম টি  "এমন দিনে তারে বলা যায়..."  এবং অন্যটি

"একদা তুমি প্রিয়ে আমারই তরুমূলে.." ।  আকাশবাণী থেকে সম্প্রচারিত সেই প্রথম রবীন্দ্র সঙ্গীত। সেদিন থেকে বাঙ্গালির সঙ্গীত ইতিহাস এবং বেতার জগতে একটি নক্ষত্র সংযোজিত হলো ।


যুবকটি আর কেউ নয়, দেশের সঙ্গীত আকাশের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র, শ্রদ্ধেয় পঙ্কজকুমার মল্লিক। জন্মদিনে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি ‌🌹🌹

           ‌🌲 সংকলনে ✍🏻 স্বপন সেন 🌲

তারকাময় রাজনীতি ভাল নয়  তসলিমা নাসরিন,,,,

 তারকাময় রাজনীতি ভাল নয় 


তসলিমা নাসরিন 


শিল্পীদের কাজ শিল্প নিয়ে থাকা। কিন্তু শিল্পীরা যখন জনপ্রিয় হতে হতে আকাশে উড়ে যান, আকাশে উড়তে উড়তে তারকা বনে যান, মানুষের নাগালের বাইরে, ধরাছোঁয়ার বাইরে, তখন কী ঘটে? আকাশ থেকে মহাকাশে বিচরণের পর তাঁদের কিন্তু ইচ্ছে করে মর্ত্যেই নেমে আসতে, তারকাখ্যাতিকে কাজে লাগিয়ে অন্য রকম খ্যাতি অর্জন করতে। এই খ্যাতির সঙ্গে জুড়ে আছে অর্থ এবং ক্ষমতা। ক্ষমতার আছে অস্বাভাবিক ঔজ্জ্বল্য। এই চোখ ধাঁধানো ঔজ্জ্বল্যের প্রতি আকর্ষণ আমাদের এই ভারতীয় উপমহাদেশে কার নেই? 


তারকারা সব দেশেই রাজনীতিতে ঢোকেন। কিন্তু ভারতীয় উপমহাদেশে তারকা থেকে রাজনীতিক হওয়ার প্রবণতা লাগামছাড়া। সত্যিকারের গণতান্ত্রিক দেশগুলোতে  রাজনীতিকরা ক্ষমতার কাঙাল নন। উত্তর ইউরোপের দেশগুলোয় এক সময় দেখেছি রাজনীতিকদের অনেকেই গাড়ি চড়েন না, অতি সাধারণ মানুষের মতো সাইকেল চালিয়ে বাড়ি থেকে অফিসে, অফিস থেকে বাড়িতে যান, নিরাপত্তা রক্ষী নিয়ে বাইরে বেরোন না। তাঁরা দুর্নীতি করেন না, চুরি করেন না, তাঁরা যেটা মন দিয়ে করেন, সেটা জনগণের সেবা। রাজনীতির এমন শুদ্ধ স্বচ্ছ আর সুস্থ  সুন্দর পরিবেশ উপমহাদেশে নেই। থাকলে আমার মনে হয় না কোনও তারকার শখ হতো রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার। 


সিনেমা, সঙ্গীত, স্পোর্টস —মূলত এই ক্ষেত্রগুলোই তারকা তৈরি করে। আর এই উপমহাদেশ শতভাগ তারকাপাগল উপমহাদেশ। তারকাপাগল বলেই রাজনীতির র-ও যাঁরা জানেন না, তাঁরাও নিজের তারকাখ্যতিকে পুঁজি করে ভোট পান, রাতারাতি সাংসদ বনে যান। ওদিকে রাজনীতিকদের মধ্যে বসে আছেন কিছু গণ্ডমূর্খ, কিছু প্রতিক্রিয়াশীল স্বার্থান্ধ লোক। প্রগতিশীল কেউ যদি থেকেও থাকেন,  প্রগতিশীলতাকে গোপন রেখে তাঁদের রাজনীতি করতে হয়।  তাঁরা কেবল শিখেছেন কী করে মানুষকে মিথ্যে বলে বা  ধোঁকা দিয়ে ভোট আদায় করতে হয়। এভাবে অনভিজ্ঞ আর ধোঁকাবাজদের সমন্বয়ে, আমার আশঙ্কা, আমাদের সংসদ  একদিন ভয়াবহ ব্যর্থতার সমুদ্রে তলিয়ে যাবে। প্রায়ই তো দেখি সংসদগুলোতে হাতাহাতি মারামারি চুলোচুলি চলছে। সংসদে বসে সাংসদদের ঘুমোনো খুব পরিচিত একটি দৃশ্য। সংসদে বসে কেউ কেউ তো মোবাইলে পর্নও দেখেন। 


ভারতের বিপুল সংখ্যক অভিনেতা-অভিনেত্রী রাজনীতিতে নেমেছেন। তাঁদের সংখ্যা, আমার বিশ্বাস, বিশ্বের যে কোনও দেশের তুলনায় বেশি। ভারতের রাজনীতিকরা ভাল অভিনয় জানেন, নাকি অভিনেতা-অভিনেত্রীরা? কেউ কেউ কিন্তু বলেন, অভিনেতা-অভিনেত্রীর চেয়ে অভিনয় ভাল জানেন রাজনীতিকরা। সে কারণেই হয়তো সিনেমার তারকারা যেমন রাজনীতিতে নামেন, তেমন রাজনীতিকদের মধ্যে অনেকেই সিনেমায় নামেন। সিনেমার তারকাদের রাজনীতিতে নামানো শুরু হয় ষাটের দশকে। বলিউডের অভিনেতা পৃথ্বীরাজ কাপুরকে রাজ্যসভার সদস্য বানিয়েছিলেন কংগ্রেস দলের শীর্ষ নেতাগণ। এরপর থেকে জনপ্রিয় এবং বিখ্যাত লোকেরা রাজনীতিতে নজর দিতে থাকেন। রাজনৈতিক দলে নাম লেখানোর উৎসাহ বেড়ে যায় প্রচণ্ড। রাজনৈতিক দলের   জনপ্রিয়তা বাড়াতেও হয়তো রাজনীতিকরা তারকাদের দলে ঢোকাতে চান। দিলীপ কুমার, বৈজয়ন্তীমালা, এম জি রামাচন্দ্রন, জয়ললিতা, অমিতাভ বচ্চন, জয়া বচ্চন, শ্ত্রুঘ্ন সিনহা, গোবিন্দা, হেমা মালিনী, রাজেশ খান্না, সুনীল দত্ত, বিনোদ খান্না, স্মৃতি ইরানি, রজনীকান্ত, কমল হাসান,   মাধাবান, রাজ বাব্বর, জয়াপ্রদা, পরেশ রাওয়াল, সন্ধ্যা রায়, কিরণ খের—- এরকম অনেক অভিনেতা-অভিনেত্রী  বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সদস্য হয়েছেন। 


পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল দলে নির্বাচনের আগে আগেই তারকাদের দলে ভেড়ানো হয়েছে। জেতার ইচ্ছে থেকেই তাড়াহুড়ো করে তারকাদের দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়েছে নির্বাচনে। মুনমুন সেন, মিমি চক্রবর্তী, নুসরাত জাহান জিতে এলেন। ওদিকে শতাব্দি রায়, রূপা গাঙ্গুলি, লকেট চ্যাটার্জি, বাবুল সুপ্রিয়, দেবও টোপ গিলেছেন। শিল্প-সাহিত্য-নাট্য জগতের তারকাদের কাউকে ভোটে দাঁড় করানো হয়েছে, কাউকে আবার নানারকম সুযোগ সুবিধে আর উপঢৌকন  দিয়ে দলভুক্ত করা হয়েছে। কবীর সুমন, শাঁওলি মিত্র, ব্রাত্য বসু, জয় গোস্বামী, যোগেন চৌধুরী, শুভাপ্রসন্নর মতো সফল শিল্পী সাহিত্যিক তাঁদের নাও ভিড়িয়েছেন রাজনৈতিক দলের ঘাটে। সবাই ভোটে না দাঁড়ালেও দলের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করছেন। মুশকিল হলো, অনেকে দলদাসে পরিণত হয়েছেন।   মূখ্যমন্ত্রী ভুল বকলেও তাঁরা নীরব থাকেন। মূখ্যমন্ত্রীর  চেয়ারের ধুলো পরিস্কার করে দেন, সাহিত্যের কিছুই না জানলেও মূখ্যমন্ত্রীকে সাহিত্য পুরস্কার প্রদান করেন।  


তারকারা তাঁদের ভক্তদের ভোটেই জিতে যান নির্বাচনে।  রাজনীতিক হিসেবে জনপ্রিয় হওয়ার জন্য লম্বা সময় তারকাদের পার করতে হলো না, রাজনীতিতে তাঁদের দক্ষতাও দেখাতে হলো না, অথচ দিব্যি এক তুড়িতে বিজয়ী হয়ে গেলেন। দলে তারকা নিয়ে এলে আজকাল বিরাট লাভ রাজনৈতিক দলের। দলের নেতারা যেমন তারকাদের নিজের স্বার্থে ব্যবহার করতে চান, তারকারাও চান রাজনৈতিক দলকে নিজের স্বার্থে ব্যবহার করতে। দল চায় নির্বাচনে জেতা, তারকা চান ক্ষমতা। রাজনৈতিক কোনও আদর্শ ছাড়াই অনেক সময় তারকারা রাজনৈতিক দলে যোগ দেন। সঙ্গত কারণেই তাঁরা জনগণের দাবি পূরণ করতে ব্যর্থ হন।  এক সময় তারকারা নিজের মান সম্মান বাঁচিয়ে রাজনীতির অঙ্গন ত্যাগ করতে বাধ্য হন। ভারতে ১৫৩ জন অভিনেতা অভিনেত্রী রাজনীতিতে নেমেছেন। সংখ্যাটি অন্যান্য দেশের চেয়ে বেশি। বাংলাদেশে সিনেমার নায়িকা কবরী, নায়ক ফারুক এবং ফেরদৌস রাজনীতি করেছেন, অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূর মন্ত্রী ছিলেন অনেক বছর। জনপ্রিয় গায়িকা মমতাজ, বেবী নাজনীন, কনকচাঁপাও সংসদ সদস্য হয়েছেন। দলের অনেক নেতা তারকা নিয়ে সুখী হলেও দলের অনেক কর্মীই ক্ষুব্ধ। দীর্ঘকাল দলের আদর্শে এবং কর্মে  নিষ্ঠাবান থেকে, নিবেদিত প্রাণ হয়ে যে সুবিধে পান, তার চেয়ে ঢের বেশি পান উড়ে এসে জুড়ে বসা তারকারা, যাঁরা রাজনীতির কিছুই জানেন না, দলের আদর্শ সম্পর্কেও যাঁদের জ্ঞান নেই। 


এই উপমহাদেশে সিনেমার মতোই ক্রিকেট অত্যন্ত জনপ্রিয়। জনপ্রিয়তাকে পুঁজি করে পাকিস্তানের ক্রিকেট তারকা ইমরান খান রাজনৈতিক দল শুরু করেছেন, নির্বাচনে জিতে প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। রাজনীতিতে ঢুকেছেন মোহাম্মদ আজহারুদ্দিন, নভোজত সিং সিধু, গৌতম গম্ভীর, মনোজ তিওয়ারি, কীর্তি আজাদ, চেতন চৌহান, শ্রীলংকায় অর্জুনা রানাতুঙ্গা, সনৎ জয়সুরিয়া। বাংলাদেশের ক্রিকেট তারকা মাশরাফি আর সাকিব এখন রাজনীতিতে নেমে ক্ষমতায় আরোহণ করেছেন। সিনেমার তারকাদের মতোই ক্রিকেট তারকারা রাজনীতি সম্পর্কে অজ্ঞ। তাঁরা শুধু দলের শোভা বাড়াবার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছেন। 


সাকিব আল হাসান বদরাগী মানুষ। তাঁকে দেখে ভক্তরা উত্তেজিত হলে তিনি তাদের অপমান করতে দ্বিধা করেন না। সেদিন তো এক ভক্ত তার সঙ্গে সেলফি তুলতে চাইলে ভক্তের ঘাড় ধরে রীতিমত গালে চড় কষালেন অথবা চড় কষাতে  চাইলেন। তিনি ক্রিকেট তারকা হিসেবে প্রচুর নিরাপত্তা  পান। কিন্তু রাজনীতিকদের তো মানুষের ভিড়েই থাকতে হয়। কেউ একটু ভক্তি দেখালেই তাকে চড় থাপ্পড় মারতে হয় না। রাজনীতিকদের উদার হতে হয়, মানবিক হতে হয়। মানুষকে আবর্জনা হিসেবে নয়, মানুষ হিসেবে দেখতে হয়। তাদের আবেগ উচ্ছ্বাস, তাদের সুখ দুঃখ, তাদের পাওয়া না-পাওয়াকে অন্তর থেকে অনুধাবন করতে হয়। তা না হলে রাজনীতির জগতে ঘোরাফেরা করা অর্থহীন। 


রাজনৈতিক দলকে জনপ্রিয় করতে হলে সিনেমা থিয়েটার  সঙ্গীত আর খেলার জগত থেকে অরাজনৈতিক জনপ্রিয় ব্যক্তিদের নানা রকম লোভ দেখিয়ে দলে টেনে আনার প্রবণতা কেন? প্রশ্ন হলো, দলের রাজনীতিকরা কেন জনপ্রিয় হতে পারেন না? ভাল কাজ করলেই তো জনপ্রিয় হওয়া যায়, সেই ভাল কাজে কেন এত আপত্তি? মাঝে মাঝে ভাবি, রাজনীতিকদের কি সুস্থ রাজনীতি সম্পর্কে যথেষ্ট ধারণা আছে? ছলে বলে কৌশলে ভোটে জেতাই তো রাজনীতিকদের মূল কর্ম নয়। গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, অসাম্প্রদায়িকতা, মানবাধিকার, বাকস্বাধীনতা ইত্যাদি সম্পর্কে প্রচুর জ্ঞান থাকতে হয়। এসবকে রাষ্ট্রের মূলমন্ত্র করতে হয়, এসবকে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য সব রকম উদ্যোগ নিতে হয়।  সবার জন্য অন্ন বস্ত্র বাসস্থান, সবার জন্য শিক্ষা আর  স্বাস্থ্যের ব্যবস্থা করতে হয়। দারিদ্র দূরীকরণের সব কর্মসূচী হাতে নিতে হয়। ধনী আর দরিদ্রের ব্যবধান ঘোচাতে হয়।  নারীর সমানাধিকার, মানবাধিকার, সংখ্যালঘুদের অধিকার   ইত্যাদিকে হেলাফেলা করতে হয় না। প্রকৃতিকে সমৃদ্ধ করতে হয়, পশু পাখিকে নিরাপদে রাখতে হয়। রাস্তা ঘাট, উঁচু উঁচু দালানকোঠা, লম্বা লম্বা ব্রিজ বানালেই মন্ত্রী মহোদয়দের দায়িত্ব শেষ হয় না। শাসকের দায়িত্ব জনগণকে অন্ধকার থেকে আলোয় আনা। কুসংস্কার, ধর্মান্ধতা, কূপমণ্ডুকতা, অশিক্ষা, কুশিক্ষা, দুর্নীতি, সন্ত্রাস –ইত্যাদিকে কঠোর হস্তে দমন করা। মানুষের মধ্যে যুক্তিবুদ্ধির চর্চা বাড়ানোর এবং  মানুষকে বিজ্ঞানমনস্ক করার দায়িত্ব সরকারের। রাষ্ট্রক্ষমতায়  প্রতিক্রিয়াশীল মূর্খ লোকের বদলে প্রগতিশীল মুক্তচিন্তক  দরকার। কিন্তু দুঃখের বিষয়, গোটা উপমহাদেশের শাসকদের মধ্যে প্রগতিশীল চিন্তাধারার লোক অত্যন্ত  কম। সে কারণেই সমাজের প্রগতি যাঁরা চান, তাঁদের বাকস্বাধীনতার বিরুদ্ধে প্রায়ই দেখি আইন বানাচ্ছে সরকার। বাকস্বাধীনতা না থাকলে সমাজে কোনও বিবর্তন ঘটে না। আর বিবর্তন না ঘটলে সমাজ দুর্গন্ধ জলাশয়ের মতো স্থির হয়ে থাকে। আমাদের সমাজ নিঃসন্দেহে স্থির হয়ে আছে যুগের পর যুগ।  


তারকা দিয়ে দেশ চালানো যায় না। দেশ চালানোর দায়িত্ব সৎ সুস্থ আদর্শবান রাজনীতিকদের নিতে হবে, দলে ক্রিকেটার, অভিনেতা অভিনেত্রী, সঙ্গীতশিল্পীদের টেনে আনা বন্ধ হোক। যখন নিজেরা অকেজো, অচল, অকর্মণ্য, তখনই তাঁরা তারকাদের টোপ দিতে বেরোন। যে দল যত বেশি অরাজনৈতিক তারকাকে দলের লোক হিসেবে প্রদর্শন করবে, সে দল, মনে রাখতে হবে, তত বেশি দুর্বল। জনগণ শিক্ষিত আর সচেতন হলে কোনও তারকাকে ভোট দেবে না, ভোট দেবে শিক্ষিত, অভিজ্ঞ, দূরদর্শী, বুদ্ধিদীপ্ত, সৎ রাজনীতিকদের। কিন্তু জনগণকে মূর্খ বানিয়ে রাখা ধুরন্দর রাজনীতিকদের কৌশল। অসুস্থ রাজনীতির অবসান হোক। সুস্থ রাজনীতির যাত্রা শুরু হোক। রাজনৈতিক দলগুলোকে শক্তিশালী করতে হবে সুস্থ রাজনৈতিক আদর্শ দিয়ে, নিষ্ঠাবান স্বপ্নবান দেশপ্রেমিক রাজনীতিকদের দিয়ে। তারকাদের দিয়ে নয়। 


বাংলাদেশ প্রতিদিন

০৯ মে ২০২৪

ছাত্র ই বা কম কি সে???

 “ ছাত্র ই বা কম কি সে????”😃🙏


ছাত্র আর মাস্টারমশাই দু'জনেই অনেক স্মার্ট...


সুজয় পড়ে গেছিল কুমিরের রচনা আর পরীক্ষায় লিখতে দিয়েছিল গরুর রচনা । সুজয় লিখেছিল - "গরু একটি গৃহপালিত জন্তু । গরুর দুটি শিং একটি ল্যাজ চারটে পা । গরু দুধ দেয় । সেই দুধ থেকে ছানা দই মিষ্টি ইত্যাদি হয় । গরু তৃণভোজী প্রাণী । গরু ঘাস খায় । ঘাস খাওয়ার জন্য রাখালরা গরুকে মাঠে চরতে নিয়ে যায় । কিন্তু গরুকে কোন নদীর পাশের মাঠে চরতে নিয়ে যাওয়া উচিৎ না । কারন গরু চরতে চরতে নদীর ধারে চলে যেতে পারে, আর নদীতে কুমীর থাকে । কুমীর একটি হিংস্র জন্তু । গরুকে খেয়ে নিতে পারে । কুমীরের চোয়াল খুব শক্ত হয় । দাঁত খুব ধারালো । কুমীরের চারটে পা, দুটো চোখ, আর একটা লেজ কাটা কাটা কাটা কাটা ...... " -ব্যস , সুজয় ঢুকে গেল কুমীরে ।

স্মার্ট মাস্টারমশাই খাতা দেখে ভাবলেন, "বাঃ ! এতো ভারী মজা ? ব্যাটা সেই পুরনো কাসুন্দী ঘেঁটে তুলে মাস্টারকে বোকা বানাচ্ছে ? নিজেকে খুব চালাক ভাবছে না ? আচ্ছা ! আমিও দেখছি । তোকে ব্যাটা আমি শূন্য দেব না । দশের মধ্যে চার দেব । আর পরের টার্মে এমন রচনা দেব যে তোর না পড়ে পরীক্ষা দিতে আসা বেরিয়ে যাবে । রচনার বিষয়বস্তু একটা উদ্ভট দেব, দেখি ব্যাটা তুই সেখানে কুমীর ঢোকাস কি করে ? "

