এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

শুক্রবার, ৭ অক্টোবর, ২০২২

আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম

অডিও সিডি ও ক্যাসেটের মূল্য এখন বেশি কেন?


২০০০ সালে ১ ভরি সোনার দাম ছিল ৬৫০০ টাকা, আজ প্রায় ৭০/৭২ হাজার।

গরুর মাংস ছিল ৪০-৬০ টাকা। একটা লাক্স সাবানের দাম ছিল ১২/১৪ টাকা, টুথপেষ্ট ছিল ৩০-৪০ টাকার ভিতর। একটা সিগারেটের দাম ছিল ২/৪ টাকা। এসব জিনিসের বর্তমান দাম কি উল্লেখ করতে হবে?


ক্যাসেটের দাম ছিল ৩৫ টাকা। আপনি কি জানেন বাংলাদেশের শেষ অডিও ক্যাসেট কোনটা? 

জানেন না। আমিও জানিনা। কোন কোম্পানিও জানেনা। ২০০৯ সালে চুপিসারেই হয়তো কোন একটা এলবাম কোন একটা কোম্পানি থেকে বের হয় যা আর কেউ সেইসময়ে খোঁজ রাখেনি। 


কেন খোঁজ রাখেনি? শৈশব, কৈশোর ক্যাসেটের ফিতায় গান শুনে যার দিন কাটতো, তার দিন তখন কেটেছে মেমোরি কার্ডে কিংবা ভিসিডি প্লেয়ারে ৩০ টাকায় "বেস্ট অফ আসিফ" এর সারাজীবনের গান নিয়ে একটা এমপিথ্রি কিনে। 


২০০৯ সালে ক্যাসেট বন্ধ হলেও ২০০২/০৩ সালের পর থেকেই কিন্তু মূলত ভালো এলবাম বের হওয়া বন্ধ হয়ে যায়। ২০০৬/০৭ সালের দিকে চলে আসে মেশিন দিয়ে বানানো গান। অনেক নামীদামী শিল্পীও গান থেকে সরে অন্য পেশায় যেতে বাধ্য হয়েছে। সেইসময়ে বিভিন্ন সিডি ক্যাসেট কোম্পানিতে হাজার হাজার কপি থরে থরে পড়ে ছিল। 


এসব কোম্পানিগুলো ক্যাসেট কেজি দরে বিক্রি করে সিডি উঠিয়েছে। যখন এমপিথ্রি ও মেমোরি কার্ডের আগ্রাসনে সিডিও শেষ, তখন সেইসব কোম্পানিগুলিও ধীরে ধীরে ব্যবসা পরিবর্তন করেছে। অনেক বড় কোম্পানিটিও মোবাইলের যন্ত্রপাতি বিক্রি করা শুরু করে। 


ক্যাসেট বন্ধ হয়ে গেলেও নতুন যে এলবামই বাজারে আসছিল, সেই এলবামই সিডি আকারেই আসছিল। ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে আমি যখন "আবার" এলবাম বের করি। তখনই আমি সিলভার ডিস্ক করতে পারিনি। তার ২ মাস আগেই বাংলাদেশের সর্বশেষ মেশিনটিই নষ্ট হয়ে যায়। 


এখন আমরা যে সিডি হাতে পাই তা কিন্তু ২০১০ সালের আগের। অডিও বাজারের অস্থিরতায় কোন কোম্পানি পুরাতন কোন এলবামের সিডি নতুন করে বের করেনি। 


বেশিরভাগ হিট অডিও ক্যাসেট বের হয়েছে ২০০০ সালের আগে। এর পরে একাধিক হিট এলবাম বের হলেও তার যতটা না ক্যাসেট বের হয়েছে, তার চেয়ে সিডি বের হয়েছে বেশি। সিডির ক্রেতা বেশি না হলেও দরিদ্র.কম কিংবা ১০০ টাকায় মেমোরি কার্ডে গান ভরাটাই ছিল সবচেয়ে বেশি।


সেইসময়কার কিছু দোকানি ২/৪ বছর আগেও বেঁচে যাওয়া কিছু সিডি ক্যাসেট রেখে দিয়েছিল। অধিক দামের আশায় কিন্তু রাখেনি, বিক্রি হয়নি বলেই রেখেছে। 


আমি আমার সংগ্রহ বাড়াতে নিজের পেশার খাতিরে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় যখনই গিয়েছি, সেসব জেলার সিডি ক্যাসেটের দোকান খুঁজে বের করেছি। দোকান না পেলেও কারা ব্যবসা করতেন তাদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছি। আমার আগ্রহ দেখে কেউ কেউ তখনই ৩৫ টাকার ক্যাসেট ১০০ টাকাতেও বিক্রি করেছে আমার কাছে। ২০১৬ সালে এলিফ্যান্ট রোডের এক দোকানির কাছ থেকে ২৬টা ক্যাসেট কিনেছিলাম ১৩ হাজার টাকা দিয়ে। 


এগুলো আসলে নেশা। সামর্থ্যেরও ব্যাপার। তবে সবাই যে আমার মতো বেশি দামে কিনেছে তা নয়। কেউ সম্পূর্ণ দোকানের সব ক্যাসেট নামমাত্র মূল্যে কিনেছে। আমি গড়ে কিনিনি। সবসময় বাছাই করেই কিনেছি। আমি খুলনাতে থাকি। ঢাকার সাথে খুলনার পার্থক্য অনেক। ঢাকার সব জিনিস খুলনাতে আসেনা।


আমি ক্যাসেট থেকে গান রেকর্ড করার উদ্দেশ্যেই বেশিরভাগ ক্যাসেট কিনেছি। নিজের জন্য ১/২ কপি রেখে অতিরিক্ত কপি বিক্রি করে দেই। অনেকে ২০২২ সালে এসেও ইন্টেক ক্যাসেট ও সিডি খোঁজেন। এখনো যেসব ক্যাসেট ইন্টেক থাকে, তা মূলত একেবারে শেষদিকের অবিক্রীত ক্যাসেট। এসব ক্যাসেটের কভার, প্লাস্টিক থেকে শুরু করে রেকর্ডিং কোয়ালিটি হয় জঘন্য। একটা এলবাম যত বেশি কপি হবে, শেষ দিকে তার সাউন্ড ততই খারাপ হবে। এর কারণ, কোম্পানিগুলো ১/২ লক্ষ কপির পরে আর মাস্টার ক্যাসেট ব্যবহার করেনি ক্যাসেট রেকর্ডিং এর জন্য। তাহলে ভাবুন, প্রথমদিকের বের হওয়া ক্যাসেট নিশ্চয়ই কোন দোকানি এখনো ইন্টেক অবস্থায় রাখেনি! আমি দোকানিদের ব্যবহৃত কপি ম্যানেজ করার চেষ্টা করতাম।


ক্যাসেট সিডি কিনে আনলে তা সাথে সাথে বিক্রি হয়না। বছরের পর পর বছর এসবের পিছনে টাকা লগ্নি করে রাখতে হয়, এর জন্য ঘরে বড় একটা জায়গা নষ্ট হয়। কিছু ক্যাসেট আছে যার ২য় কপিই পাওয়া কপালের ব্যাপার। 


এখন আপনি যদি সেইসব কপি এখনো ৩৫ টাকাতে কেনার আশা করেন, সেটা কতটা বাস্তবসম্মত? হ্যাঁ, আপনার সামর্থ্য নেই, তার জন্য কি করার আছে? আপনি বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া জিনিস সেই আমলের দামে কিনতে চাইবেন, সেটা একপ্রকার হাস্যকর ব্যাপার। 


তবে সবাই একই দামে কিনেনা এসব। আমার জানামতে ২ জন ব্যবসায়ী ৫ টাকা করেও ক্যাসেট কিনেছে কিছুদিন আগে। এটাই কপাল। 


অনেকেই বলে হ্যাঁ ভাই, আমারও অনেক ছিল। মা ফেলে দিয়েছে, কোথায় রেখেছি জানিনা ইত্যাদি ইত্যাদি। আসলেই আপনার যদি কলিজার টুকরো হতো এগুলো, তাহলে কি ফেলে দিতে পারতেন? আসল কথা হলো, আপনার সাথে তখন ক্যাসেটের গ্যাপ হয়েছিল অনেক। আপনি ভেবেছিলেন সব জিনিস সিডিতেই পাবো নয়তো ইউটিউবে পাবো। এতোসহজ নয়। ইউটিউবে সব থাকেনা। ইউটিউবে যারা অডিও গান শোনে, তারা গানের সাউন্ড কোয়ালিটি নিয়ে ভাবেনা। 


বাংলাদেশের ৯৫% শিল্পীর কাছে তাদের নিজেদেরই এলবামের ক্যাসেট বা সিডির কপি পাবেন না। 


বাংলাদেশের কোন ক্যাসেট কোম্পানির কাছে তাদের প্রকাশিত সব এলবামের স্যাম্পল কপিও পাবেন না। ২০১৬ সালে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় কোম্পানি আমাকে ডেকে বলেছিল "আপনার কাছে আমাদের অনেক এলবাম দেখেছি যা আমাদের কাছে নেই। যদি সেগুলো দিতেন???"


বাংলাদেশে ৯০ সালে একটা কনসার্টের টিকিটের দাম ছিল ১০০/২০০ টাকা। এখনো কিন্তু তাই। বাংলাদেশে গানের জিনিস ও গানের মানুষের দাম বাড়েনা! 

কোন মন্তব্য নেই:

রাত ৮টা ৩০ মিনিটের সংবাদ তারিখ ২৫-০৬-২০২৫

 রাত ৮টা ৩০ মিনিটের সংবাদ তারিখ ২৫-০৬-২০২৫ আজকের সংবাদ শিরোনাম বিশ্ব পরিবেশ দিবসের উদ্বোধন করলেন প্রধান উপদেষ্টা --- পরিবেশ রক্ষায় প্লাস্টি...