এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

রবিবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২৫

কি ভয়াবহ কালচার গড়লাম আমরা চট্টলাবাসী

 কি ভয়াবহ কালচার গড়লাম আমরা চট্টলাবাসী!! 💔


পরিচয় না দিয়েই আমার জীবনের ঘটনা শেয়ার করছি। আমি একজন সরকারী ব্যাংকার। সিনিয়র অফিসার হিসাবে আছি আজ ৩.৫ বছর হলো। মধ্যবিত্ত ফ্যামিলি থেকে টিউসান কোচিং পড়িয়ে ২০২১ এ চাকরীতে জয়েন করি। খুব একটা সচ্ছ্বল কখনোই ছিলাম না কিন্তু কখনো ঋণগ্রস্তও ছিলাম না।


২০২৩ বিয়ে হলো। চেয়েছিলাম মন্দিরে বিয়ে করবো। কিন্তু সমাজের বাস্তবতা সেটা করতে দেয় নি। আমার নিজের পছন্দের বিয়ে ছিলো। দুই পরিবারের কেউই মন্দিরে বিয়ের পক্ষপাতী না, কারণ আমি বংশের সবার ছোটো আর সে সবার বড়। আমার বাবার শেষ কথা বিয়েতে সব আত্মীয় আর পরিচিতদের খাওয়াতেই হবে না হলে সে বিয়েতে যাবে না, তাঁর একটা সম্মান আছে না!!?


বিয়ে বৌভাত ফটোশ্যুট সব-ই করতে হলো। দুই পরিবারের মিলিয়ে ২৪ লাখ চলে গেলো। আমার নিজের গেলো ১১ আর তার বাবার গেলো ১৩ লাখ। 


একজন সরকারী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসারের কতোই বা বেতন। যারা এই লাইনে আছে তারাই জানেন। তো এই খরচ কোথা থেকে আসলো? ঋণ আর ক্রেডিট কার্ড থেকে।  বিয়ের পরে তো আরো খরচ শুরু৷ এই নিমন্ত্রণ ঐ নিমন্ত্রণ।  আর চট্টগ্রামের মানুষের তো আর অল্পতে মন ভরে না। কোথাও হাতে করে কম নিলেই হলো মেয়ের আত্মীয়ের বাসায় কম নিলে ছেলে নাথা (কিপটা) আর ছেলের আত্মীয়ের বাসায় নিলে বউ এর কথায় উঠাবসা শুরু এই কথা শুনে যেতে হয়।


বিয়েতে ফটোশুটেই গেলো ১ লাখ এর কাছাকাছি।  যদিও প্রিউইডিং কালার ফেস্ট করতে পারলাম না। কিন্তু বাগদত্তার কান্নাকাটিতে করতেই হলো। তার যুক্তি বিয়ে তো করবো একবার। সে যাই হোক বিয়েতে আবার দুই পক্ষ মিলে ৭০০+ অতিথি আর বৌভাতেও ঐরকম ৬০০+ অতিথি সৎকার করা হলো। 


এইসব কথা কেনো বলছি!!? 


এইবার কর্মের ফল নিয়ে বলি কেমন?


প্রথমে সংক্ষেপে আমার শ্বশুড় বাবার টা বলি। উনি কিছু টাকা জমিয়েছিলেন আর বাকি টাকা ধার। বর্তমানে সেই সেই ধারের টাকা শোধ দিতে দিতে তার ব্যবসার অবস্থা খারাপ। মূলধন শেষ কোনোরকমে দোকান নিয়ে আছে। বেশি আর বললাম না।


আমার কথায় আসার যাক। ৫ লাখ ঋণ আর ৩ লাখের ক্রেডিট কার্ড দিয়ে বিয়ে তো করে নিলাম। হাতে তো বেতনের বাইরে আর টাকা আসে না। নতুন বিয়ে দুইটা টিউসান করতাম বিয়ের পর সেই টিউসান গুলোও চলে গেলো। এই সময়ে যা হয় বৃদ্ধ বাবা মায়ের ঔষুধ নিজেদের খরচ সংসার খরচ করে আর কুলিয়ে উঠা সম্ভব হচ্ছে না। ক্রেডিট কার্ড একটা শোধ করতে আরেকটা নিতে লাগলাম। সেটা শোধ করতে আরেকটা এভাবে ক্রেডিট বার্নিং বাড়তে লাগলো। বাবা অসুস্থ হলো। অনেক টাকা দরকার বাবাকে বাঁচানোর জন্য। অনেক ট্রাই করলাম তাও বাবাটা থাকলো না চলে গেলো। 


