এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

রবিবার, ২৬ মে, ২০২৪

নিজ  পারিবারিক চাহিদায় স্বয়ংসম্পূর্ন আনতে যেভাবে পরিকল্পনা করা যেতে পারেঃ

 নিজ পারিবারিক চাহিদায় স্বয়ংসম্পূর্ন আনতে যেভাবে পরিকল্পনা করা যেতে পারেঃ


*খাদ্য চাহিদাঃ


১)২টা গাভী।

২)৬টা মুরগী ১টা মোরগা।

৩)২বিঘা জমি ধান চাষ।

৪)একটা পুকুর।

৫)সবজি আঙিনা চাষ।


*বস্ত্র চাহিদা(উৎপাদন)ঃ


১)সেলাই ম্যাশিন(ম্যানোয়াল)।


*আদর্শ বাসস্থানঃ


১)বাড়ি সীমানা বেড়া/প্রাচীর দিয়ে ঘিরে দেয়া।

২)বাড়িতে উঠান রাখা।

৩)বাড়ির আঙ্গিনায় হালকা পাঁচ মিশালী সবজি চাষের ব্যাবস্থা করন।

৪)বাড়িতে টিউবয়েল স্থাপন/কুপ/হাউজ স্থাপন।

৫)সৌর বিদ্যুৎ শক্তি ও বায়োগ্যাস ব্যাবহার করা যেতে পারে।


*চিকিৎসাঃ


১)ফাস্ট এইড বক্স।

২)ঔষধি গাছ রোপন ও প্রয়োগ।

৩)নানা ঔষধি বই ও ম্যাটারিয়াল সংরক্ষন।

৪)কমন কিছু অসুস্থতা, যেমনঃ জ্বর, সর্দিকাশি,হাত,পা,বুক,মাথা ও শরীর ব্যাথা,কাটাছেড়া,চর্ম,চুলকানি এবং ঘাঁ ও ফোঁড়া ও গোটা ইত্যাদি বিষয়ের প্রাকৃতিক শুশ্রূষাময় প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতি জেনে রাখা।


*শিক্ষাঃ


১)পারিবারিক লাইব্রেরী।

২)পারিবারিক হালাকা পয়েন্ট(যেখানে পারিবারিক ভাবে ইলম অর্জনের বা ইলম শেয়ারের ব্যাবস্থা থাকবে)

৩)মাদ্রাসা নির্মান।(সামাজিক ভাবে কয়েকটি পরিবার মিলে)।

সংগৃহীত

স্যারের মেসেজ ২৫/০৫/২০২৪ শনিবার সারাদিন

 স্যারের মেসেজ ২৫/০৫/২০২৪ শনিবার সারাদিন 

যারা টি-শার্টের ছবি দেননি তারা ছবি দেন,,,,,,,
যারা সকাল নয়টার ভিতরে মার্কেট উপস্থিত হবেন না তাদেরকে লিভ অ্যাপ্লিকেশন করে দেবেন সুপারভাইজারদেরকে বিশেষ ভাবে জানানো হলো,,,,,,,,,,,
৯:১০ এর ভিতরে যাদের নোট থাকবে না এবং নির্দিষ্ট রুটে পৌঁছাবে না তাদেরকে বিশেষভাবে লিভ এপ্লিকেশন দিয়ে দিবেন ওইদিনের জন্য,,,,,,
৯:১০ এর ভিতরে যাদের নোট থাকবে না এবং নির্দিষ্ট রুটে পৌঁছাবে না তাদেরকে বিশেষভাবে লিভ এপ্লিকেশন দিয়ে দিবেন ওইদিনের জন্য,,,,,,

একই কাজ যদি একই মাসে দুইয়ের অধিক থাকে তৃতীয় দিন ফুল ডে এপসেন্ট করে দিবেন।,,,,,,,,
রোড প্লান অনুযায়ী লোকেশন চেক করবেন লোকেশনে পাওয়া না গেলে তার বিরুদ্ধে অফিশিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণ করেন,,,,,,
উপরের নির্দেশনা শুধু এক মাস বা একদিনের জন্য নয় যতদিন চাকরি করবেন ততদিন নির্দেশনা মেনে চলতে হবে যে মেনে চলবেন না ওকে কোম্পানি নিয়ম অনুযায়ী শাস্তির আওতায় আসতে হবে।।।,,,,,,
সকলের অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে আগামীকাল রবিবার কোম্পানি তরফ হইতে আপনাদের কাছে যেসব লজিস্টিক আছে সেগুলো কি অবস্থায় আছে তার ছবি আমাদের বিএনপি গ্রুপে প্রদান করবেন কোম্পানির তরফ থেকে যা কিছু আছে মোটরসাইকেল ব্যাগ, কাটার ,কাঁচি ,টেপ, ইত্যাদি।,,,,,,,,
যারা sales  করতে পারবেন না তারা প্রতি  শনিবারে ৩০ টা করে মেজারমেন্ট সিট জমা দিবেন...!

রাসেল স্যারের নির্দেশ,,,,,,,,,,,

@⁨PE FAHIM FUHAD D45005⁩ @⁨PE নাজমুল ❌ ভাই ঢাকা গাজীপুর D25729⁩ @⁨~Shohag Hossain⁩...

পরের শনিবারে আপনারা ৩০ টা মেজারমেন্ট জমা দিবেন,,,,,,,,,
RFL SWR, cPVC Pro & Sulov:

Area SWR CPVC Sulov
Dhaka (Motijhil, Jatrabari) 50k
Dhaka (Mirpur ,Mohammadpur ) 50k
Bogra 50k,,,,,,,,
এস ডাবলু আর সিপিভিসি প্রো সুলভ পাইপ ।।যাত্রাবাড়ী মতিঝিল মিরপুর মোহাম্মদপুর ।।বগুড়া ।।এইসব এলাকায় বেশি বেশি মেজারমেন্ট নিতে হবে। প্রতিটা মেজারমেন্টে তিনটে প্রোডাক্টটি দশটা দশটা দশটা মোট ৩০ টা থাকবে।,,,,,,,,


শনিবার, ২৫ মে, ২০২৪

সকাল ৭ টার  সংবাদ।  তারিখ: ২৫-০৫-২০২৪ খ্রি:

 সকাল ৭ টার  সংবাদ। 

তারিখ: ২৫-০৫-২০২৪ খ্রি:।


আজকের শিরোনাম:


রাজধানীতে বঙ্গবাজার নগর পাইকারি বিপনিবিতানসহ ৪টি বড় প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন আজ প্রধানমন্ত্রী।


সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যা মামলায় ৩ আসামির ৮ দিনের রিমান্ড।


অপরাধী যত প্রভাবশালীই হোক শাস্তি পেতেই হবে - বললেন ওবায়দুল কাদের।


আওয়ামী লীগ সরকার সুষম ও টেকসই উন্নয়নে বিশ্বাস করে - তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর মন্তব্য।


নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে আজ পালিত হচ্ছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫তম জন্মজয়ন্তী।


রাফাহতে অবিলম্বে সামরিক হামলা বন্ধ করতে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের রায় মানার জন্য ইসরাইলের প্রতি জাতিসংঘ মহাসচিবের আহ্বান।


টেক্সাসের প্রেইরি ভিউতে আজ রাতে বাংলাদেশ ও স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে।

শুক্রবার, ২৪ মে, ২০২৪

সকাল ৭ টার  সংবাদ।  তারিখ: ২৪-০৫-২০২৪ খ্রি:।

 সকাল ৭ টার  সংবাদ। 

তারিখ: ২৪-০৫-২০২৪ খ্রি:।


আজকের শিরোনাম:


যারা জনগণের ক্ষতি করবে তাদের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না - ১৪ দলের সভায় বললেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।


এমপি আনোয়ারুল আজিমের হত্যাকারীদের প্রায় সনাক্ত করে ফেলেছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা - জানালেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।


পেশাদার সাংবাদিকতা চর্চার সুস্থ পরিবেশ তৈরিতে কাজ করছে সরকার - বললেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী।


জাতীয় অর্থনীতিতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০ শিল্প প্রতিষ্ঠানকে ‘রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার-২০২১’ প্রদান।


নিজ শহর মাশহাদে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে দাফন।


টেক্সাসে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ম্যাচে বাংলাদেশকে ৬ রানে হারিয়েছে স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্র।

শর্করা— মানুষের ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান

 শর্করা— মানুষের ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। আলু, ধান, ভুট্টা, গম, চিনি— এমন সব জনপ্রিয় তারকাদের আড়ালে অনেকটা বিস্মৃতপ্রায় এক আদি শর্করার উৎস। মানকচু। বনে–জঙ্গলে বেড়ে ওঠা মানকচু দেখেই আমরা অভ্যস্ত। তবে এর চাষের নিদর্শন পাওয়া গেছে এশিয়ার অনেক প্রাচীন জনগোষ্ঠীর মধ্যে। 


পলিনেশিয়া ও অস্ট্রোনেশীয়ার আদি কৃষিতে শর্করার উৎস হিসাবে যে চারটি প্রধান কচুর প্রজাতি চাষ করা হতো তার মধ্যে মানকচু একটি। এখনও ওশেনিয়া, মাদাগাস্কার, তাইওয়ানের অনেক এলাকায় মানকচুর চাষ হয়। এবং সেসব এলাকায় বিয়ে থেকে শুরু করে সামাজিক উৎসব এমনকি ধর্মীয় উৎসবেও মানকচু থেকে তৈরি করা খাবারের চল রয়েছে। 


আজ বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত ভাত বা ধান যেভাবে আমরা দেখি এই পর্যায়ে আসতে বুনো ধানকে নিয়ে অনেক সাধনা করতে হয়েছে। বুনো ধানকে পোষ মানানোর এই কঠিন শ্রম ও সময়সাধ্য প্রক্রিয়া বলে দেয়, শর্করার জন্য দানা শস্যের আগে কন্দ জাতীয় শস্য মানুষের খাদ্য তালিকায় স্থান করে নিয়েছিল। কারণ তার চাষ প্রক্রিয়া সহজ। আবার চাষ না করলেও অনুকুল পরিবেশে আপনা আপনিই জন্মায় এসব উদ্ভিদ। 


খনার বচনে আছে— ‘ওলে কুটি মানে ছাই, এইরূপে কৃষি করগে ভাই’। খনার বিস্তৃতি অনুযায়ী ধারণা করা যায় শ্রীলঙ্কা, বাংলা, আসাম, উড়িষ্যা এসব অঞ্চলেও মানকচুর চাষের প্রচলন ছিল। তবে খাদ্য তালিকায় কচু বা মানকচুর নিচু জাতে নেমে আসার কারণটা বোধহয় উপমহাদেশে একের পর এক দুর্ভিক্ষ। যখন শোষকের গ্রাসে হারানো চাষের ফসলের নাগাল না পেয়ে মানুষকে প্রাণ ধারণ করতে হয়েছিল আপনজালা এসব উদ্ভিজ্জ খাদ্যের ওপর। পুর্বজদের অভিজ্ঞতার সেই বিতৃষ্ণা আমাদের স্মৃতিতেও প্রবাহমান। তাই শাকপাতা–কচুঘেঁচু এত বৈচিত্রময় সম্ভার ও গুণাগুণ নিয়েও এদেশে আভিজাত্য বিরোধী বলে বিবেচিত হয়। অতিথি আপ্যায়ন কিংবা উৎসবের খাবার হিসেবে এদের ব্যবহার সাধারণত দেখা যায় না। 


বুনো মানকচু চাষের প্রাচীন নথি পাওয়া গেছে ইন্দোচীন অঞ্চলে, খ্রিস্টের জন্মেরও ১৩০০ বছর আগে। ফিলিপাইনে কচু জাতীয় ফসলকে বলা হতো ‘বিমা ফসল’। ঝড়, বন্যা, খরা তথা প্রাকৃতিক দুর্যোগ কালীন শর্করার চাহিদা মেটাতো বলেই এমন নাম। বাংলাদেশেও কৃষি জমির আইলে মানকচুর পাতা বা গাছ পুঁতে দিয়ে ভূমি পূজা করার চল আছে। প্রার্থনা করা হয় ফসল যেন মানকচুর মতো পুষ্ট ও বড়সর হয় আর ঝড়–জলেও টিকে থেকে খাদ্য জোগায়। 


পুর্ণিমার রাতে ভরা জোয়ারের সময় বীজ বুনলে মানকচুর ফলন ভালো হয় বলে বিশ্বাস করেন অনেক কৃষক। আবার বীজ রোপনের সময় কৃষক যদি নিজের শরীর না চুলকান তাহলে সেই কচু খেলে গলাও চুলকাবে না এমন ধারনাও রয়েছে অনেক আদিবাসী গোষ্ঠীর মধ্যে। ঋতুস্রাবের সময় কোনো নারীর প্রচণ্ড পেট ব্যাথা হলে তাকে মানকচুর একটা বড় পাতার ওপর বসিয়ে রাখা হয়। এতে ব্যাথা কমে আসে বলে মনে করেন নেগরিটোস জাতির নারীরা। এ ছাড়া দাঁতে ব্যাথা, কোষ্ঠকাঠিন্য চিকিৎসায়, ক্ষত নিরাময়ে, সন্তান প্রসবে, প্রসুতি মায়েদের পথ্য হিসেবে মানকচুর নানা রকম ব্যবহার সমগ্র এশিয়া জুড়েই প্রচলিত। তাগবানোয়া আদিবাসীদের মধ্যে বাতের ব্যাথার চিকিৎসায়ও মানকচুর ব্যবহার দেখা রয়েছে। আসাম, ঝাড়খণ্ড ছাড়াও অনেক এলাকায় মানকচুর পাতার ডাঁটার রস দিয়ে সাপে কাটার চিকিৎসা করা হয়। 


মৃণালিনী দেবী আর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিখ্যাত রেসিপি মানকচুর জিলাপি বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় খাবার। এ ছাড়াও মানকচুর ভর্তা, তরকারি সহ নানান উপাদেয় পদের অভাব নেই আমাদেরও। 


নবপত্রিকার অষ্টম পত্রিকা মানকচু। মানকচুর অধিষ্ঠাত্রী দেবী চামুণ্ডা বা চামুণ্ডেশ্বরী। চণ্ড ও মুণ্ড নামক অসুর বধের জন্য সন্ধিক্ষণে তিনি আবির্ভূত হন। সার্বজনীন দুর্গাপূজায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ লগ্ন ধরা হয় এই সন্ধি পূজার লগ্নটিকে। মানকচুর গাছকে প্রতীক হিসেবে রেখে এই সময় সেই আদিম দেবী চামুণ্ডার আরাধনা করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। 


চামুণ্ডা মূলত তন্ত্রের দেবী। অষ্টমাতৃকা তথা আদি মাতৃশক্তির প্রত্যেকের আট জন করে সহচরী ছিলেন। যাদের বলা হয় ৬৪ যোগিনী বা ডাকিনী। আবার বৌদ্ধ ধর্মেও ৬৪ যক্ষিণীর কথা উল্লেখ আছে। ডাক বা যোগ শব্দের আক্ষরিক অর্থ প্রজ্ঞা বা আধ্যাত্মিক জ্ঞান। এই ডাকিনীদের একজন হিসেবে চামুণ্ডার আরাধনা করা হতো। প্রতিমার দিক থেকেও অন্য দেবীদের সঙ্গে চামুণ্ডার পার্থক্য স্পষ্ট। অস্থিচর্মসার, ভেতরে ঢুকে যাওয়া পেট, কোটরাগত চোখ— যেন সাক্ষাৎ মৃত্যুদুত! ভারতের হিমাচল প্রদেশে চামুণ্ডার একটি বিখ্যাত মন্দির রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলার বড় কালীতলা মন্দিরেও চামুণ্ডার পূজা করা হয়। কথিত আছে, এই মন্দিরে দেবীর সামনে ইংরেজদের তাড়ানোর শপথ নিতেন বিপ্লবীরা। অন্য আরেক মতে, চামুণ্ডাকে সরাসরি আদি মাতৃকা বা সপ্ত মাতৃকার অংশ বলে মনে করা হয়। ভারতের বিন্ধ্য অঞ্চলের অরণ্যচারী আদিবাসীদের মধ্যে অন্যতম প্রধান দেবী হিসেবে পূজিত হন চামুণ্ডা। 


বেশ কিছু শিলালিপি থেকে জানা যায়, ১৬ শতাব্দীর আগে আনুষ্ঠানিক ভাবে ডাকিনী বিদ্যা বা শক্তি সাধনা শেখানো হতো ভারতবর্ষে। পরবর্তীকালে ভারতীয় প্রাতিষ্ঠানিক সনাতন ধর্ম থেকে এর বিচ্যুতি ঘটে। চামুণ্ডার আরাধনা হয়তো শাক্ত ও তন্ত্রের শেকড়ের সঙ্গে আধুনিক ধর্মের সেই সন্ধিকেই প্রতিষ্ঠা করে অষ্টমী ও নবমীর মহালগ্নে। আর মানকচু দুর্যোগকালীন শর্করা হয়ে জীবন ও মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রক্ষা করে অনাহারী মানুষের প্রাণ। 


লেখক ও গবেষক— নুসরাত জাহান


তথ্যসূত্র: এথনোবোটানিকাল সার্ভে অফ এডিবল এরোয়েড, চিরঞ্জীব বনৌষধি, যোগিনী কাল্ট ইন ওডিশা


আমি একজন মা

 এক ভদ্র মহিলা পাসপোর্ট অফিসে এসেছেন পাসপোর্ট করাতে। অফিসার জানতে চাইলেন, "আপনার পেশা কি?"

মহিলা বললেন, "আমি একজন মা।"

"আসলে শুধু মা তো কোনো পেশা হতে পারেনা, তাহলে আমি লিখে দিচ্ছি আপনি একজন গৃহিনী।"


মহিলা খুব খুশী হলেন। পাসপোর্টের কাজ কোনো ঝামেলা ছাড়াই শেষ হলো।


অনেকদিন পর, এবারে পাসপোর্টটা renew করা দরকার, যেকোনো সময় কাজে লাগতে পারে। আবার পাসপোর্ট অফিসে আসলেন। দেখলেন আগের সেই অফিসার নেই। খুব ভারিক্কি, রুক্ষ মেজাজের এক লোক বসে আছেন।


যথারীতি ফর্ম পূরণ করতে গিয়ে অফিসার জানতে চাইলেন, "আপনার পেশা কি?"


মহিলা চট করে কিছু একটা বলতে গিয়েও থেমে গেলেন।


কয়েক মুহূর্ত ভেবে বললেন, "আমি একজন গবেষক। নানারকম চ্যালেঞ্জিং প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করি। আমরা প্রতিটি শিশুর মানসিক এবং শারীরিক বিকাশ সাধন করি, শিশুকে পর্যবেক্ষণ করে সে অনুযায়ী পরিকল্পনা প্রণয়ন করি। বয়স্কদের নিবিড় পরিচর্যা করি ও খেয়াল রাখি। সুস্থ পরিবার ও সমাজ বিনির্মাণে নিরলস শ্রম দিয়ে রাষ্ট্রের কাঠামোগত ভিত মজবুত করি।"


মহিলা বলে যাচ্ছেন, "প্রতিটি মূহুর্তেই আমাকে নানারকমের চ্যালেঞ্জের ভিতর দিয়ে যেতে হয় এবং অত্যন্ত দক্ষতার সাথে তা মোকাবিলা করতে হয়। কারণ, আমার সামান্য ভুলের জন্য বিশাল ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।"


মহিলার কথা শুনে অফিসার একটু নড়ে চড়ে বসলেন। মহিলার দিকে এবার যেন একটু শ্রদ্ধা আর বিশেষ নজরে তাকালেন। অনেক কৌতূহল নিয়ে অফিসারটি জিজ্ঞেস করলেন, "ম্যাডাম, আসলে আপনার মূল পেশাটি যদি আরেকটু বিশদভাবে বলতেন?"


"আমাদের রিসার্চ প্রজেক্ট তো আসলে সারাজীবন ধরেই চলে। সর্বক্ষণ আমাকে ল্যাবরেটরি এবং ল্যাবরেটরীর বাইরেও কাজ করতে হয়। এই কাজের চাপে আমার নাওয়া খাওয়ায় ঘুমের সময়ের ঠিক থাকে না। সব সময় আমাকে কাজের প্রতি সজাগ থাকতে হয়। এই তো আজকাল আমি সমাজবিজ্ঞান, পারিবারিক স্বাস্থ্য আর নৈতিকতা বিকাশ এই তিনটি ক্ষেত্রেই একসাথে কাজ করছি, যা পৃথিবীর সবচেয়ে জটিল প্রকল্পগুলোর অন্যতম।"


অফিসার মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে মহিলার কথা শুনছেন। এমন গুণী, বিস্ময়কর মহিলা। প্রথমে কিন্তু মনে হয়েছিল খুবই সাধারণ।


"প্রতিদিন আমাকে ১৪ থেকে ১৬ ঘন্টা আবার কোনো কোনো দিন আমাকে ২৪ ঘন্টাই ল্যাবে কাজ করতে হয়। পৃথিবীর সব পেশাতেই কাজের পর ছুটি বলে যে কথাটি আছে আমার পেশাতে সেটা একেবারেই নেই। ২৪ ঘন্টাই আমার অন কল ডিউটি।"


এও কিভাবে সম্ভব, অফিসারটি ভাবতেই পারছেন না!


"আপনার হয়তো বা জানতে ইচ্ছে করছে, বিনিময়ে কি পাই? এ চ্যালেঞ্জিং প্রকল্প পরিচালনায় আমার সেই অর্থে কোনো পারিশ্রমিক নেই। পরিবারের সবার মুখে হাসি আর পারিবারিক প্রশান্তিই আমার পারিশ্রমিক। আর আমার কাজের পুরষ্কার হিসেবে সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ থেকে পেয়েছি তিনটা স্বর্ণপদক!"


অফিসার হতভম্ব, এ কেমন নি:স্বার্থ কাজ পাগল!


"এবার আমি বলি, আমার পেশা কি?"


অফিসার এতক্ষণ যেন এই উত্তরের অপেক্ষায় ছিলেন!


"আমি একজন মা। এই পৃথিবীর অতিসাধারণ এক মা।"


মহিলার কথা শুনে গম্ভীর অফিসারটি এবারে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন, চেষ্টা করেও আর নিজের চোখে জল আটকাতে পারছেন না। তাঁর নিজের মায়ের মুখ চোখের সামনে ভেসে ওঠে। তিনি খুব সুন্দর করে ফর্মের সব কাজ শেষ করে, মহিলাকে একদম সিঁড়ির দরজা পর্যন্ত এগিয়ে দিলেন।


তারপর নিজের অফিস রুমে এসে বসলেন, ড্রয়ার হাতড়ে একটি ধূসর হয়ে যাওয়া ছবি বের করলেন। ক্ষনিকের নীরবতা, অপলক নয়নে তাকিয়ে, বিড়বিড় করে আপন মনে ডাকছেন,


মা, মা গো....


#কপি

বৃহস্পতিবার, ২৩ মে, ২০২৪

প্রেম   ও   বিরহের  কবি   :   ওমর  খৈয়াম 

 প্রেম   ও   বিরহের  কবি   :   ওমর  খৈয়াম 

  

বিশ্বখ্যাত কবি ও মহামনীষী ওমর খৈয়ামের অমোঘ পংক্তি --- ‘রুটি মদ ফুরিয়ে যাবে

প্রিয়ার কালো চোখ ঘোলাটে হয়ে যাবে।

বই , সেতো অনন্ত যৌবনা।’


ওমর খৈয়াম। যার সম্পূর্ণ নাম গিয়াসউদিন আবুল‌ ফাতেহ ওমর ইবনে ইব্রাহিম আল-খৈয়াম নিশাপুরি। তিনি ছিলেন একজন পারস্যের প্রেম ও বিরহের কবি, গণিতবিদ, দার্শনিক ও জ্যোতির্বিদ। তিনি ১০৪৮ খ্রীস্টাব্দের ১৮ মে ইরানের নিশাপুর শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ছিলেন তাঁবুর কারিগর ও মৃৎশিল্পী। ছোটবেলায় তিনি বালি শহরে সে সময়কার বিখ্যাত পণ্ডিত শেখ মুহাম্মদ মানসুরীর তত্ত্বাবধানে শিক্ষাগ্রহণ করেন।


ওমর খৈয়ামের শৈশবের কিছুটা সময় কেটেছে অধুনা আফগানিস্তানের বালক শহরে। সেখানে তিনি বিখ্যাত মনীষী মোহাম্মদ মনসুরীর কাছে শিক্ষা গ্রহণ করেন। পরে তিনি খোরাসানের অন্যতম সেরা শিক্ষক হিসেবে বিবেচিত ইমাম মোয়াফ্ফেক নিশাপুরির শিক্ষা গ্রহণ করেন। জীবনের পুরো সময় জুড়ে ওমর তার সব কাজ করেছেন নিষ্ঠার সঙ্গে। তিনি দিনের বেলায় জ্যামিতি ও বীজগণিত পড়ানো, সন্ধ্যায় হলে মালিক-শাহ-এর দরবারে পরামর্শ প্রদান এবং রাতে জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চার পাশাপাশি জালালি বর্ষপঞ্জি সংশোধন করতেন।


ইসফাহান শহরে ওমরের দিনগুলি খুবই কার্যকর ছিল। কিন্তু আততায়ীর হাতে সুলতান মালিক শাহ-এর মৃত্যুর পর তার বিধবা পত্নী ওমরের ওপর রুষ্ট হলে ওমর হজ্ব করার জন্য মক্কা ও মদিনায় চলে যান।পরে তাকে নিশাপুরে ফেরার অনুমতি দেওয়া হয়। নিশাপুরে ওমর গণিত, জ্যোতির্বিজ্ঞান ও চিকিৎসা বিষয়ক তার বিখ্যাত কাজগুলো সম্পন্ন করেন। তিনি নিজেকে মধ্যযুগের একজন প্রধান গণিতবিদ ও জ্যোতির্বিদ হিসাবে পরিচিত ৷


ওমর খৈয়ামের কবিতা সমগ্র, যা ওমর খৈয়ামের রূবাইয়াত নামে পরিচিত, তার জন্য। তার কাব্য-প্রতিভার আড়ালে তার গাণিতিক ও দার্শনিক ভূমিকা অনেকখানি ঢাকা পড়েছে। মার্কিন কবি জেমস রাসেল লোয়েল ওমর খৈয়ামের রুবাই বা চতুষ্পদী কবিতাগুলোকে বলেন ‘চিন্তা-উদ্দীপক পারস্য উপসাগরের মনিমুক্তা।’