পরের টার্মে রচনা এল "দূর্গাপুজা" । পরীক্ষা হলে মাস্টারমশাই সুজয়কে দেখে মিটিমিটি হাসছেন । মনে মনে ভাবছেন যে "নে এবার, কি করে কুমীর আনবি আন । সিংহ আনতে পারিস, কিন্তু কুমীর এনে দেখা একবার" । কিন্তু সুজয়ও এত সহজে ছেড়ে দেবার পাত্র নয় । কুমীর সে আনবেই । সে লিখল - দূর্গাপুজা বাঙ্গালীর সবচেয়ে বড় পুজা । চারদিন ধরে পূজো চলে । সবাই নতুন জামা কাপড় পরে । সবাই খুব আনন্দ করে । গোটা বাংলাদেশ এই পূজোয় মেতে ওঠে । পূজোর চার দিন সপ্তমী অষ্টমী নবমী আর দশমী । দশমীর দিন বাঙ্গালীর খুব দুঃখ হয় কারন দশমীতে ঠাকুর ভাসান হয়ে যায় । লোকে ঠাকুর ভাসান করতে নদীতে যায় । কিন্তু ঠাকুর ভাসান সন্ধের পর করা উচিৎ নয়, কারণ নদীতে কুমীর থাকে । কুমীর একটি হিংস্র জন্তু । মানুষকে খেয়ে নিতে পারে । কুমীরের চোয়াল খুব শক্ত হয় । দাঁত খুব ধারালো । কুমীরের চারটে পা, দুটো চোখ, আর একটা লেজ কাটা কাটা কাটা কাটা ...... " -ব্যস , সুজয় আবার ঢুকে গেল কুমীরে ।

মাস্টারমশাই রেগে টং । নিজের পরাজয় এভাবে মেনে নেওয়া খুব কষ্টকর । এদিকে শূন্যও দিতে পারছেন না । আগের টার্মেই একইরকম লেখায় নাম্বার দিয়েছেন । পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে নিজেই চ্যালেঞ্জ করেছেন, সুতরাং কাউকে কিছু বলাও যাবে না । রেগেমেগে ভাবলেন পরের টার্মে এমন বিষয় দেব যে পরীক্ষা হলে বসে তোর পেটে কুমীর কামড়াবে । দেখি কি করে কুমীর ঢোকাস ।

পরের পরীক্ষায় রচনা সত্যি কঠিন এল । অন্তত সুজয়ের বিচারে তো বেশ কঠিন । মাস্টারমশাই রচনা দিয়েছেন, "পলাশীর যুদ্ধ" । পরীক্ষা হলে মাস্টারমশাই বুক ফুলিয়ে হেঁটে বেড়াচ্ছেন । ভাবছেন এইবার বড় জব্দ করা গেছে ব্যাটাকে । এবার আর কিছুতেই কুমীর ঢোকাতে পারবে না । সুজয় কিন্তু নির্বিকার মনে মাথা গুঁজে লিখে চলেছে । কোন হেলদোল নেই । পরীক্ষা শেষে ছাত্ররা খাতা জমা দিয়ে চলে যেতেই মাস্টারমশাই তড়িঘড়ি সুজয়ের খাতাটা টেনে নিয়ে রচনাটা পড়তে লাগলেন । খাতা দেখে মাস্টারমশায়ের চক্ষু চড়কগাছ । সুজয় লিখেছে - "পলাশীর যুদ্ধ বাংলার শেষ স্বাধীন যুদ্ধ । প্রচন্ড রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ হয়েছিল পলাশীর প্রান্তরে । যুদ্ধ হয়েছিল নবাব সিরাজদৌল্লা আর ইংরেজের মধ্যে । সেই যুদ্ধে ইংরেজরা জিতে গিয়েছিল ফলে বাংলা তার স্বাধীনতা হারিয়েছিল । নবাব সিরাজদৌল্লাই ছিলেন বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব । তিনি খুব বীর ছিলেন । প্রচন্ড বীরত্বের সাথে ইংরেজের সাথে লড়েছিলেন । কিন্তু তিনি একটি ভুল করেছিলেন, মীরজাফরকে সেনাপতি করে তিনি খাল কেটে কুমীর এনেছিলেন ।কুমীর একটি হিংস্র জন্তু । কুমীরের চোয়াল খুব শক্ত হয় । দাঁত খুব ধারালো । কুমীরের চারটে পা, দুটো চোখ, আর একটা লেজ কাটা কাটা কাটা কাটা ......


মাস্টারমশাই অজ্ঞান !!!


collected

সোনা পাতার গুণ/ সোনা পাতার উপকারিতাকবিরাজ সঞ্জয় দত্ত  আয়ুর্বেদিক এন্ড হারবাল চিকিৎসক

 🥬সোনা পাতার গুণ/ সোনা পাতার উপকারিতা 🌴 🌲🌲🌲🌲🌲🌲🌲🌲🌲🌲🌲🌲🌲 হাদিসে সোনাপাতা সম্পর্কে বলা হয়েছে আসমা বিনেত উমাইস (রা.) থেকে বর্ণিত।...