একজন হোমিওপ্যাথি ডাক্তারের এ বিষয়গুলো জানতেই হবে:
১। হোমিওপ্যাথি বিরোধী:
"হোমিওপ্যাথিক ওষুধে তো কার্যকর কোনো রাসায়নিক উপাদান থাকে না! এত পাতলা করে দেওয়া হয় যে কিছুই থাকে না। কিভাবে তা কাজ করে?"
হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার:
আপনি ঠিকই বলেছেন, হোমিওপ্যাথিক ওষুধ অনেক উচ্চমাত্রায় ডাইলিউট করা হয়। কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে—এই ওষুধে ন্যানোপর্যায়ে মূল পদার্থের কণিকা (nanoparticles) থেকে যায় যা কোষে গিয়ে কাজ করে।
২০১০ সালে IIT Bombay-এর গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, এসব কণিকা সক্রিয় থাকে এবং জৈবিক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। কাজেই, এটি কেবল জল নয়, বরং তথ্যবাহক (information carrier) হিসেবে কাজ করে।
২। হোমিওপ্যাথি বিরোধী:
"হোমিওপ্যাথি আসলে প্লাসেবো—মনস্তাত্ত্বিক ভরসা ছাড়া আর কিছু নয়।"
হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার:
এই বক্তব্য সঠিক নয়। যদি প্লাসেবো হতো, তাহলে শিশুরা, পশুপাখি কিংবা অচেতন রোগীদের ক্ষেত্রে ফলাফল কীভাবে আসে?
Arnica, Belladonna, Aconite ইত্যাদি ওষুধ ব্যবহারে এমন রোগীদের মধ্যে দ্রুত আরোগ্যের প্রমাণ পাওয়া গেছে, যেখানে কোনো মানসিক প্রত্যাশা ছিল না।
এছাড়া বহু ডাবল-ব্লাইন্ড ট্রায়াল এবং মেটা-অ্যানালাইসিসেও হোমিওপ্যাথির কার্যকারিতা প্রমাণিত হয়েছে।
৩। হোমিওপ্যাথি বিরোধী:
"তবে তো গবেষণা কম। প্রমাণ তো বেশি নেই।"
হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার:
বর্তমানে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে হাজার হাজার হোমিওপ্যাথিক গবেষণা হয়েছে ও হচ্ছে।
উদাহরণস্বরূপ, Swiss Health Technology Assessment (2011) রিপোর্টে হোমিওপ্যাথিকে নিরাপদ, কার্যকর এবং ব্যয়সাশ্রয়ী চিকিৎসা পদ্ধতি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
ভারত, জার্মানি, ব্রাজিল, ইউকে সহ বহু দেশে সরকারিভাবে হোমিওপ্যাথিক হাসপাতাল ও গবেষণা কেন্দ্র রয়েছে।
৪। হোমিওপ্যাথি বিরোধী :
"হোমিওপ্যাথি ধীরে কাজ করে—তীব্র বা জটিল রোগে তো সময় নেই!"
হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার:
এটি একটি ভুল ধারণা। হোমিওপ্যাথি ধীরে কাজ করে ক্রনিক বা পুরনো রোগে, কারণ রোগ অনেক গভীরে যায়। আর এসব রোগ হোমিওপ্যাথিতে নির্মূল হয় কিন্তু এ্যালোপ্যাথিতে আরোগ্য হয়না শুধু উপশম হয় মাত্র। তাহলে কাজ দ্রুত কোন চিকিৎসা করলো? নিশ্চিয় হোমিওপ্যাথি। তাছাড়া একিউট রোগে (যেমন জ্বর, সর্দি, ব্যথা, ইনফ্লুয়েঞ্জা, খাদ্যে বিষক্রিয়া) হোমিওপ্যাথিক ওষুধ দ্রুত ফল দেয়।
যেমন: Colocynthis দিয়ে পেট ব্যথা ১০ মিনিটের মধ্যে উপশম হতে দেখা গেছে। Pantago দিয়ে কানের ব্যাথা ২মিনিটে আরোগ্য হতে দেখা গেছে।
৫। হোমিওপ্যাথি বিরোধী :
"তুমি বললে, এক রোগে একাধিক ব্যক্তির ভিন্ন-ভিন্ন ওষুধ হতে পারে। এতে তো চিকিৎসা পদ্ধতির নিশ্চয়তা নেই!"
হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার:
বরং এখানেই হোমিওপ্যাথির বৈজ্ঞানিক সৌন্দর্য। এটি Individualization-এর উপর ভিত্তি করে, যেটা আধুনিক Personalized Medicine-এর ধারণার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ।
উদাহরণস্বরূপ, তিনজন ডিপ্রেশনের রোগীকে তিনটি ভিন্ন ওষুধ (যেমন: Ignatia, Natrum Mur, Aurum Met) দেওয়া হতে পারে, কারণ তাদের মানসিক অবস্থা ও অভিজ্ঞতা আলাদা।
৫। হোমিওপ্যাথি বিরোধী:
"তবে হোমিওপ্যাথির নিজস্ব প্রতিরোধমূলক শক্তি তৈরির কোনো প্রমাণ আছে?"
হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার:
অবশ্যই। হোমিওপ্যাথিতে Nosodes নামক ওষুধ থাকে, যেগুলো রোগের জীবাণু থেকেই তৈরি—যেমন Tuberculinum, Psorinum, Influenzinum।
এটি অনেকটা ভ্যাকসিনের মতোই: জীবাণুকে ক্ষীণমাত্রায় প্রয়োগ করে শরীরের নিজস্ব প্রতিরোধ ক্ষমতা সক্রিয় করা হয়।
তফাৎ শুধু এতটুকু, হোমিওপ্যাথিতে এটা করা হয় potentization পদ্ধতিতে, ইনজেকশন বা কৃত্রিম রাসায়নিক নয়।
মোটকথা:
হোমিওপ্যাথি আধুনিক বিজ্ঞানের আলোয় তার যথাযথ যুক্তি দাঁড় করাচ্ছে এবং বিজ্ঞান যত উন্নত হবে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসাই, প্রকৃত চিকিৎসা তার প্রমাণিত হবে। সত্যের পিছনে সর্বযুগে পুঁজিবাদীরা ষড়যন্ত্র করছে করবেই, তবে সত্য বিজয়ী হবেই হবে ইনশাআল্লাহ! ✌️💪
আপনাদেরকে কেউ কি এ ধরনের বিভ্রান্তিমূলক যুক্তি দেয়, তাহলে কমেন্ট করে জানান @সেরা ফ্যান।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন