থমথমে শিকদার বাড়ি। কারো মুখে কোন কথা নেই। এ বাড়ির সবচেয়ে কনিষ্ঠ কন্যা চৈতালীর আজ বিয়ে ছিলো। কিন্ত বর আসেনি। আজ থেকে ছয়মাস আগে মোর্শেদ মির্জার ছেলে আশরাফ মির্জার সাথে চৈতালীর আংটি বদল হয়েছিল। এতদিন তারা দেখা সাহ্মাৎ করেছে। ভালো একটা বোঝােপড়াও হয়েছিলো তাদের মধ্যে। বিয়ে ভাঙার হলে আগেই বলতে পাড়তো, আজ এরকম নাটক করে মান সম্মান খাওয়ার মানে কি?? রাগে দপদপ করছে শিকদার বাড়ির মানুষ। একহাত দেখে নিবে বলে শাসাচ্ছে মির্জাদের।
সকলের সম্মুখে মাথা নত করে আছে মোর্শেদ মির্জা। হ্মমা চাওয়া ছাড়া তার আর কোন উপায় নেই। তবে শিকদার বাড়ির লোকজনের ভাব- গতিক ভাল লাগছে না। কি করে বসে বোঝা মুশকিল। হ্মুনাহ্মরেও তিনি ছেলের মনের কথা বুঝতে পারেন নি। গতকাল অবধি ছেলেকে দেখে মনে হয়েছে সে চৈতালী বিনে কিছু বুঝে না। সেই ছেলে যে পালিয়ে যাবে কে জানতো? একবার হাতের কাছে পাক ছেলেকে তার কি করা লাগে তার জানা আছে। তার আগে এখান থেকে বের হতে হবে। শিকদার দের মাথা এখন গরম। কি করতে কি করে ফেলে বলা যায় না। তবে চৈতালীর জন্য খারাপ লাগছে তার। কি সুন্দর মেয়েটা। নাটক সিনেমা বা উপন্যাসের মত তার যদি আর একটা ছেলে বা ভাতিজা থাকতো তাহলে চৈতালীকে আজ তার সাথে বিয়ে দিতো। আফসোস নেই। থাকার মধ্যে ঐ কুলাঙ্গার ছেলেই আছে।
বিছানায় স্তব্দ হয়ে বসে আছে চৈতালী। কিছুক্ষণ আগ পর্যন্ত সে ভেবেছিলো আশরাফ মজা করছে। ঠিক চলে আসবে। তবে কয়েক মিনিট আগে আসা আশরাফের মেসেজে পুরো দুনিয়া উল্টে গেছে চৈতালীর। মেসেজে আশরাফ লিখেছে-
চৈতালী
তুমি হয়তো এতহ্মন খবর পেয়ে গেছো আমি পালিয়েছি। বিশ্বাস করতে পারছো না তাই না?? আমি জানি আমি তোমাকে কষ্ট দিয়েছি। গত ছয়মাস তোমার সাথে নাটক করেছি। তোমাকে মিথ্যা সংসারের স্বপ্ন দেখিয়েছি। কিন্তু এছাড়া আমার আর কোন উপায় ছিলো না। আমি মিতু নামে একটা মেয়েকে ভালবাসি। দু বছর আগে আমরা গোপনে বিয়েও করছি। মিতু আমার ক্লাসমেইট। আমরা সেইম এজের বলতে পারো। বাবাকে মিতুর কথা বলেছিলাম। বাবার ধারণা মিতুর বয়স বেশী। ছেলের বউ হবে কমবয়সী। তাই ২৫ বছরের আমার জন্য ১৭ বছরের তোমাকে পছন্দ করলেন। মিতুর সাথে আমার সম্পর্ক কলেজ থেকে৷ এই আমার জন্য ও জীবনে হাজার টা বিয়ে ভেঙেছে। ওর মনে কিভাবে কষ্ট দিতাম বলো? পারলে আমাকে মাফ করে দিও। তোমার মন ভাঙ্গার কোন ইচ্ছা আমার ছিলো না। কিন্তু আমি ও নিরউপায় ছিলাম।
আশরাফ
চলবে...................🍁
লাল_পাঁড়ের_সাদা_শাড়ি
সূচনা_পর্ব
লেখকঃসামিরা_আক্তার
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন