এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

শুক্রবার, ২ মে, ২০২৫

লালমনিরহাটের এক অজপাড়াগাঁয়ে ছিল পুরনো এক ডিসপেনসারি।

 লালমনিরহাটের এক অজপাড়াগাঁয়ে ছিল পুরনো এক ডিসপেনসারি। বহু বছর আগে সেখানে রফিক সাহেব নামে এক ডাক্তারবাবু কাজ করতেন। তিনি ছিলেন অত্যন্ত দয়ালু আর রোগীদের জন্য নিজের জীবন বাজি রাখতেও রাজি ছিলেন। কিন্তু এক ভয়াবহ কলেরার মহামারীর সময় রোগীদের সেবা করতে গিয়ে নিজেই সেই রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।

তারপর থেকে গ্রামের মানুষজন ঐ ডিসপেনসারিতে আর যেত না। তাদের বিশ্বাস ছিল, ডাক্তার রফিক সাহেবের আত্মা ওখানে আজও ঘুরে বেড়ায়। রাতের অন্ধকারে নাকি শোনা যেত তাঁর ক্লান্ত পায়ের শব্দ, আর ভেসে আসত চাপা কাশির আওয়াজ। কেউ কেউ তো আবছা আলোয় তাঁর ছায়া দেখতেও পেয়েছে বলে দাবি করত, হাতে পুরোনো দিনের একটা ব্রিফকেস।

একদিন গভীর রাতে, গ্রামের এক বৃদ্ধা রহিমার হঠাৎ বুকে অসহ্য যন্ত্রণা শুরু হলো। গ্রামে আর কোনো ডাক্তার ছিল না, আর বর্ষার রাতে শহরে যাওয়াও ছিল অসম্ভব। বাধ্য হয়ে রহিমার ছেলে কাশেম সেই পুরনো ডিসপেনসারির দিকে রওনা হলো, মনে ভয় আর desperation দুটোই কাজ করছিল।

ডিসপেনসারির দরজা ছিল বহু বছর ধরে বন্ধ, মরচে ধরে গিয়েছিল কড়া। কাশেম ধাক্কা দিতেই ক্যাঁচ করে দরজা খুলে গেল। ভেতরে ঘুটঘুটে অন্ধকার আর স্যাঁতস্যাঁতে গন্ধ। কাশেম টর্চলাইট জ্বালালো। ভাঙা চেয়ার, ধুলো জমা টেবিল, আর ওষুধের খালি শিশি-বোতল ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল। হঠাৎ কাশেমের মনে হলো যেন কেউ তার পেছনে দাঁড়িয়ে আছে।

সে চমকে ঘুরে তাকালো, কিন্তু অন্ধকারে কিছুই দেখতে পেল না। তবে একটা ঠান্ডা বাতাস তার গা ছুঁয়ে গেল, আর সেই চাপা কাশির শব্দটা যেন আরও কাছে ভেসে এলো। কাশেমের গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেল। সে কোনোমতে বললো, "কে... কে ওখানে?"

সঙ্গে সঙ্গে আবছা আলোয় কাশেম দেখলো, দরজার কাছে দাঁড়িয়ে আছেন এক ব্যক্তি। পুরোনো দিনের ঢিলেঢালা কোট পরা, হাতে একটা মলিন ব্রিফকেস। মুখটা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে না, তবে মনে হলো যেন ক্লান্ত আর বিষণ্ণ।

আগন্তুক মৃদু স্বরে বললেন, "কী হয়েছে? কার শরীর খারাপ?"

কাশেম ভয়ে ভয়ে সব কথা খুলে বললো। শুনে ডাক্তারবেশী সেই লোকটি বললেন, "চলো আমার সাথে।"

ভেতরের একটা পুরনো ঘরে ডাক্তার তাকে নিয়ে গেলেন। সেখানে একটা ভাঙা টেবিলের ওপর কিছু পুরোনো দিনের যন্ত্রপাতি আর ওষুধের শিশি রাখা ছিল। ডাক্তার সেই আলো আঁধারিতেই রহিমার রোগের লক্ষণ শুনলেন, তারপর ব্রিফকেস থেকে একটা পুরোনো শিশি বের করে কিছু ওষুধ দিলেন।

কাশেম অবাক হয়ে বললো, "এটা কী ওষুধ?"

ডাক্তার বললেন, "বিশ্বাস রাখো। এতেই কাজ হবে।"

কাশেম সেই ওষুধ নিয়ে বাড়ি ফিরে এলো এবং তার মাকে খাওয়ালো। আশ্চর্য ব্যাপার হলো, কিছুক্ষণ পরেই রহিমার যন্ত্রণা কমতে শুরু করলো, আর সকালের দিকে সে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠলো।

পরের দিন কাশেম আবার সেই ডিসপেনসারিতে গেল ডাক্তার সাহেবকে ধন্যবাদ জানাতে। কিন্তু গিয়ে দেখলো, দরজা যেমন বন্ধ ছিল তেমনই আছে, বাইরে থেকে বোঝার উপায় নেই যে রাতে কেউ ভেতরে ছিল। ভেতরে ঢুকে কাশেম সেই ঘরটা খুঁজে বের করলো, কিন্তু সেখানে কোনো যন্ত্রপাতি বা ওষুধের শিশি কিছুই দেখতে পেল না। শুধু ধুলো আর মাকড়সার জাল।

গ্রামের পুরনো লোকেরা শুনে বললো, রাতে কাশেম যাকে দেখেছিল, তিনি আর কেউ নন, সেই ভুতুরে ডাক্তার রফিক সাহেব। আজও তিনি রোগীদের কষ্ট সহ্য করতে পারেন না, তাই রাতের অন্ধকারে এসে সেবা করে যান। সেই ঘটনার পর থেকে গ্রামের মানুষজনের ভয় কিছুটা কমেছিল। তারা বিশ্বাস করতে শুরু করেছিল, ডাক্তার রফিক সাহেবের আত্মা হয়তো এখনও ঐ ডিসপেনসারিতেই আছে, নীরবে মানুষের সেবা করে চলেছে। তবে রাতের অন্ধকারে একা সেই পুরনো ডিসপেনসারির কাছে ঘেঁষতে আজও তাদের গা ছমছম করে।


collect from bhoutik duniya


NOTE : THIS POST IS COPYRIGHT PROTECTED ©️

Don’t try to copy without permission.. 

otherwise Facebook community can take actions.

কোন মন্তব্য নেই:

বাত ব্যথা হলেই হোমিও ঔষধের  আবশ্যকতা হয়ে পরে,— গেঁটে বাত (Gout)। ---

 🎋বাত ব্যথা হলেই হোমিও ঔষধের  আবশ্যকতা হয়ে পরে,— গেঁটে বাত (Gout)। --- 🔖 Ledum Palustre 30 🌹 প্রধান লক্ষণ: ▪ গেঁটে বাতের ব্যথা, যা নিচ থে...