এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২৫

গভীর তাৎপর্যময় একটা মিশরীয় গল্প- যে গল্প ছাপানোর জন্য আল আহরাম পত্রিকার সম্পাদককে কারাগারে পাঠানো হয়। )

 (গভীর তাৎপর্যময় একটা মিশরীয় গল্প- যে গল্প ছাপানোর জন্য আল আহরাম পত্রিকার সম্পাদককে কারাগারে পাঠানো হয়। )


সিংহরা দীর্ঘদিন পর  তাদের পছন্দমতো একটি গাধা শিকার করতে সক্ষম হয়।  

তখন সবচেয়ে বিচক্ষণ সিংহ বলে: এই গাধাকে না মেরে বরং বাঁচিয়ে রাখো। তাহলে আমাদের কার্যসিদ্ধি সহজ হবে।

এরপর, সিংহের দল গাধাকে শুধু বাঁচিয়ে রাখলো  না। তাকে যতন করে-তার পরিচর্যা করে গাধাটিকে তাদের একজন হিসাবে তৈরি করে নিলো।

এরপর সিংহের দল  গাধাদের সমাজে শৃংখলা ফিরিয়ে আনার জন্য তাকে নেতা হিসেবে পাঠায়।   

সিংহ কর্তৃক স্বীকৃত নেতাকে পেয়ে  গাধারা তার মহীমাকীর্তন শুরু করে।  যে গাধা তার বিরুদ্ধে যেত বা তার কথা না মানত, তাকে ধরপাকড় করা হতো যতক্ষণ না সিংহের দল পরিদর্শনে আসতো। তারপর তাকে সিংহদের সামনে খাবার হিসেবে পেশ করা হতো। 

ফলে- সিংহরা গাধাদের সমাজে যা চাইলো তাই  ঘটলো। তারা অতি সহজেই তাদের খাবারে পেয়ে গেলো এবং তাদের শিকারের কষ্ট লাঘব হলো।

(গভীর তাৎপর্যময় একটা মিশরীয় গল্প- যে গল্প ছাপানোর জন্য আল আহরাম পত্রিকার সম্পাদককে কারাগারে পাঠানো হয়। )


সিংহরা দীর্ঘদিন পর  তাদের পছন্দমতো একটি গাধা শিকার করতে সক্ষম হয়।  

তখন সবচেয়ে বিচক্ষণ সিংহ বলে: এই গাধাকে না মেরে বরং বাঁচিয়ে রাখো। তাহলে আমাদের কার্যসিদ্ধি সহজ হবে।

এরপর, সিংহের দল গাধাকে শুধু বাঁচিয়ে রাখলো  না। তাকে যতন করে-তার পরিচর্যা করে গাধাটিকে তাদের একজন হিসাবে তৈরি করে নিলো।

এরপর সিংহের দল  গাধাদের সমাজে শৃংখলা ফিরিয়ে আনার জন্য তাকে নেতা হিসেবে পাঠায়।   

সিংহ কর্তৃক স্বীকৃত নেতাকে পেয়ে  গাধারা তার মহীমাকীর্তন শুরু করে।  যে গাধা তার বিরুদ্ধে যেত বা তার কথা না মানত, তাকে ধরপাকড় করা হতো যতক্ষণ না সিংহের দল পরিদর্শনে আসতো। তারপর তাকে সিংহদের সামনে খাবার হিসেবে পেশ করা হতো। 

ফলে- সিংহরা গাধাদের সমাজে যা চাইলো তাই  ঘটলো। তারা অতি সহজেই তাদের খাবারে পেয়ে গেলো এবং তাদের শিকারের কষ্ট লাঘব হলো।


গাধারা বুঝতেও পারলোনা- গাধাদের সমাজে যে সিংহ, সিংহের সমাজে সে আসলে এক গাধা। 


হেনরি কিসিঞ্জার বলেছিলেন- আমরা তাদের জন্য এমন এক  ব্যবস্থা  তৈরি করে দিয়ে যেতে  চাই। যাতে  আমাদের সব লক্ষ্য তাদের হাতে দিয়েই  পূর্ণতা পায়।


-Arif Mahmud

গাধারা বুঝতেও পারলোনা- গাধাদের সমাজে যে সিংহ, সিংহের সমাজে সে আসলে এক গাধা। 


হেনরি কিসিঞ্জার বলেছিলেন- আমরা তাদের জন্য এমন এক  ব্যবস্থা  তৈরি করে দিয়ে যেতে  চাই। যাতে  আমাদের সব লক্ষ্য তাদের হাতে দিয়েই  পূর্ণতা পায়।


-Arif Mahmud

কৃষি সমস্যা নিয়ে প্রশ্নোত্তরঃ----

 #কৃষি #সমস্যা নিয়ে #প্রশ্নোত্তরঃ------


✅ প্রশ্ন : স্ট্রবেরি চাষের জন্য কোন ধরনের মাটি উপযোগী?

↗️ উত্তর : স্ট্রবেরি মূলত শীতপ্রধান অঞ্চলের ফসল। ফুল ও ফল আসার সময় শুকনো আবহাওয়া প্রয়োজন। বাংলাদেশের আবহাওয়ায় রবি মৌসুম স্ট্রবেরি চাষের উপযোগী। উপযুক্ত ব্যবস্থাপনায় সব মাটিতেই স্ট্রবেরি চাষ করা যায়। পানি নিষ্কাশনের উপযুক্ত ব্যবস্থা সম্পন্ন উর্বর দো-আঁশ থেকে বেলে দো-আঁশ মাটি স্ট্রবেরির জন্য বেশি উপযুক্ত। মাটির অম্লমান ৫.৬-৬.৫ স্ট্রবেরি চাষের জন্য উত্তম এবং জৈব পদার্থ কমপক্ষে ৩% থাকা উচিত।


✅ প্রশ্ন : পটোল গাছের কাণ্ড ও পাতায় কালো বা বাদামি রঙের ক্ষত হয় এবং পরে কাণ্ড ও পাতা শুকিয়ে যায়। প্রতিকার জানাবেন।

↗️ উত্তর : এ রোগটি পটোল গাছের ছত্রাকজনিত রোগ। এ রোগ দ্বারা আক্রান্ত গাছ নষ্ট বা পুড়ে ফেলতে হবে। রোগমুক্ত গাছ থেকে শাখা কলম (কাটিং) সংগ্রহ করা। শাখা কলম কার্বেনডাজিম (ব্যাভিস্টিন) ২ গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে শোধন করা। রোগ দেখা দিলে প্রতি লিটার পানিতে টপাসন এম ২ গ্রাম ০.৫ মিলি প্রোপিকোনাজল (টিল্ট) বা ২ গ্রাম ডাইথেন এম ৪৫ স্প্রে করতে হবে।


✅ প্রশ্ন : কচি লাউয়ের নিচের দিকে পচন হয়। ধীরে ধীরে পুরো লাউটা পচে যায়। কী করণীয়?

↗️ উত্তর : সাধারণত অম্লীয় মাটিতে ক্যালসিয়াম এর অভাবে এ জাতীয় রোগ দেখা যায়। এজন্য যা করণীয় তা হলো--

👉পরিমিত সেচ প্রদান করা,

👉প্রতি গর্ত বা পিট এ ৫০ থেকে ৮০ গ্রাম জিপসাম সার প্রয়োগ করা,

👉পরবর্তীতে জমি প্রস্তুতের সময় মাটি পরীক্ষা করে সুষম সার ব্যবহার করা,

👉অম্লীয় মাটিতে শতাংশ প্রতি চার কেজি ডলোচুন প্রয়োগ করা,

👉একই জমিতে বার বার একই জাতীয় সবজি আবাদ না করা।


✅ প্রশ্ন : আম গাছে ছোট ছোট পোকা দেখা যায় এবং মুকুল ঝরে যায়। কী করণীয়?

