এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২৫

কুঁজো বুড়ির কথা উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী 

 কুঁজো বুড়ির কথা

উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী 


এক যে ছিল কুঁজো বুড়ি। সে লাঠি ভর দিয়ে কুঁজো হয়ে চলত, আর তার মাথাটা খালি ঠক-ঠক করে নড়ত। বুড়ির দুটো কুকুর ছিল। একটার নাম রঙ্গা, আর একটার নাম ভঙ্গা।


বুড়ি যাবে নাতনীর বাড়ি, তাই কুকুর দুটোকে বললে, 'তোরা যেন বাড়ি থাকিস, কোথাও চলে-টলে যাসনে।'


রঙ্গা-ভঙ্গা বললে, 'আচ্ছা।' তারপর বুড়ি লাঠি ভর দিয়ে, কুঁজো হয়ে যাচ্ছে, আর তার মাথাটা খালি ঠক-ঠক করে নড়ছে। এমনি করে সে খানিক দূর গেল।


তখন এক শিয়াল তাকে দেখতে পেয়ে বললে, 'ঐ রে, সেই কুঁজো বুড়ি যাচ্ছে। বুড়ি, তোকে তো খাব!'


বুড়ি বললে, 'রোস, আমি আগে নাতনীর বাড়ি থেকে মোটা হয়ে আসি, তারপর খাস। এখন খেলে তো শুধু হাড় আর চামড়া খাবি, আমার গায়ে কি আর কিছু আছে?'


শুনে শিয়াল বললে, 'আচ্ছা, তবে মোটা হয়ে আয়, তারপর খাব এখন।' বলে শিয়াল চলে গেল।


তারপর বুড়ি আবার লাঠি ভর দিয়ে কুঁজো হয়ে যাচ্ছে, আর তার মাথাটা ঠক-ঠক করে নড়ছে। এমনি করে আরো খানিক দূর গেল।


তখন এক বাঘ তাকে দেখতে পেয়ে বললে, 'ঐ রে সেই কুঁজো বুড়ি যাচ্ছে। বুড়ি তোকে তো খাব!'


বুড়ি বললে, 'রোস, আমি আগে নাতনীর বাড়ি থেকে মোটা হয়ে আসি, তারপর খাস। এখন খেলে তো শুধু হাড় আর চামড়া খাবি, আমার গায়ে কি আর কিছু আছে?'


শুনে বাঘ বললে, 'আচ্ছা, তবে মোটা হয়ে আয়, তারপর খাব এখন।' বলে বাঘ চলে গেল।


তারপর বুড়ি আবার লাঠি ভর দিয়ে কুঁজো হয়ে যাচ্ছে, আর তার মাথাটা ঠক-ঠক করে নড়ছে। এমনি করে সে আরো খানিক দূর গেল।


তখন এক ভাল্লুক তাকে দেখতে পেয়ে বললে, 'ঐ রে, সেই কুঁজো বুড়ি যাচ্ছে। বুড়ি তোকে তো খাব!'


বুড়ি বললে, 'রোস, আমি আগে নাতনীর বাড়ি থেকে মোটা হয়ে আসি, তারপর খাস। এখন খেলে তো শুধু হাড় আর চামড়া খাবি, আমার গায়ে কি আর কিছু আছে?'


শুনে ভাল্লুক বললে, আচ্ছা, তবে মোটা হয়ে আয়, তারপর খাব এখন।' এই বলে ভাল্লুক চলে গেল। বুড়িও আর খানিক দূর গিয়েই তার নাতনীর বাড়ি পৌঁছল। সেখানে দই আর ক্ষীর খেয়ে-খেয়ে এমনি মোটা হল যে, কী বলব! আর একটু মোটা হলেই সে ফেটে যেত।


তাই সে তার নাতনীকে বললে, 'ওগো নাতনী, আমি তো বাড়ি চললুম। এবারে আর আমি চলতে পারব না। আমাকে গড়িয়ে যেতে হবে। আবার পথে ভাল্লুক, বাঘ আর শিয়াল হাঁ করে বসে আছে। আমাকে দেখতে পেলেই ধরে খাবে। এখন বল দেখি কী করি?'


নাতনী বললে, 'ভয় কী দিদিমা? তোমাকে এই লাউয়ের খোলটার ভিতরে পুরে দেব। তাহলে বাঘ ভাল্লুক বুঝতেও পারবে না, তোমাকে খেতেও পারবে না।'


বলে, সে বুড়িকে একটা লাউয়ের খোলার ভিতর পুরে, তার খাবার জন্যে চিড়ে আর তেঁতুল সঙ্গে দিয়ে, হেঁইয়ো বলে লাউয়ে ধাক্কা দিলে, আর লাউ গাড়ির মতন গড়গড়িয়ে চলল।


লাউ চলেছে আর বুড়ি তার ভিতর থেকে বলছে—

লাউ গড়-গড়, লাউ গড়-গড়, 

খাই চিড়ে আর তেঁতুল, 

বীচি ফেলি টুল্-টুল। 

বুড়ি গেল ঢের দূর!


পথের মাঝখানে সেই ভাল্লুক হাঁ করে বসে আছে, বুড়িকে খাবে বলে। সে বুড়ি-টুড়ি কিছু দেখতে পেলে না, খালি দেখলে একটা লাউ গড়িয়ে যাচ্ছে। লাউটাকে নেড়ে-চেড়ে দেখলে বুড়িও নয়, খাবার জিনিসও নয়। আর তার ভিতর থেকে কে যেন বলছে, 'বুড়ি গেল ঢের দূর!' শুনে সে ভাবলে, বুড়ি চলে গিয়েছে। তখন সে ঘোঁৎ করে তাতে দিলে এক ধাক্কা আর সেটা গাড়ির মতন গড়গড়িয়ে চলল।

লাউ চলছে আর বুড়ি তার ভিতর থেকে বলছে—

লাউ গড়-গড়, লাউ গড়-গড়, 

খাই চিড়ে আর তেঁতুল, 

বীচি ফেলি টুল-টুল।

বুড়ি গেল ঢের দূর!


আবার খানিক দূরে বাঘ বসে আছে বুড়িকে খাবে বলে। সে বুড়িকে দেখতে পেলে না, খালি দেখলে একটা লাউ গড়িয়ে যাচ্ছে। সেটাকে নেড়ে-চেড়ে দেখলে, বুড়িও নয়, খাবার জিনিসও নয়। আর তার ভিতর থেকে কে যেন বলছে, 'বুড়ি গেল ঢের দূর।' শুনে সে ভাবলে বুড়ি চলে গিয়েছে। তখন সে ঘোঁৎ করে তাতে দিলে এক ধাক্কা, আর সেটা গাড়ির মতন গড়গড়িয়ে চলল।

লাউ চলছে আর বুড়ি তার ভিতর থেকে বলছে—


লাউ গড়-গড়, লাউ গড়-গড়, 

খাই চিড়ে আর তেঁতুল, 

বীচি ফেলি টুল্-টুল্।

বুড়ি গেল ঢের দূর!


খানিক দূরে সেই শিয়াল পথের মাঝখানে বসে আছে। সে লাউ দেখে বললে, হুঁ! লাউ কিনা আবার কথা বলে। ওর ভিতরে কী আছে দেখতে হবে।' তখন সে হতভাগা লাথি মেরে লাউটা ভেঙেই বলে কিনা, 'বুড়ি তোকে তো খাব!'


বুড়ি বললে, 'খাবি বইকি! নইলে এসেছি কি করতে? তা, আগে দুটো গান শুনবিনে?' শিয়াল বললে, 'হ্যাঁ, দুটো গান হলে মন্দ হয় না। আমিও একটু-আধটু গাইতে পারি।'


বুড়ি বললে, 'তবে ভালোই হল। চল ঐ ঢিপিটায় উঠে গাইব এখন।' বলে বুড়ি সেই ঢিপির উপরে উঠে সুর ধরে চেঁচিয়ে বললে, 'আয়, আয়, রঙ্গা-ভঙ্গা, তু-উ-উ-উ-উ!'


অমনি বুড়ির দুই কুকুর ছুটে এস, একটা ধরলে শিয়ালের ঘাড় আর একটায় ধরলে তার কোমর। ধরে টান কি টান। শিয়ালের ঘাড় ভেঙে গেল, কোমর ভেঙে গেল, জিভ বেরিয়ে গেল, প্রাণ বেরিয়ে গেল, তবু তারা টানছেই, টানছেই, খালি টানছে।

কোন মন্তব্য নেই:

সোনা পাতার গুণ/ সোনা পাতার উপকারিতাকবিরাজ সঞ্জয় দত্ত  আয়ুর্বেদিক এন্ড হারবাল চিকিৎসক

 🥬সোনা পাতার গুণ/ সোনা পাতার উপকারিতা 🌴 🌲🌲🌲🌲🌲🌲🌲🌲🌲🌲🌲🌲🌲 হাদিসে সোনাপাতা সম্পর্কে বলা হয়েছে আসমা বিনেত উমাইস (রা.) থেকে বর্ণিত।...