ওমর খৈয়াম ঠিক কতগুলো রুবাই লিখে গেছেন তার সঠিক হিসাব কারো জানা নেই। তার অমর গ্রন্থ ‘রুবাইয়াৎ-ই-খৈয়াম’-এ ৭২২ টি রুবাই পাওয়া যায়। তার এই রুবাই বা চতুষ্পদী কবিতাগুলো প্রথমবারের মত ইংরেজিতে অনূদিত হয় ১৮৫৯ সালে। এডওয়ার্ড ফিটজেরাল্ডের এই অনুবাদের সুবাদেই ওমর খৈয়াম বিশ্বব্যাপী কবি হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন। এই অনুবাদের মাধ্যমে ফিটজেরাল্ড নিজেও খ্যাতিমান হয়েছেন। তার এই অনুবাদ গ্রন্থ দশ বার মুদ্রিত হয়েছে এবং ওমর খৈয়াম সম্পর্কে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে হাজার হাজার প্রবন্ধ ও বই লিখিত হয়েছে। বাংলায় প্রথম ‘রুবাইয়াৎ-ই-খৈয়াম’ অনুবাদ করেন বাংলাদেশের জাতীয় ও বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম।


ফার্সি কাব্য-জগতে ওমর খৈয়াম এক বিশেষ চিন্তাধারা ও বিশ্বদৃষ্টির পথিকৃৎ। তিনি এমন সব চিন্তাবিদ ও নীরব কবিদের মনের কথা বলেছেন যারা সেসব বিষয়ে কথা বলতে চেয়েও প্রতিকূল পরিস্থিতির কারণে তা চেপে গেছেন। কেউ কেউ ওমর খৈয়ামের কবিতার নামে বা তার কবিতার অনুবাদের নামে নিজেদের কথাই প্রচার করেছেন। আবার কেউ কেউ ওমর খৈয়ামের কবিতার মধ্যে নিজের অনুসন্ধিৎসু মনের জন্য সান্ত্বনাও খুঁজে পেয়েছেন।

এই বিশ্বখ্যাত কবি ও মহামনীষী জীবনের অনেক ঘাত প্রতিঘাত পার হয়ে ১১৩১ সালে ৪ ডিসেম্বর ৮৩ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। বিনম্র শ্রদ্ধার্ঘ 💝💝💝💝🙏🏻🙏🏻🙏🏻🙏🏻


(লেখা: তপু দেবনাথ)


রাশিয়ায় এমন একটি গ্রাম রয়েছে জনশ্রুতি যেখান থেকে কেউ নাকি জীবিত হয়ে ফিরে আসে না

 রাশিয়ায় এমন একটি গ্রাম রয়েছে জনশ্রুতি যেখান থেকে কেউ নাকি জীবিত হয়ে ফিরে আসে না




। বিজ্ঞানীরাও এই রহস্য সমাধানে অনেক গবেষণা করেছেন। আশেপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ গ্রামটিকে মৃতদের শহর বলে ডাকে।


এই গ্রামটি রাশিয়ার উত্তর ওশেটিয়ার একটি নির্জন এলাকায় অবস্থিত। গ্রামটির নাম ডারগাভস। স্থানীয় মানুষদের ধারণা অনুযায়ী এটি এমন এক জায়গা যেখানে শুধু মৃতরাই বাস করেন।


গ্রামটিকে ঘিরে রয়েছে পাঁচটি খাড়া পাহাড়। আর গ্রামের ঘরগুলো সব পাহাড়ি পাথরে তৈরি করা হয়েছে।গ্রামটি দেখতেও খুবই সুন্দর। কিন্তু কেউ এই গ্রামে যেতে সাহস পান না। কারণ এর আরেক নাম মৃতদের শহর। যেখানে শুধু মৃতদেহরাই বাস করে। একথা বিশ্বাস করা হয় যে স্থানীয় মানুষরা ওই গ্রামের ঘরগুলোতে তাদের মৃত আত্মীয়-স্বজনদের মৃতদেহগুলো রেখে আসেন।


ছোট্ট পাহাড়ি এই গ্রামটিতে এমন অসংখ্য ভবন আছে যেগুলোতে ভূগর্ভস্থ ঘরও আছে। এই গ্রামের কয়েকটি ভবনে চারটি পর্যন্ত তলা আছে। এই ভূগর্ভস্থ ঘরগুলিতে মৃতদেহ রাখা হয়।

 আসলে এটি বিশাল একটি গোরস্থান। এই ভবনগুলোর প্রতিটি তলায় মৃতদেহ কবর দেওয়া হয়। সমগ্র গ্রামটিতে প্রায় ৯৯টি ভবন আছে। আজ থেকে প্রায় পাঁচ শ বছর আগে সেই ১৬ শতক থেকেই এই ভবনগুলোতে মৃতদেহ করব দেওয়া হতো। এখনো সমানভাবে এভাবেই মৃত মানুষদের কবরস্থ করা হয়, গ্রামের এই ভবনগুলিতে।


স্থানীয়দের বিশ্বাস যারা একা এই ভবনে যায় তারা আর কখনো জীবিত ফিরে আসে না। আর এ কারণেই এই গ্রামে কখনো কোনো পর্যটকও যাননি। এ ছাড়া পাহাড়ি এলাকা হওয়ার কারণে এখানকার আবহাওয়া ক্ষণেক্ষণেই বদলে যায়। যা ভ্রমণকারীদের জন্য উপযোগী নয়। ফলে রহস্য থাকলেও পর্যটকদের আনাগোনা একেবারে নেই বললেই চলে।