↗️ উত্তর : সাধারণত আমগাছে হুপার পোকার আক্রমণ বেশি হয়, যা মুকুলের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এ ছোট ছোট হুপার পোকা এবং অ্যানথ্রাকনোজ রোগের আক্রমণে মুকুল ঝরে যায়। এর জন্য যা করণীয় তা হলো-

👉মুকুল আসার পর এবং ফুল ফোটার আগে অর্থাৎ পুষ্পমঞ্জরির দৈর্ঘ্য যখন ৫-১০ সেমি. হয় তখন প্রতি লিটার পানিতে সাইপারমেথ্রিন ১০ ইসি (রিপকর্ড/সিমবুশ/ফেনম) ১ মিলি. এবং টিল্ট ২৫০ ইসি ০.৫ মিলি. হারে একবার এবং তার একমাস পর আরেক বার গাছের পাতা, ডালপালা মুকুল ভালোভাবে ভিজিয়ে স্প্রে করা।


✅ প্রশ্ন : বেগুন গাছে পোকার আক্রমণের কারণে গাছের ডগা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। প্রতিকার জানাবেন।

↗️ উত্তর : 

👉বিষাক্ত কীটনাশকের প্রয়োগ সীমিত করতে হবে।

👉আক্রান্ত ডাল ছাটাই করে নষ্ট করতে হবে।

👉সবিক্রন ২৫০ ইসি ২ মিলি. লিটার পানিতে মিশিয়ে অথবা রিপকর্ড ১ মিলি. লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রয়োগ করতে হবে।


✅ প্রশ্ন : আমার ক্ষেতের ভুট্টা গাছের বয়স ১.৫ (দেড়) মাস কিন্তু গাছের বাড়-বাড়তি তেমন নেই। করণীয় কী?

↗️ উত্তর : 

👉আগাছা ভালোভাবে পরিষ্কার করুন।

👉জমি ও মাটির প্রকারভেদে ৩ বার সেচ দেয়া প্রয়োজন। বীজ গজানোর ৩০-৩৫ দিন পর প্রথম সেচ এবং দ্বিতীয় সেচ ৬০-৬৫ দিন (ফুল আসার আগে) পর দিতে হবে। জমিতে রসের পরিমাণ কম হলে তৃতীয় সেচ ৮৫-৯০ দিন পর (দানা বাঁধতে শুরু হলে) দিতে হবে।

👉প্রতি বিঘায় ইউরিয়া, টিএসপি, এমওপি, জিপসাম, জিংকসালফেট, বোরিক এসিড এবং গোবর সার উপযুক্ত পরিমাণে প্রয়োগ করলে গাছের বাড়-বাড়তি স্বাভাবিক হয়ে আসবে।


✅ প্রশ্ন : গবাদিপশুর কৃমি দমনে কী করণীয়?

↗️ উত্তর : গবাদিপশু যেমন গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়ার বিভিন্ন ধরনের রোগের মধ্যে পরজীবী একটি ক্ষতিকর রোগ। বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বেই এ রোগের প্রাদুর্ভাব রয়েছে। উষ্ণ ও আর্দ্র জলবায়ু পরজীবীর বংশ বিস্তারে সহায়ক বলে বাংলাদেশের গবাদিপশুতে এ রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি এবং এ রোগের কারণে প্রতি বছর প্রচুর অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়। গবাদিপশুতে পরজীবীর ডিম বা লার্ভা খাদ্যের সাথে বা দেহ ত্বক ভেদ করে দেহাভ্যন্তরে প্রবেশ করে।

অনেক সময় মাতৃগর্ভে থাকা অবস্থায় পশু পরজীবী দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে। পরজীবী গবাদিপশুর জন্য সর্বদাই ক্ষতিকর। এরা পশুর দেহের রক্ত শুষে খায় এবং খাদ্য ও পুষ্টির মধ্যে ভাগ বসায়। এছাড়া, পরোক্ষভাবেও এসব পরজীবী বিভিন্ন পরিপাকযোগ্য খনিজ শুষে নেয়। এর ফলে পশুর স্বাস্থ্য ও উৎপাদন ক্ষমতা দিন দিন হ্রাস পায়। এ পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য কৃমিনাশক প্রয়োগের মাধ্যমে পরিপাকতন্ত্রের অন্যান্য উপকারী অনুজীব ধ্বংস না করে পরজীবীর ধ্বংস সাধনই সর্বোৎকৃষ্ট পন্থা।


✅ কৃমিনাশক প্রয়োগ পদ্ধতিঃ

👉ভেটেরিনারি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পরজীবীনাশক যে কোনো উৎকৃষ্টমানের ওষুধ বাজার থেকে সংগ্রহ করতে হবে। কৃমিনাশক প্রয়োগের জন্য বছরে দুইটি কৌশলগত মাত্রা প্রত্যেকটি পশুর জন্য নির্দিষ্ট করা হয়েছে। একটি মাত্রা শরতের শেষে (নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে) অন্যটি বর্ষার শুরুতে (মে-জুন মাসে) প্রয়োগ করতে হবে।


✅ কৃমিরোগ প্রতিরোধের কর্মপন্থাগুলো :

👉পরজীবী বহুল এলাকায় প্রথমে সব গবাদিপশুকে পরজীবীর জন্য সর্বাত্মক চিকিৎসা (Mass treatment) দিতে হবে।

👉এর পর নিয়মিতভাবে বছরে অন্তত দুইবার বর্ষার প্রারম্ভে (মে-জুন) এবং শরতের শেষে (নভেম্বর-ডিসেম্বর) গবাদি পশুতে কৃমিনাশক প্রয়োগ করতে হবে।

👉জলজ স্যাঁতসেঁতে এলাকায় গবাদিপশু চরানোর বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

👉সংক্রমণক্ষম পরজীবীর লার্ভা দূরীকরণে কাটা ঘাস বা জলজ উদ্ভিদ ভালোভাবে ধৌত করতে হবে। খড় বা সাইলেজ তৈরি করে খাওয়ালে ভালো ফল পাওয়া যায়।

👉রৌদ্রোজ্জ্বল সকালে মাঠে বা অন্য এলাকায় এক সাথে গবাদিপশু চরানো থেকে বিরত থাকতে হবে।

👉বাংলাদেশের সেসব এলাকায় ব্যাপক পরজীবী আক্রমণের আশংকা আছে সেখানে গবাদিপশুর জন্য আবদ্ধ পালন (Stall-Feeding) পদ্ধতি অনুসরণ করা যেতে পারে।

👉গবাদিপশুর গোবর স্বাস্থ্যসম্মতভাবে ব্যবহার করতে হবে।

👉গবাদিপশুর খামারের পাশে বা গ্রামে যে সব জলাবদ্ধ এলাকা রয়েছে সেখানে শামুক নিধনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা বা সেসব এলাকায় গবাদিপশু চরানো বন্ধ রাখার জন্য বেড়া দিয়ে ঘিরে দেয়া যেতে পারে।

👉গবাদিপশুর স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য খাবারের পুষ্টিমান বৃদ্ধি করতে হবে।


✅ উপকারিতাঃ

বেশিরভাগ কৃমিনাশকই ব্যয়বহুল নয়। পশুতে কৃমিনাশক প্রয়োগ করলে তা পশুপালনকারীর জন্য খুবই সুফল বয়ে আনে। দেখা গেছে ব্যয়ের তুলনায় লাভের আনুপাতিক হার ১:১০ অর্থাৎ কোনো কৃষক যদি কৃমিনাশকের জন্য ১ টাকা ব্যয় করে তবে সে দুধ ও মাংস বাবদ ১০ টাকা আয় করবে। পরিবেশের ওপর কোনো প্রকার বিরূপ প্রভাব নেই বরং কৃমিনাশক পরিবেশকে পরজীবীর ডিম ও লার্ভা মুক্ত রেখে পশু ও মানুষকে পরজীবী মুক্ত রাখতে সহায়তা করে।


✅ সংরক্ষণ ও সতর্কতাঃ

সঠিক মাত্রায় কৃমিনাশক প্রয়োগ করা হলে এর দ্বারা কোনো ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে না। এটা মানুষের জন্য একটি বিষাক্ত ওষুধ। সুতরাং অবশ্যই শিশুদের নাগালের বাইরে রাখতে হবে।


✅ কাক্ষিত ফলাফলঃ

পরজীবী মুক্তকরণের এ কৌশলটি নিয়মিতভাবে প্রয়োগের মাধ্যমে পশুকে পরজীবী মুক্ত রাখলে এদের উৎপাদন ক্ষমতা বেড়ে যায়, যা কৃষকের প্রান্তিক আয়কে বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে। ফলে কৃষকের জীবনযাত্রার মান উন্নত হওয়ার মাধ্যমে তাদের আর্থসামাজিক অবস্থান সুদৃঢ় হয়।


✅ প্রশ্ন : পুকুর তৈরির সময় এবং মাছ থাকা অবস্থায় সার প্রয়োগের মাত্রা কেমন হবে?

↗️ উত্তর : পুকুরে মাছের প্রাকৃতিক খাবার উৎপাদনের জন্য সাধারণত সার ব্যবহার করতে হয়। তাছাড়া পানির গুণাগুণ রক্ষায় প্রয়োজনমতো সার ব্যবহার করতে হয়।

পুকুর তৈরির সময় : প্রতি শতাংশে ইউরিয়া ১৫০ গ্রাম, টিএসপি ১০০ গ্রাম, এমপি ২৫ গ্রাম, গোবর ৮-১০ কেজি অথবা কম্পোস্ট সার ১০-১৫ কেজি।

মাছ থাকা অবস্থায় : প্রতি শতাংশে ইউরিয়া ১০-২০ গ্রাম, টিএসপি ৫-১০ গ্রাম, গোবর ৪-৫ কেজি অথবা কম্পোস্ট সার ৮-১০ কেজি।

মজুদপূর্ব অবস্থায় : প্রতি শতাংশে ইউরিয়া ১০০ গ্রাম, টিএসপি ৫০ গ্রাম, গোবর ৮-১০ কেজি।

মজুদ পরবর্তী অবস্থায় : প্রতি শতাংশে ইউরিয়া ১০ গ্রাম, টিএসপি ৬ গ্রাম, গোবর ১০০-১৫০ গ্রাম হারে ২ দিন পর পর পানির রঙের ওপর নির্ভর করে প্রয়োগ করতে হবে।


✅ প্রশ্ন : মাছ চাষের আদর্শ পুকুরের গভীরতা এবং আয়তন কত হওয়া বাঞ্ছনীয়?

↗️ উত্তর : বাণিজ্যিকভাবে মাছ চাষে পুকুরের আয়তন ১০ শতক থেকে ১০০ শতক (এক একর) হলে ভালো হয়। একটি অত্যধিক বড় আয়তনের পুকুরের চেয়ে এক সঙ্গে কয়েকটি ছোট পুকুর হলে বেশি ভালো হয়। এতে সার্বিক ব্যবস্থাপনা সহজ হয়। পুকুরে পানি ব্যবস্থাপনার সুবিধা থাকতে হবে। পানির গভীরতা সাধারণত ৫-৭ ফুট হতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে পুনরায় পানি সরবরাহ করতে হবে। দুই বা ততোধিক প্রজাতির মাছের চাষ করা উত্তম।


✅ প্রশ্ন : ঘের এর প্রস্তুত প্রণালি সম্পর্কে জানতে চাই।

↗️ উত্তর : ঘের শুকিয়ে তলদেশের পচা কাদা অপসারণ এবং তলদেশ সমান করতে হবে। পাড় উঁচু করে বাঁধতে হবে। ঘেরের পাড়সহ তলায় চুন ভালোভাবে ছিটিয়ে দিতে হবে প্রতি শতকে ১ কেজি হারে। ঘেরের তলদেশ চাষ দিয়ে আবর্জনা পরিষ্কার করতে হবে। ছোট মেস সাইজের লাইন জাল দিয়ে ঘেরের চারপাশে বেড়া (৩ ফুট উঁচু) দিতে হবে। পানি প্রবেশ পথ ও জরুরি পানি নির্গমন পথ করতে হবে এবং তাতে স্ক্রিন বা বানা (বাঁশের পাটা ও নাইলনের জাল দিয়ে তৈরি) দিতে হবে। চুন প্রয়োগের ৫-৭ দিন পরে প্রয়োজনমতো পানি প্রবেশ করিয়ে সার প্রয়োগ করতে হবে ইউরিয়া ১৫০-২০০ গ্রাম/ শতক, টিএসপি ৭৫-১০০ গ্রাম/শতক হারে। এরপর ব্লিচিং পাউডার সমস্ত ঘেরে ছিটিয়ে দিয়ে পানি জীবাণুমুক্ত করতে হবে। অনেক সময় ঘেরের এককোণায় বাঁশের ফ্রেমের সাথে একটি নার্সারি তৈরি করতে বলা হয়। হাঁস-মুরগির বিষ্ঠা বা গোবর ব্যবহার করা যাবে না।


সকল কৃষক ভাই ও বোনদের জন্য শুভ কামনায়---চাষা আলামীন জুয়েল।

পুরুষের যৌনতাকে সম্মান কর। হেল্থ টিপস ফেইসবুক থেকে নেওয়া

 ✊ পুরুষের যৌনতাকে সম্মান কর।✊

পুরুষের যৌন আকর্ষণ আছে বলেই তুমি দুনিয়ার মুখ দেখতে পেরেছো। পুরুষের যৌন আকর্ষণ আছে বলেই তার কাছে তুমি এত স্পেশাল। 


আকর্ষণ আছে বলেই তুমি এত পাত্তা পাও, প্রায়োরিটি পাও। পুরুষের যৌন আকর্ষণ আছে বলেই তুমি রাস্তায় সেজেগুজে বের হও, যাতে পুরুষরা তোমায় দেখে মুগ্ধ হয়। তুমি মুখে অস্বীকার করলেও তোমার অবচেতন মন এটাই চায়।


 পুরুষের যৌন আকর্ষণ আছে বলেই তুমি বিপদে পড়লে বহু পুরুষ এগিয়ে আসে সাহায্যের জন্য।


পুরুষের যৌন আকর্ষণ আছে বলেই সারাদিন খেটে তোমার পছন্দের শাড়ি নিয়ে বাড়ি ফেরে। দুলাইনের ছন্দ লিখে অথবা কয়টা সেলফি দিয়ে যে শতশত রিয়্যাক্ট পাও, সে পুরুষের যৌন আকর্ষণ আছে বলেই। 


সাদা চামড়াকে পুঁজি করে স্বল্পবসনা হয়ে যে সেলিব্রেটি বনে যাও, সে পুরুষের যৌন আকর্ষণ আছে বলেই। যৌন আকর্ষণ আছে বলেই সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ বুদ্ধিমান ও মানবকূলের সেরা শক্তিশালী প্রাণী পুরুষ তোমার দুর্বলতাকে বিদ্রূপ না করে ভালবাসার চাদরে ঢেকে দেয়। যৌন আকর্ষণ আছে বলেই পুরুষ তোমাকে ভালবাসে, সমীহ করে চলে।


পুরুষের যৌন আকর্ষণ না থাকলে সাদা বিড়াল রাস্তা দিয়ে হেঁটে গেলে যেমন কারো ভ্রূক্ষেপ হয় না, তোমার বেলাতেও তেমন ঘটতো। যৌন আকর্ষণ না থাকলে পুরুষ এতোটাই ডমিনেটিং হতো যে নারীজাতি তথা মানবজাতি বিলুপ্ত হয়ে যেতো। যৌন আকর্ষণ না থাকলে প্রতিটি পুরুষ হতো নারীবিদ্বেষী।


সুতরাং, ঢালাওভাবে পুরুষের যৌনতাকে দায়ী না করে নিজেদের ত্রুটিগুলোও শুধরে নিতে শেখো। স্থান-কাল-পরিস্থিতিভেদে যৌনতা নিয়ন্ত্রণের শতভাগ ক্ষমতা পুরুষকে দেওয়া হয়নি।

সঙ্গীতপ্রীয় গাধা

 সঙ্গীতপ্রীয় গাধা


একজন ধোপার একটি গাধা ছিল। গাধার নাম ছিল—উদ্ধত। সারা দিন সে কাপড়ের গাঁঠা এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় টেনে নিয়ে যেত। ধোপা ছিল খুব কৃপণ এবং নির্দয়। সে কখনোই তার গাধার জন্য খাবারের ব্যবস্থা করত না। রাত হলে গাধাকে ছেড়ে দিত—যেদিকে খুশি ঘুরে বেড়াও, খাও-দাও। কাছাকাছি তেমন কোন খাবারেরে প্রাপ্যতা ছিল না। ফলে গাধার শরীর দিনে দিনে দুর্বল হয়ে পড়েছিল।


এক রাতে সেই দুর্বল গাধার দেখা হয় এক বুদ্ধিমান শিয়ালের সঙ্গে। শিয়ালটি জিজ্ঞেস করল, “কী হাল মহাশয়, আপনি এত শুকনো আর দুর্বল কেন?” গাধাটি দুঃখে গলা ভার করে বলল, “সারা দিন খেটে চলি, মালিক কিছু খেতে দেয় না। রাত হলে অন্ধকারে এদিক-ওদিক ঘুরে কিছু খুঁজে খাই। তাই এই দশা।”


শিয়াল হেসে বলল, “ভাই, এবার তোমার কষ্টের দিন শেষ। এখান থেকে একটু দূরে একটা বড় সবজির বাগান আছে। সেখানে কী নেই! শসা, টমেটো, কাঁকরোল, গাজর, মুলা, শালগম, বেগুন—সবই আছে। আমি বাগানে ঢোকার একটা গোপন রাস্তা বানিয়ে নিয়েছি। প্রতিদিন রাতে ঢুকে গিয়ে পেটপুরে খাই, শরীরটাও বেশ শক্তপোক্ত হয়েছে। তুমিও আমার সঙ্গে এসো।”


এই কথা শুনে গাধার মুখে জল এসে গেল। সে আর দেরি করল না, সঙ্গে সঙ্গেই শিয়ালের সঙ্গে বেরিয়ে পড়ল।


বাগানে ঢুকে গাধা বহুদিন পর মন ভরে খাবার খায়। তারা পুরো রাত বাগানে কাটিয়ে ভোর হওয়ার আগেই শিয়াল জঙ্গলে চলে যায়, আর গাধা ফিরে আসে ধোপার কাছে। এরপর প্রতিদিন তারা একসঙ্গে বাগানে গিয়ে দারুণ খায়। কিছুদিনের মধ্যেই গাধার গায়ে মাংস আসতে শুরু করে। তার গা চকচক করতে থাকে, হাঁটায় আনন্দ ফিরে আসে। সে যেন আগেকার কষ্ট ভুলে যায়।


একদিন রাতে পেটপুরে খাওয়ার পর গাধার মন খুব খুশি হয়ে ওঠে। সে মাথা নাড়ে, কান ঝাঁকায়, আর বলল, “আজ আমার মন গান করার জন্য মন আনচান করছে। খাওয়ার পর গান না হলে চলে!”


শিয়াল অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল, “কি বলছো ভাই! এই বাগানে? যেখানে আমরা চুরি করে খাচ্ছি? যদি কেউ শুনে ফেলে?”


গাধা চোখ বন্ধ করে মুগ্ধ গলায় বলল, “না না, আজ আমি আমার ‘ঢ্যাঁচু রাগ’ গাইবই! গান না গাওয়া মানে খাবারের অসম্মান।”


শিয়াল কাঁপতে কাঁপতে বলল, “ভাই, আমি গান-বাজনা বুঝি না। আমি শুধু জানি কীভাবে বাঁচতে হয়। প্লিজ, গান গেয়ো না। ধরা পড়ে যাব।”


গাধা রেগে গিয়ে বলল, “তুমি গাঁইয়া শিয়াল । তোমার গান সম্পর্কে কিছুই জানা নেই। আমরা গাধারা শুদ্ধ সুরে গান গাই, সেটা তোমার মতো গুবরে বুঝবে না।”


শিয়াল তখন চালাকী করে বলল, “ভাই, আমি তো ভুল করেই ফেলেছি। তুমি তো একেবারে সঙ্গীতসম্রাট! আমি এখনই ফুলের মালা নিয়ে আসি তোমার গলার জন্য। তুমি আমার যাওয়ার দশ মিনিট পর গাইতে শুরু করো, আমি মালা নিয়ে ফিরে আসব।”


গাধা খুশি হয়ে মাথা নাড়ল। শিয়াল সোজা জঙ্গলের দিকে পালিয়ে গেল।


কিছুক্ষণ পর গাধা চোখ বন্ধ করে শুরু করল জোরে জোরে ‘ঢ্যাঁচু’ গান করা। তার আওয়াজে বাগানের সব কেয়ারটেকার জেগে গেল। হাতে লাঠি নিয়ে তারা গাধার দিকে ছুটে এল। গাধাকে দেখে একজন বলল, “এই তো সেই গাধা, যে প্রতিদিন আমাদের সবজি খেয়ে যাচ্ছে!”


এরপর সবাই মিলে গাধাকে বেশ উত্তম মধ্যম দিল ।  অবশেষে গাধাটি খোঁড়াতে খোঁড়াতে ধোপার কাছে ফিরল । 


গল্পের শিক্ষা

“বোকারা বোঝে না তারা আসলেই বোকা । বরং যারা তাদের মঙ্গল চায়, তাদের সাথেও তর্ক করে বিপদে পড়ে । ”

 #niosnews #motivationalstories #motivationalpost #InspirationalStory #inspiration #motivationalsotry #inspirationalquotes #motivation #motivationalwords #inspirational #motivationalstory #motivationalquotes

টাকার গুরুত্ব তখনই বোঝা যায়, যখন আপনার আদরের সন্তান দোকানে দাঁড়িয়ে একটা খেলনা বা পোশাক পছন্দ করে, কিন্তু আপনি সেটা কিনে দিতে ব্যর্থ হন!

 💸 টাকার গুরুত্ব তখনই বোঝা যায়, যখন আপনার আদরের সন্তান দোকানে দাঁড়িয়ে একটা খেলনা বা পোশাক পছন্দ করে, কিন্তু আপনি সেটা কিনে দিতে ব্যর্থ হন!


💸 টাকার গুরুত্ব তখনই বোঝা যায়, যখন কোনো অনুষ্ঠানে গিয়ে দেখেন শুধুমাত্র অর্থনৈতিক দৈন্যতার কারণে আপনাকে কম গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।


💸 টাকার গুরুত্ব তখনই বোঝা যায়, যখন শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে বুঝতে পারেন, আপনার তুলনায় অন্য জামাইকে বেশি আদর আপ্যায়ন করা হচ্ছে, কারণ সে ধনী।


💸 টাকার গুরুত্ব তখনই বোঝা যায়, আপনার স্ত্রীর ছোট ছোট ইচ্ছেগুলো আপনি পূরণ করতে পারেন না, আর এজন্য সে আপনাকে উঠতে বসতে খোঁটা দেয়।


💸 পরিবার নিয়ে রেস্টুরেন্টে খেতে গেলে, বিল দেওয়ার সময় বুঝবেন টাকা কতটা জরুরি।


💸 যখন আপনার কাছে টাকা নেই বলে বন্ধুরাও আপনাকে মূল্যায়ন করে না, তখন উপলব্ধি করবেন কেন টাকা দরকার।


💸 যখন দেখবেন, আপনার টাকা নেই বিধায় আত্মীয়স্বজন আপনার সাথে দূরত্ব বজায় রেখে চলে, তখন স্পষ্ট হবে টাকার মূল্য।


💸 বিপদের সময় দেখবেন, আপনার টাকা কম বলে কেউ আপনার পাশে থাকে না, আপনার প্রতি সহানুভূতি দেখায় না! তখন সত্যিকার অর্থে বুঝবেন টাকার প্রয়োজনীয়তা।


💸 টাকার অভাবই মানুষকে শেখায় এর গুরুত্ব। তাই নিজের অবস্থান শক্তিশালী করতে হলে, টাকা কামাই করতে শিখুন। কারণ, জীবনের ৮০% সমস্যার সমাধান টাকা দিয়েই সম্ভব!

