এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

সোমবার, ৬ মে, ২০২৪

মহেরা জমিদার বাড়ি।

 ঢাকা-টাঙ্গাইল সড়কের নাটিয়াপাড়া বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত এই জমিদারবাড়ি। টাঙ্গাইলে অবস্থিত বিভিন্ন জমিদার বাড়ির মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় হলো মহেরা জমিদার বাড়ি।


আজও চকচক করছে এ বাড়ির দেওয়াল। তখনকার কারিগরদের হাতের ছোঁয়া কি অপূর্ব ছিল তা এই জমিদার বাড়ির সৌন্দর্য ও নজরকাড়া কারুকার্য দেখলেই টের পাওয়া যায়। ১৮৯০ সালেরও আগে নির্মিত হয় এই জমিদার বাড়ি।


জানা যায়, স্পেনের করডোভা নগরের আদলে নির্মিত এই জমিদার বাড়ি। কালীচরণ সাহা ও আনন্দ সাহা নামে দুই ভাই ১ হাজার ১৭৪ শতাংশ জমির উপর এই বাড়ি নির্মাণ করেন।


জমিদার বাড়ির সবচেয়ে আকর্ষণীয় ও সুন্দর ভবনের নাম কালীচরণ লজ। ইংরেজি ইউ অক্ষরের আদলে করা ভবনটি রানিদের জন্য নির্মাণ করা হয়। তাই একে রানি ভবনও বলা হত এককালে।


জমিদার বাড়ির ভেতরে বাগান, শিশুপার্ক, বিভিন্ন আর্টিফিশিয়াল স্থাপনা আছে। এছাড়া পাখ-পাখালি, বাগান, পুকুর, বিল্ডিং সব মিলিয়ে স্বপ্নপুরীর মতো মনে হয় মহেরা জমিদার বাড়ি।


রাজকীয় এই বাড়িতে প্রবেশের আগেই চোখে পরে ‘বিশাখা সাগর’ নামের বিশাল এক দীঘির। জমিদার বাড়ির উল্টো দিকে আছে পুলিশ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের একাডেমিক ভবন।


মূল ফটকের পরেই দেখা যায় চৌধুরী লজের। পাশাপাশি আছে আরও দুটি লজ। এর পাশেই আছে আকর্ষণীয় এক ভবন। যার নাম আনন্দ লজ। তার পাশে আছে মহারাজ লজ। ভবনগুলো দেখতে প্রায় একই রকম।


দৃষ্টিনন্দন এই জমিদার বাড়ীর রয়েছে এক কলঙ্কিত স্মৃতি। ১৯৭১ সালের ১৪ই মে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ে পাকবাহিনী মহেড়া জমিদার বাড়ীতে হামলা করে এবং জমিদার বাড়ীর কূলবধূ যোগমায়া রায় চৌধুরীসহ পাঁচজন গ্রামবাসীকে চৌধুরী লজের মন্দিরের পেছনে একত্রে দাঁড় করিয়ে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করে। তন্মধ্যে স্থানীয় প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষক পন্ডিত বিমল কুমার সরকার, মনিন্দ্র কুমার চক্রবর্তী, অতুল চন্দ্র সাহা এবং নোয়াই বণিক ছিলেন। ইতিহাস কলঙ্কিত সেই রক্তের দাগ এখনো লেগে আছে মহেড়া জমিদার বাড়ীতে। যে দেশের জন্য, যে দেশের মানুষের জন্য মহেড়া জমিদার পরিবার নিজেদের শত প্রাচুর্য ভুলে এলাকার উন্নয়নে সর্বক্ষণ ব্যস্ত থাকতেন, সেই এলাকার রাজাকার আল-বদরদের প্রত্যক্ষ সহায়তায় পাকিস্থানী বাহিনীর এই চরম হত্যযজ্ঞে জমিদার পরিবার শুধু হতাশ হননি, শত বছরের সাজানো জমিদার বাড়ী আর কোটি টাকার সম্পদ ফেলে চরম ঘৃণা আর ক্ষোভ নিয়ে লৌহজং নদীর নৌপথে নৌকা যোগে চলে যান বাংলাদেশ ছেড়ে। অতঃপর স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বায়েজীদ সাহেবের নেতৃত্বে এক প্লাটুন মুক্তিবাহিনী জমিদার বাড়ীতে মুক্তিবাহিনীর ক্যাম্প স্থাপন করে।


১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭২ সালে পরিত্যাক্ত জমিদার বাড়ীটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে পুলিশ ট্রেনিং স্কুল হিসেবে প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। এ মহতী কাজটি করেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জনাব আব্দুল মান্নান। পুলিশের প্রশিক্ষণকে আধুনিক এবং যুগোপোযোগী করার লক্ষ্যে ১৯৯০ সালে পুলিশ ট্রেনিং স্কুলকে পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে উন্নীত করা হয়। আর পুলিশের ট্রেনিং সেন্টার স্থাপন হওয়ায় ট্রেনিং পরিচালনার জন্য জমিদার বাড়ীটির যথাযথ রক্ষনাবেক্ষণসহ নতুন নতুন স্থাপনা তৈরী করার কারনে পুরানো স্থাপত্য কলার অপরুপ এই জমিদার বাড়ীটির সৌন্দর্য্য শুধু অক্ষত থাকেনি বরং তার কলরব  আরো বৃদ্ধি পেয়েছে।

কোন মন্তব্য নেই:

রাত ৮টা ৩০ মিনিটের সংবাদ তারিখ ২৫-০৬-২০২৫

 রাত ৮টা ৩০ মিনিটের সংবাদ তারিখ ২৫-০৬-২০২৫ আজকের সংবাদ শিরোনাম বিশ্ব পরিবেশ দিবসের উদ্বোধন করলেন প্রধান উপদেষ্টা --- পরিবেশ রক্ষায় প্লাস্টি...