শেষ কৃত্য শ্রাদ্ধ কর্ম করতে আরো ঋণ হলো। ব্যাংক ঋণ আরো বাড়লো। মানুষের থেকে ধার নিয়ে ঋণ আরো বাড়লো। 


বউ এখন অসুস্থ সামনে আরো খরচ।


অফিসের বাইরে ১টা টিউসান করি । সেটাও চলে যাবে এস এস সি দিচ্ছে। দুইটা কোচিং এ শুক্রশনিবার ক্লাস নি। ঋণের বোঝা কমে না। মাঝে মাঝে টিউসান না থাকলে ১০ কিমি দূরের অফিস থেকে হেঁটে আসি। আর ভাবি একটা সময় ছিলো যখন আমি টিউসান করাতাম আর কোচিং এ ক্লাস নিতাম তখন এখনের চেয়ে অনেকগুণ বেশি আয় করতাম নিজের ইচ্ছেমতো খেতাম, কিনতাম, চলতাম কিন্তু তখন কেউ সম্মান দিতো না বেকার বলতো। এখন সম্মান দেয় কথার মূল্য দেয় কিন্তু পকেট খালি, মাঝে মাঝে এমন দিন যায় সকালে দুইটা রুটি দুপুরে বাসা থেকে আনা ভাত সবজি আর রাতে দুইটা ভাত খেয়ে আমার দিন কেটে যায়। একটা সিংগারা কিনে খাওয়ার ইচ্ছে হলেও মা আর বৌ এর মুখের কথা ভেসে উঠে চোখে তাই আর কিনি না।


বৌ চাকরীর ট্রাই করেছিলো, ঢাকায় গিয়ে এক্সাম দেয় কিন্তু চাকরী হয় নি। বাসায় ২-৩ জন এসে পড়ে। পরিবর্তিত পরিস্থিতে সনাতনীদের আগের মতো চাকরী জুটবে নাকি সেই নিশ্চয়তা এখন আর নেই। আমি জানি আমার মতো এই অবস্থা অনেকেরই। আমি কোনো সাহায্যের জন্য এই পোস্ট করি নি। আমি শুধু চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে চেয়েছি বর্তমান সনাতনী সমাজের কঙ্কালসার অস্তিত্বকে। পকেটে টাকা না থাকলেও শুধু সামাজিক ভাবে হেয় না হওয়া ভয়ে আর আত্ম অহংকারকে সঙ্গী করে চলা এই আমরাই আমাদের আর্থিকভাবে শেষ করে দিচ্ছি।


আমিই মূলত সব থেকে বেশি দোষী, নিজের জিদ নিয়ে অটল হয়ে থাকলে সামাজিক অনুষ্ঠানের নামে এতো খরচ হতো না। 


ধনী সনাতনীরা ফটোশ্যুট প্রি ওয়েডিং পোস্ট ওয়েডিং করে তখন মধ্যবিত্তদেরও লোভ জাগে এগুলো করার। আর লোভে তো কী হয় আমরা তো জানি। ফল তো আমি পেয়ে যাচ্ছি। আমি জানি আমি উঠে দাঁড়াবো হয়তো ৫ বছর লাগবে বা আরো বেশি, কিন্তু এই সময়ে যে কষ্ট পাচ্ছি তা আমার আমাদের কর্মের-ই ফল। 


এই পোস্টের মূল উদ্দেশ্য তখনই সিদ্ধ হবে তখন-ই যখন বিয়ের নামে অযাচিত খরচ থেকে কোনো সনাতনী নিজেকে বাঁচাতে পারবে। 


আমাদের জন্য আশীর্বাদ করবেন যাতে আমি অতি শীঘ্র ঘুরে দাঁড়াতে পারি।


© শাস্ত্রপৃষ্ঠ গ্রুপ থেকে নেওয়া একজন দাদার পোস্ট

কোন মন্তব্য নেই:

বাত ব্যথা হলেই হোমিও ঔষধের  আবশ্যকতা হয়ে পরে,— গেঁটে বাত (Gout)। ---

 🎋বাত ব্যথা হলেই হোমিও ঔষধের  আবশ্যকতা হয়ে পরে,— গেঁটে বাত (Gout)। --- 🔖 Ledum Palustre 30 🌹 প্রধান লক্ষণ: ▪ গেঁটে বাতের ব্যথা, যা নিচ থে...