স্থানীয়দের মধ্যে এই গ্রামটিকে নিয়ে একটি অদ্ভুত বিশ্বাস প্রচলিত আছে। তাদের বিশ্বাস ১৮ শ শতকে স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের গুরুতর অসুস্থ আত্মীয়দেরকে এই গ্রামের ভবনগুলোতে রেখে আসতেন। 


তাদেরকে সময়ে সময়ে খাদ্য ও পানীয় সরবরাহ করা হতো। কিন্তু মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত তারা সেখান থেকে বের হতে পারতেন না।

বিশেষজ্ঞ প্রত্মতাত্ত্বিকদের মতে মৃতদেরকে সেখানে নৌকাকৃতির কফিনে ভরে কবর দেওয়া হতো। এই বিশ্বাস থেকেই এমনটা করা হতো যে এতে মৃতদের জন্য স্বর্গে যাওয়া সহজ হবে। নৌকাকৃতির কফিন তাদেরকে স্বর্গে পৌঁছে দেবে। যদিও এই ধারণা বিজ্ঞানীরা একটি কুসংস্কার বলে মনে করেন।


গবেষকরা প্রতিটি ভূগর্ভস্থ স্থানের সামনে একটি করে অগভীর কুয়ো দেখতে পেয়েছেন। মৃতদের কবর দেওয়ার পর তার আত্মীয়-স্বজনরা ওই কুয়োয় কয়েন ফেলত। কোনো কয়েন যদি অন্য একটি কয়েনের সঙ্গে লেগে উচ্চ আওয়াজ তৈরি করত তাহলে গ্রামবাসীরা বিশ্বাস করত মৃত ব্যক্তি স্বর্গে যাবেন। বিজ্ঞানীদের মতে এ ধারণা নেহাতই কাকতালীয়

©

আানোয়ার ভাই

 ভাই আনোয়ার চাচতো চাচতো ভাই



বিদ্যাসাগরেরও আগে তিনি বিধবা বিবাহের জন্য সচেষ্ট হয়েছিলেন

 বিদ্যাসাগরেরও আগে তিনি বিধবা বিবাহের জন্য সচেষ্ট হয়েছিলেন। তাঁর দেওয়া জমির ওপর দাঁড়িয়ে আছে কলকাতা মেডিকেল কলেজ। কে তিনি? 


আজ শোনাব এমন একজনের কাহিনি যাঁর সম্পর্কে হিন্দু ইন্টেলিজেন্সার লিখেছিল দি মোস্ট ভারচুয়াস বাবু। বলা যায় তিনি ছিলেন ‘রথসচাইল্ড অফ ক্যালকাটা‘। শিবনাথ শাস্ত্রীর মতে তাঁর মতো সত্‍ ও বিনয়ী ব্যবসায়ী ছিলেন বিরল। তিনি মতিলাল শীল। ১৭৯২ সালে, কলকাতায়, এক সুবর্ণবণিক পরিবারে জন্ম তাঁর। পিতা চৈতন্যচরণ শীল ছিলেন চীনাবাজারে কাপড়ের ব্যবসায়ী। কিন্তু মাত্র পাঁচ বছরে পিতৃহীন হয়ে পড়ায় বেশিদূর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষালাভের সুযোগ হয়নি তাঁর। খুব অল্প বয়সেই ইংরেজ কোম্পানির অধীনে সামান্য বেতনের চাকরি দিয়ে জীবন শুরু। সতেরো বছর বয়সে ১৮০৯ সালে বিয়ে হল সুরতী বাগানের মোহন চাঁদ দে-র কন্যা নাগরী দাসীর সঙ্গে। শ্বশুরের পরামর্শে ১৮১৫ সালে ফোর্ট উইলিয়ামে কর্মচারী হয়ে যোগ দেন। পরে গুদাম-সরকার হন। এরপরে ফোর্ট উইলিয়ামের চাকরি ছেড়ে কিছুদিনের জন্য বালিখালের কাস্টমস দারোগার চাকরি করেন। কিন্তু বাণিজ্য তাঁর জন্মগত। তাই ১৮১৯ সালে পড়ে পাওয়া চোদ্দ আনা সামান্য কিছু মূলধন নিয়ে শুরু করলেন ব্যবসা। কীসের? বোতল-ছিপির কারবার। বিয়ার রপ্তানীকারী হাডসন সাহেবকে বোতল ছিপি জোগাতেন মতিলাল। পাশাপাশি সুতির কাপড় আর লোহা আমদানির বিনিময়ে ব্রিটিশদের রপ্তানি করতেন নীল, চিনি, রেশম, চাল, নুন। এইভাবে মতিলাল এদেশীয় ও বিদেশীয় বাণিজ্যিক লেনদেনে একটা যোগসূত্রের কাজ করে অর্থ রোজগার করেছিলেন প্রচুর। তাঁর দক্ষতার কারণে ব্রিটিশরা তাঁকে 'বানিয়ান' পদে নিয়োগ করল। আপন উপার্জিত অর্থে কিনে ফেললেন প্রায় বারো-তেরোটা কার্গো জাহাজ যা পাড়ি দিত সূদুর অস্ট্রেলিয়ার উপকূল পর্যন্ত। শুধু তাইই নয়, তিনিই এদেশে প্রথম স্টিম ইঞ্জিন তৈরি করিয়ে ছিলেন। 