আবারও ইলন মাস্ক আলোচনায়! মাস্ক সম্প্রতি এমন একটি রোবট উন্মোচন করেছেন, যা বিশ্বজুড়ে বিস্ময় তৈরি করেছে। মাত্র ৫,০০০ ডলারের এই রোবটটি পেশাদার শেফদের চেয়েও ভালোভাবে খাবার রান্না করতে পারে। রোবটটির নাম Culina, এবং এটি মাস্কের নতুন একটি উদ্যোগ, যা টেসলার অধীনে ফুড টেকনোলজি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) নিয়ে কাজ করছে।

 আবারও ইলন মাস্ক আলোচনায়! মাস্ক সম্প্রতি এমন একটি রোবট উন্মোচন করেছেন, যা বিশ্বজুড়ে বিস্ময় তৈরি করেছে। মাত্র ৫,০০০ ডলারের এই রোবটটি পেশাদার শেফদের চেয়েও ভালোভাবে খাবার রান্না করতে পারে।

রোবটটির নাম Culina, এবং এটি মাস্কের নতুন একটি উদ্যোগ, যা টেসলার অধীনে ফুড টেকনোলজি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) নিয়ে কাজ করছে।


Culina একটি সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় কুকিং অ্যাসিস্ট্যান্ট, যার মধ্যে রয়েছে উন্নত AI ও সুনির্দিষ্ট রোবটিক প্রযুক্তি। এটি ফ্রেঞ্চ পেস্ট্রি থেকে শুরু করে স্টেক পর্যন্ত সব ধরনের খাবার তৈরি করতে পারে। উচ্চ মানের সেন্সর, রোবোটিক বাহু এবং নানা ধরনের রান্নার কৌশল ব্যবহার করে Culina প্রতিটি খাবারকে নিখুঁতভাবে প্রস্তুত করে।


রোবটটির AI অ্যালগরিদম ব্যবহারকারীর রুচি ও পছন্দ অনুযায়ী নিজেকে ক্রমাগত আপডেট করে, ফলে প্রতিবারই এটি ব্যক্তিগতকৃত খাবার পরিবেশন করতে সক্ষম।কর্মজীবীদের আর রান্না করার চিন্তা থাকবে না।

এখন কর্মজীবীদের অবসরে যাবার সময় এসেছে।


তথ্যসূত্র: 4techviews.net

গল্প: প্রাপ্তি কলমে: সরজিৎ ঘোষ Sarajit Ghosh ফেইসবুক থেকে নেওয়া

 ট্রেনে ফিরছিলাম। গিয়েছিলাম মেয়ের বিয়ের জন্য গয়না কিনতে। সঙ্গে আমার মেয়েও গিয়েছিল। সামনের মাসেই আমার ছোটো মেয়ের বিয়ে। আমার অবশ্য দুই মেয়ে। বড়ো মেয়ের বিয়ে হয়েছে তাও প্রায় সাত বছর হয়ে গেল। বছর দুয়েক হলো আমিও রিটায়ার করেছি। ছোটো মেয়ের ইচ্ছে বিয়ের সমস্ত গয়না কলকাতা থেকে কিনবে, আর আমাকে সঙ্গে যেতে হবে। আমি তবুও বললাম, 


-আমি গয়নার কি বুঝি বল তো! তোর মাকে নিয়ে যা‌।


আমার কথা শুনে ছোটো মেয়ে বলল,


-তোমাকেই যেতে হবে। তুমি বোঝো আর নাই বোঝো আমি কোনো কথা শুনব না। 


তবে এ ব্যাপারে আমার বড়ো মেয়ে অনেক আগে থেকেই বলেছিল, বোনের জন্য সমস্ত গয়না কলকাতা থেকেই নিও। তাহলে আমিও যেতে পারব তোমাদের সাথে।


আমার বড়ো মেয়ের বিয়ে হয়েছে বালিগঞ্জে। আমি আর আমার ছোটো মেয়ে তাই আগের দিন সন্ধ্যেয় চলে এসেছিলাম বড়ো মেয়ের বাড়িতে। দুপুরে খাওয়া দাওয়া সেরে দুই মেয়েকে নিয়ে বেরিয়ে ছিলাম কেনাকাটা করতে। প্রথমে গড়িয়াহাট গিয়ে বিয়ের বেনারসীটা কেনা হয়, তারপর ওখান থেকে চলে যাই পি. সি.চন্দ্র জুয়েলার্সে। গয়না গাটি কেনাকাটা করে দোকান থেকে যখন বের হলাম তখন সাড়ে আটটা বেজে গেছে। বড় মেয়ে ওর বাড়ির দিকে রওনা দিল। আমি আর ছোটো মেয়ে ওখান থেকে ট্যাক্সি ধরে হাওড়া চলে আসি। হাওড়ায় এসে দেখি ন'টা বিয়াল্লিশের ট্রেনটা বেরিয়ে গেছে। পরের ট্রেন দশটা দশে। ওয়েট করা ছাড়া উপায় নেই। রাত তখন অনেকটাই হয়ে গেছে। 


যাইহোক, দশটা দশের ট্রেনটা ধরি। ট্রেনের মাঝামাঝি  একটা জেনারেল কামরায় উঠি। যখন ট্রেনে উঠি তখন ভালোই লোকজন ছিল। যাব এক ঘণ্টার বেশি রাস্তা। কর্ড লাইন বর্ধমান লোকাল। আস্তে আস্তে ভীড়টা কমতে লাগল। একটার পর একটা স্টেশন যত আসছে ততই কামরা ফাঁকা হতে লাগলো।অনেক ক্ষণ থেকে লক্ষ্য করছি কিছুটা দূরে বসে আছে দুটি ছেলে। তার মধ্যে একজনের পেশি বহুল তাকড়াই চেহারা। বয়স ত্রিশ পঁয়ত্রিশ হবে। গুণ্ডা টাইপের দেখতে। হাতে একটা বালা। মুখে রুমালটা বেঁধে রেখেছে। আমাদের দিকে বার বার তাকাচ্ছে। এই তাকানোটা আমার ঠিক ভালো ঠেকছিল না।ট্রেনের কামরা যখন ফাঁকা হয়ে গেল, তারপর থেকে ভয়টা আরো বেশি করতে লাগলো। ওদের তাকানো দেখে আমার কেমন যেন সন্দেহ হতে লাগল। গয়নার ব্যাগটা আমি কোলের ওপর রেখে চেপে ধরে বসে আছি। মনে মনে আমি সাহস দেখানোর চেষ্টা করছি। ওদেরকে বুঝিয়ে দিতে হবে আমি ভয় পাই না। এদিকে আমার মেয়েও পাশে বসে আছে। আমার মেয়েও ব্যাপারটা বুঝতে পেরে আমাকে ফিস ফিস করে বলল, 


-বাবা খুব একটা ভালো দেখছি না। ভয় করছে ভীষণ। দিদির কথা শুনলেই ভালো হত। দিদি আজকের দিনটা থেকে যেতে বলেছিল, আর তুমি শুনলে না। চলো পরের কামরায় চলে যাই।এই কামরাতে একটাও লোক নেই।প্রাণে বাঁচতে পারব না না'হলে।


মেয়েকে ভরসা দিয়ে বললাম,


-তাই করতে হবে। পরের স্টেশনটা আসতে দে, ভয় পাস না। মনে সাহস রাখ।


হঠাৎ করেই ট্রেনটা সিগন্যাল না পেয়ে মাঝখানে দাঁড়িয়ে গেল।ধূ ধূ মাঠ। কেউ কোত্থাও নেই। চারিদিক অন্ধকার। এদিকে আমার কাছে দশ লাখ টাকার মতো গয়না, বিয়ের দামী দামী শাড়ি, মনের ভিতর যে কি হচ্ছে বলে বোঝাতে পারব না।


তারপর দেখি ওই দুটি ছেলের মধ্যে ওই মোটাসোটা চেহারার ছেলেটি উঠে দাঁড়িয়ে আমাদের দিকেই তখন এগিয়ে আসছে।আমাদের কামরায় একটা লোকও নেই যে আমাদের সাহায্য করতে পারে। আমার মেয়ে ততক্ষণে ভয়ে জড়ো হয়ে আমার গা ঘেঁষে এসে বসেছে। চিৎকার করব না কি করব বুঝে উঠতে পারছি না। যা হবে হবে, মনে সাহসটুকু রেখেছি। তারপর ছেলেটি গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে এসে আমার পা দুটো ছুঁয়ে প্রণাম করে বলে, 


-স্যার চিনতে পারছেন?


স্যার বলতেই তো আমি অবাক। আমি তখন মুখের দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছি।


-স্যার চিনতে পারছেন না? আসলে না চিনতে পারারই কথা।আজ কত দিন হলো স্কুল ছেড়েছি। আমাদের মনে রাখার মতো কোনো বৈশিষ্ট্যই তো নেই। তবে স্যার একটু মনে করুন আমাকে চিনতে পারবেন হয়তো। আমার ডাক নাম গদাই। আপনি গদা বলে ডাকতেন। 


-গদা? গদা মানে তুই সেই গদাই‌। দেখেছো কি কাণ্ড। একদম চিনতে পারিনি‌।


-আমি স্যার আপনাকে দেখেই চিনতে পেরেছি। তখন অনেক লোকজন ছিল বলে কাছে আসতে পারিনি। আপনাকে কি করে ভুলি স্যার। স্যার মনে আছে আমি একটা খুব খারাপ কাজ করেছিলাম। দীনুর ব্যাগ থেকে একদিন দশটাকা চুরি করেছিলাম। আমি চুরি করেছি এটা জেনেও সবার সামনে আপনি আমার নামটা বলে দেন নি। পরে আমাকে আলাদা করে ডেকে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন আমি ওই কাজটা ঠিক করিনি।আমাকে শুধরে দিয়েছিলেন। আপনি সৎ হতে শিখিয়েছিলেন‌।মানুষ হতে বলেছিলেন। পড়াশোনায় ভালো ছিলাম না। তাই লেখা পড়া বেশি দূর এগোয় নি। কিন্তু সেদিন আপনার সেই শিক্ষা ভুলিনি।


গদাইয়ের কথা গুলো শুনতে শুনতে সেই কুড়ি বছর আগে স্কুলের ছাত্র ছাত্রীদের মুখ গুলো যেন আবার একবার মনে পড়ে গেল। মনে পড়ে গেল গদাই ঠিকই বলছে। চেহারাটা ভালো ছিল বলে আমি ওকে গদা বলতাম‌। গদা নামটা শুনে ও নিজে ফিকফিক করে হাসত তখন। সেদিনের সেই গদাই আজ কত বড়ো। অথচ আমি চিনতে পারিনি। আমি নিজে থেকেই জিজ্ঞেস করলাম, 


-কি করছিস এখন? 


-স্যার একটা মারুতি ভ্যান কিনেছি। এখন ওই গাড়িটাই চালাই। 


-বিয়ে করেছিস তো?


-না স্যার। বিয়ে করিনি। স্কুল ছাড়ার বছর তিনেক পর আমার বাবাও মারা গেল। আমার দুই বোন। আমি নিজে বোনেদের বিয়ে দিয়েছি। আর আপনি তো জানেন আমার মা যখন মারা গেল আমি তখন সিক্সে পড়ি। তারপর তো বাবা আবার বিয়ে করল।


সত্যিই তো গদাইয়ের  মা ছোটো বেলায় মারা গিয়েছিল। আরো সব কিছু যেন ছবির মতো পরিষ্কার হয়ে গেল। কত দিনের কথা আজ সব মনে পড়ে গেল।


-তাহলে এখন বাড়িতে কে কে আছেন? 


-আমি আর আমার মা। জানেন স্যার কখনো মনে হয়নি উনি আমার সৎ মা। আমাকে  খুব ভালো বাসে। আমি যত রাতেই বাড়ি ফিরি আমার জন্য জেগে বসে থাকবে। আমি বারণ করি কিন্তু শুনবেই না। বলে তুই ছাড়া আমার কে আছে? আমিও আমার মাকে খুব ভালোবাসি। পরের মাসে মাকে নিয়ে হরিদ্বার যাচ্ছি। আপনারাও চলুন না আমাদের সাথে!


-হ্যাঁ  নিশ্চয়ই যাব। আমার ছাত্র বলছে যখন তখন তো যেতেই হবে।


দূর থেকে মানুষকে দেখে অনেক কিছু ভুলভাল চিন্তা করে ফেলি। তারপর ভাবনা গুলো এলোমেলো হয়ে যায়। গদাই ফার্স্ট ,সেকেণ্ড, থার্ড কখনো হতে পারেনি, এক থেকে দশের মধ্যেও আসতে পারেনি। তার দায়িত্ব বোধ, কর্তব্য বোধ,শ্রদ্ধা, সম্মান, মায়ের প্রতি ভালোবাসায় প্রথম সারির অনেক ছেলেকেই ফেলে পিছনে ফেলে সামনে এগিয়েছে। সব শিক্ষা কি বইয়ের পাতায় থাকে? জীবনের পাতায় অনেক শিক্ষা লুকিয়ে থাকে। কথা গুলো মনে মনে ভাবতে থাকি। এদিকে স্টেশন চলে আসতে দেখে গদাই বলল,


-স্যার নামবেন তো? 


সংবিৎ ফিরল গদাইয়ের কথায়। 'এক্ষুণি চলে এলাম। তোর সাথে কথা বলতে বলতে বুঝতেই পারিনি সময় কীভাবে কেটে গেল।'


-স্যার ভারী ব্যাগটা আমার হাতে দিন। আমি নিচ্ছি ওটা। 


ট্রেন থেকে নামি। বাড়ি আট-দশ মিনিটের হাঁটা পথ। তো হেঁটেই চলে যাব আমরা। গদাই বলল,


-স্যার দু মিনিট দাঁড়ান। স্টেশনের কাছেই আমার গাড়ি রাখা আছে আমি বাড়ি পৌঁছে দেব আপনাদের। 


-না না হেঁটেই চলে যাব‌।


-না স্যার আমার গাড়ি থাকতে হাঁটবেন কেন?


ভয় ভীতি দূরে সরে গিয়ে মনের ভিতর এক অন্য রকম আনন্দ হচ্ছে তখন। তারপর গদাই বাড়ি পর্যন্ত আমাদের পৌঁছে দিল।বাড়িতে ভিতরে আসার কথা বলতে  গদাই বলল,


-স্যার বাড়ি তো দেখে গেলাম‌। পরে একদিন আসব। 


গদাই গাড়িতে স্টার্ট দিতে শুরু করেছে, ঠিক সে সময়েই আমার ছোটো মেয়ে বলল,


-দাদা একটু দাঁড়াও। 


তারপর বাড়ির ভিতর থেকে বিয়ের কার্ডটা নিয়ে এসে গদাইয়ের হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলল,


-বিয়ের দিন সকাল থেকেই চলে এসো, আর কাকিমাকে সঙ্গে নিয়েই এসো। তোমার মতো আমার একটা দাদা থাকলে আমার আর চিন্তা কি। আজ থেকে তুমি আমার দাদা।


দাদা ডাক শুনে গদাই যে কতটা খুশী, সেই খুশীর ছাপ ফুটে উঠল গদাইয়ের চোখে মুখে। গদাই হাসি মুখে বলল,


-নিশ্চয়ই আসব। বোনের বিয়ে বলে কথা। জীবনে এও এক অনেক বড়ো পাওয়া, এমন সৌভাগ্য কত জনের হয়!


পড়াশোনায় হয়তো গদাই ভালো ছিল না। জীবনাচরণের শিক্ষায় সে শিক্ষিত। এমন কতো গদাই আছে তারা আজও শ্রদ্ধায় সম্মানে মাস্টারমশাই দিদিমণিদের অন্তর ভরিয়ে দিয়ে ভিতরটাকে নাড়িয়ে দিয়ে যায়। ভালো লাগায় নয়,  ভালোবাসায় মনটা ভরে যায়। আমরা হয়তো ছাত্র ছাত্রীদের সব সময় চিনতে পারি না। ছাত্র ছাত্রীরা কখনো ভুলে যায় না স্যার ম্যাডামদের। গাড়িটা স্টার্ট দিয়ে সামনের দিকে এগোতে থাকে গদাই। সম্মানের আলাদা  একটা সুবাস তো আছেই, তাতেই আজীবন ভরে থাকা যায়। মাস্টারমশাইদের জীবনে এটাই বোধহয়  সবচেয়ে বড়ো প্রাপ্তি।


-:সমাপ্ত:-

(রিপোস্ট)

গল্প: প্রাপ্তি

কলমে: সরজিৎ ঘোষ Sarajit Ghosh

সেকালের কোলকাতায় সবচেয়ে জাঁকজমকপূর্ণ চড়ক হত বাগবাজারে

 সেকালের কোলকাতায় সবচেয়ে জাঁকজমকপূর্ণ চড়ক হত বাগবাজারে। যা ষোলো চড়কির চড়ক নামে খ্যাত ছিল। প্রাণকৃষ্ণ দত্ত ষোলো চড়কির চড়ক নিয়ে লিখে রেখে গিয়েছেন। ষোলো চড়কির ছিল চড়ক রামধন ঘোষের চড়ক। যা শেষবার হয়েছিল ১৮৫৪ বা ১৮৫৫ সালে। বসুবাটীর দক্ষিণ-পূর্ব কোণে চড়কের আসর বসত। ১৬জন লোকের পিঠ ফুঁড়ে ঝুলিয়ে ঘোরানো হত। সে কারণেই নাম ষোলো চড়কি। মাচানের উপরে আবার একজনকে শিব সাজিয়ে বসানো হত।


বড়বাজারেও চড়ক হত। কোনও কোনও কলকাতা গবেষক মনে করেন, বুড়া বা বড়ো শিব থেকেই বড়বাজার নামটির জন্ম। এই বড়বাজারের চড়ক বিডন স্ট্রিটে উঠে এসেছিল। বিডন স্ট্রিটে চড়ক চালু করার নেপথ্য কারিগর ছিলেন সেকালের বিখ্যাত ধনী রামদুলাল দে সরকার। বড়বাজারে চড়ক বন্ধ হওয়ার পর নতুন বাজারের উলটোদিকের বিশাল মাঠে চড়ক শুরু করেছিলেন রামদুলাল। ইংরেজরা সেখানে পালকি স্ট্যান্ড বানানোয়, চড়কের জন্য নতুন জায়গার দরকার পড়ে। তখন রামদুলাল, নিজের জমিতে বিডন স্ট্রিটের মাঠে চড়ক শুরু করেন। ১৭৮০ সাল থেকে ছাতুবাবু বাজারের মাঠে চড়ক আরম্ভ হয়। ছাতুবাবু ও লাটুবাবু, রামদুলালের দুই ছেলে। প্রায় আড়াইশো বছর যাবৎ বহাল তবিয়তে বিডন স্ট্রিটের চড়ক চলছে। বর্তমান নাম অভেদানন্দ রোড হলেও, এখনও সে রাস্তা বিডন স্ট্রিট নামেই অধিক জনপ্রিয়। ভাগ্যের কী নিষ্ঠুর পরিহাস! কলকাতায় চড়ক বন্ধ করার যাবতীয় উদ্যোগের হোতা ছিলেন ছোটলাট সিসিল বিডন, তাঁর নামের রাস্তায় আজও চড়ক চলছে।

পোস্ট ভালো লাগলে শেয়ার করে বন্ধুদের দেখার সুযোগ করে দেবেন 🙏🙏 ধন্যবাদ 🌹🌹

Pappu Roy cyclist 


সংগৃহিত পোস্ট

ছন্দে ছন্দে সালফারের লক্ষন মনে রাখার সহজ কৌশল।

 🏖️সালফার-✴কবিতা-১✴ Sulpher🎋

ছন্দে ছন্দে সালফারের লক্ষন মনে রাখার সহজ কৌশল।


হলুদ বর্নের খনিজ ইহা

সহজে চোখে ধরে।

চর্ম রোগের কথা হলেই

সালফার মনে পড়ে।


সূঁচ ফুটানো, হুঁল ফুটানো

কুটকুটানি ব্যথা,

এসব ক্ষেত্রে চলে আসে 

সালফারেরই কথা।


অপরিষ্কার, অপরিছন্ন, নোংরা স্বভাব বটে

গোসল করতে অনিচ্ছা তার,সকল ক্ষেত্রে ঘটে।

মাথার তালু,হাতের তালু,পায়ের তলায় তাপ,

হঠাৎ করেই ঘুম ভেংগে যায় ,যখন মলের চাপ।


ঠোঁটের কালার রক্তবর্ণ

হাত, পা সরু বটে,

দিনের বেলা ঘুমিয়ে থেকে

রাত নির্ঘুম কাটে।


পুরো শরীর দুর্গন্ধময়,

আহার করে কম

তারপরেও খাই খাই স্বভাব

নেয়না একটু দম।


খিটখিটে,একগুয়ে, ক্রোধে ভরা মন

বিষাদমাখা,অগোছালো কাটে সারাটাক্ষন।

পরের দোষ খুজে বেড়ায়,ভুলোমন স্বভাব,

খুটিনাটিতে বকবকানি,সাহসের বেশ অভাব।


একসাথে অনেক ফোঁড়া কিংবা চর্মরোগ,

হাত বা পায়ে মামড়ি পরা চামড়া উঠা হোক।

এসব যাবে চলে,

সময়মত সালফারের ১টি ডোজ খেলে।


দুধ খাইতে মন চায় তার

খাইলে হয়না সহ্য।

মলত্যাগেও বেগ কমেনা,

কতই ধরে ধৈর্য্য।


চোখের সামনে কালো কালো দাগ

কিংবা কানের চুলকানি।

অশ্ব বলিও দূর হয়ে যায়

সত্য সবাই মানি।


স্বরভঙ্গ, সর্দিকাশি,বঙ্কাইটিস কমন

কাঁশতে কাঁশতে অনেকসময় করে ফেলে বমন।

কানে সদা সাই সাই আওয়াজ,চালাক রোগী অতি।

ছটফটানী থাকে যদি সালফারেতেই গতি।


🎍 উৎসাহ পেলে আরো লিখব 👻 🪡

🍂জটিল এবং কঠিন লক্ষনগুলো সহজে মনে রাখার অন্যতম একটি কৌশল হচ্ছে ছন্দে ছন্দে বা কবিতাগুচ্ছের মাধ্যমে। সে রকমই এক প্রচেষ্টায় এটি লেখাটি📍


🍃 Dr.Md.Forhad Hossain 

D.H.M.S(B.H.😎,DHAKA

Pdt(Hom)

Consultant:Homoeopathic  Medicine 

🍎চেম্বার:জার্মান হোমিও কেয়ার

তক্ষশীলা: হারিয়ে যাওয়া এক শহর ও বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা।

 🌍 তক্ষশীলা: হারিয়ে যাওয়া এক শহর ও বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা।


তক্ষশিলা ছিল বর্তমান পাকিস্তানের ইসলামাবাদ থেকে ৩২ কিমি দূরে অবস্থিত। পৌরাণিক কাহিনী মতে, দশরথের পৌত্র এবং ভরত গান্ধার জয় করে নিজের পুত্র তক্ষের নামানুসারে তক্ষশীলা নগর স্থাপন করেন। মহাভারত মতে, এই স্থান তখন গান্ধারের অন্তর্গত ছিল। অনেকের মতে এ স্থানে তক্ষ নামক এক জাতি বাস করতো। এই জাতির 114 এই স্থানের নাম হয়েছিল তক্ষখণ্ড। কালক্রমে নামটি তক্ষশীলা নামে পরিচিত হয়।


পারস্য সম্রাট কাইরাসের ৩য় উত্তরসূরী সম্রাট ১ম দারায়ুস এবং পরে জারেক্সিস এই অঞ্চলে আধিপত্য বজায় রাখেন। এ সময় এই অঞ্চলের অন্যান্য এলাকার সাথে তক্ষশিলাও পারস্য অধিকারে ছিল।


খ্রি.পূ ৩২৬ অব্দে আলেকজান্ডার সিন্ধু পার হয়ে তক্ষশিলায় প্রবেশ করেন। এ সময় তক্ষশিলার রাজা অম্ভি তার কাছে বশ্যতা স্বীকার করেন। আলেকজান্ডার তক্ষশিলা থেকে আরও পূর্বদিকে অগ্রসর হয়ে ঝিলম নদী পার হয়ে পুরুর রাজ্য আক্রমণ করেছিলেন। ৪০৫ অব্দের দিকে চৈনিক পরিব্রাজক ফা-হিয়েন তক্ষশীলা পরিদর্শন করে এই স্থানকে পবিত্র এলাকা হিসাবে উল্লেখ করেন।


চন্দ্রগুপ্তের গুরু ও অর্থনীতিবিদ কৌটিল্যের পৃষ্ঠপোষকতায় তক্ষশিলায় রাজত্বের পত্তন করেন চন্দ্রগুপ্ত। চন্দ্রগুপ্ত তাঁর পুত্র বিন্দুসারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের পর তক্ষশীলাবাসী রাজশক্তির অত্যাচরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে। বিন্দুসার কঠোরভাবে বিদ্রোহ দমন করেন। খ্রি.পূ. ২৭৩ অব্দের দিকে বিন্দুসার পুত্র অশোক রাজত্ব লাভ করলে তক্ষশিলা বৌদ্ধ সংস্কৃতির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। অশোক পাটালিপুত্র থেকে তক্ষশিলার ভিতরে ১৬০০ কিমি রাস্তা তৈরি করেন।


তক্ষশিলাকে বিশ্বের প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের একটি বিবেচনা করা হয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণত ছাত্র ভর্তি হতো ১৬ বৎসর বয়সে। ১৮ বছর থেকে শেখানো হতো শিল্পকলা, তীর নিক্ষেপ, শিকার, আইন, চিকিৎসা এবং সমরবিদ্যা। উচ্চতর শিক্ষার ক্ষেত্রগুলো ছিল বেদ, ভাষা, ব্যাকরণ, দর্শন, চিকিৎসাশাস্ত্র, ধনুর্বিদ্যা, রাজনীতি, যুদ্ধবিদ্যা, জ্যোতিঃশাস্ত্র, হিসাব বিজ্ঞান, গণিত, অর্থনীতি, সঙ্গীত ও হস্তশিল্প।


প্রায় ১০ হাজারের উপর ছাত্র-শিক্ষক ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ে। ছাত্রদের কাছ থেকে শিক্ষা এবং থাকা-খাওয়ার জন্য অর্থ নিতো বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু শিক্ষক ও বিশ্বদ্যালয়ের অন্যান্য খরচ আসতো রাজকোষ ও ছাত্রদের কাছ থেকে। দরিদ্র ছাত্ররা তক্ষশীলায় নানা রকম কাজ করে পড়াশুনার খরচ মেটাতো। এখানে নারী শিক্ষার প্রমাণ পাওয়া যায়নি।


চাণক্য প্রকৃতপক্ষে প্রাচীন তক্ষশীলা বিহারের অর্থনীতি ও রাষ্ট্র বিজ্ঞানের অধ্যক্ষ ছিলেন। এই বিজ্ঞ ও প্রতিভাধর ব্রাহ্মণের জন্ম সেকালের তক্ষশীলার 'চানকা' গ্রামে খ্রিষ্টপূর্ব চতুর্থ শতাব্দীতে , যা থেকে তার অপর নাম 'চানক্য এর উদ্ভব । বিষ্ণু গুপ্ত ও কৌটিল্য নামেও পরিচিত ছিলেন তিনি। 


আরেক মহামানব গৌতম বুদ্ধের চিকিৎসক, নাম জীবক কোমার ভচ্চ। বুদ্ধকে কয়েকবার তিনি দুরারোগ্য ব্যাধি থেকে সারিয়ে তোলেন। চিকিৎসাবিদ্যায় পারদর্শিতা অর্জনের জন্য জীবক সেই সময়ের আয়ুর্বেদ শিক্ষার পীঠস্থান তক্ষশিলায় যান। সেখানে তিনি ছিলেন ৭ বছর। 


বিখ্যাত চিকিৎসক চরক তক্ষশীলার বিস্ময়কর অবদান। যোগসাধনা চর্চার জন্য তাকে চরক মুনিও ডাকে। তিনি বিখ্যাত চিকিৎসা শাস্ত্র “চরক সংহিতা” রচনা করেন। আয়ুর্বেদ চিকিৎসায় এই বই এনে দিয়েছে বিপ্লব। প্রাচীন ভারতের চিকিৎসা শাস্ত্রে প্রথম প্রামাণ্য গ্রন্থ হিসাবে বিবেচিত হয় “চরক সংহিতা”। 


প্রাচীন যুগের গান্ধার প্রদেশেরৎ তক্ষশিলার অধ্যাপকরা ছিলেন অপ্রতিদ্বন্দ্বী। খ্যাতনামা চিকিৎসক আত্রেয় এখানেই চিকিৎসাশাস্ত্রের অধ্যাপনা করতেন। ঐতিহাসিকরা আত্রেয়কে আয়ুর্বেদ চিকিৎসার পথিকৃৎ বলে থাকেন।


প্রখ্যাত সংস্কৃত ব্যাকরণ রচয়িতা পাণিনি। তিনি তক্ষশীলা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ছিলেন। পানিনি সম্পর্কে বলতে গেলে বলা যায়, সংস্কৃত ভাষার ব্যাকরণবিদ এই বিদ্যান ।


তক্ষশিলা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিকে তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়ে গেছে সাম্রাজ্যবাদী পারস্য, গ্রীক, রোমান, শক, কুষান, আক্রমণ। এসব আক্রমনে সৃষ্ট অস্থির রাজনৈতিক আগ্রাসনের সর্বশেষটি (৪৫০ খ্রি.) আসে হুনদের পক্ষ থেকে। এরপরই থেমে যায় তক্ষশিলার পথচলা।


সৌজন্যে: ঋষণা  রূপকথা

সোশ্যাল মিডিয়াতে ইনকাম ও তার বাস্তবতা,,,,

 📲 সোশ্যাল মিডিয়াতে ইনকাম ও তার বাস্তবতা 🎥 বাস্তবতা না বুঝে রিলস বানানোর নামে জীবনের ভারসাম্য হারানো… বর্তমানে বহু তরুণ-তরুণী ফেসবুক, ইনস...