মতিলাল শীল শুধু উপার্জনই করেননি, তাঁর খ্যাতির কারণই ছিল অকাতরে দান করার জন্য। ঊনবিংশ শতকের বাংলায় সমাজকল্যাণে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। ১৮৪১ খ্রিস্টাব্দে বেলঘরিয়ায় তৈরি করেছিলেন ভিক্ষাজীবীদের জন্য আশ্রম। দৈনিক পাত পড়ত অন্তত পাঁচশো জনের। এখনও আছে সেই আশ্রম, যেমন আছে হুগলীর গঙ্গাপাড়ে বাবু মতিলাল শীল ঘাট। অন্যদিকে শেয়ার কেনাবেচা, নগদ ও সুদের কারবারও করতেন কিন্তু তা মোটেও সমকালীন সুদখোরদের বাণিজ্যের মতো ছিল না। বরং মতিলালের টাকা ধার দেওয়ার পদ্ধতিটি ছিল অনেকটাই আজকের ব্যাঙ্কিং ও বিমা ব্যবস্থার পূর্বসূরী। ব্যাঙ্ক অফ ইণ্ডিয়ার প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যেও মতিলাল ছিলেন অন্যতম উদ্যোক্তা। মিশনারী-বিমুখ হিন্দু ছাত্রদের শিক্ষিত করে তোলার জন্য স্বনির্ভর উদ্যোগে ১৮৪২ খ্রিস্টাব্দে গড়ে তোলেন বাবু মতিলাল শীল ফ্রি কলেজ। পরে এর সঙ্গে যোগ হয় স্কুল। শিক্ষাদান ও পাঠ্যক্রম কিন্তু ছিল আধুনিক। প্রথমে ফাদার ফ্রান্সিস জেভিয়ারের (আজকের সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ) প্রতিষ্ঠান দেখত এর পঠন-পাঠন। কিন্তু নির্দেশ ছিল ধর্মের দিক দিয়ে ছাত্রদের প্রভাবিত করা যাবে না। কাজেই পরে যখন অভিযোগ ওঠে যে জেসুইট পাদ্রীরা সে নিয়ম মানছেন না তখন মতিলাল শীল পরিচালনার দায়িত্ব দেন রেভারেন্ড কৃষ্ণমোহন ব্যানার্জিকে। কলেজের ব্যয় তখনকার দিনে বার্ষিক ১২ হাজার টাকা আসত মতিলাল শীলের ট্রাস্ট থেকে। পড়ুয়া পিছু নেওয়া হত বার্ষিক এক টাকা সাম্মানিক ব্যয়।

বিদ্যাসাগরের আবির্ভাবের পূর্বেই মতিলাল শীল নিজের মতো করে বিধবা বিবাহ প্রবর্তনের চেষ্টা করেছিলেন। ১৮৩৭ সালে ঘোষণা করেছিলেন প্রথম বিধবা বিবাহকারীকে তিনি বিশ হাজার টাকা পুরস্কার দেবেন। সোচ্চার হয়েছিলেন বাল্যবিবাহ রোধে। ছিলেন সতীদাহ প্রথার ঘোরতর বিরোধী। নারীকল্যাণ ও নারীশিক্ষার সমর্থক ছিলেন প্রবলভাবে। হীরা বুলবুল নামে এক পতিতার পুত্রের হিন্দু কলেজে ভর্তি হওয়াকে কেন্দ্র করে তৎকালীন সমাজে বেশ আলোড়ন উঠেছিল। তখন মতিলাল শীল বউবাজারের রাজা রাজেন্দ্র দত্তের সঙ্গে পরামর্শ করে গড়ে তুললেন হিন্দু মেট্রোপলিটান কলেজ। কতটা ব্যতিক্রমী ও নিজের সময়ের থেকে এগিয়ে থাকলে একজন মানুষ এই দুঃসাহসিক পদক্ষেপ নিতে পারেন! 


মতিলাল শীলের কাছে কলকাতাবাসী তথা বাঙালির যে কতখানি ঋণ, তার জ্বলন্ত প্রমাণ কলকাতা মেডিকেল কলেজ। যে জমির ওপর বর্তমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল অবস্থিত, সেই পুরো ভূখণ্ডটাই এবং সঙ্গে এককালীন ১২ হাজার টাকা দান করেছিলেন মতিলাল শীল। পরিবর্তে তাঁর নামাঙ্কিত ওয়ার্ডে দেশীয় লোকজনের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছিল ব্রিটিশ সরকার। পরে ফিমেল ওয়ার্ড শুরু করার জন্য আবারও দিয়েছিলেন এক লক্ষ টাকা। কুষ্ঠরোগীদের পৃথক চিকিৎসার জন্য গড়ে তুলেছিলেন ডিস্ট্রিক্ট চ্যারিটেবল ট্রাস্ট। 


১৮৫৪ সালের ২০ মে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই বঙ্গসন্তান। কিন্তু শেষ জীবনে নানা প্রকার আইনি ঝামেলায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন। তবুও তাঁর ভূমিকার কথা শিরোধার্য। তিনি ছিলেন রামমোহন ও বিদ্যাসাগরের মধ্যবর্তী কালের মানুষ। তৎকালীন সমাজ গঠনে তাঁর ভূমিকা ছিল অনেকটাই। সমাজকল্যাণ থেকে চিকিৎসার উন্নতি, নারীকল্যাণ থেকে শিক্ষাক্ষেত্রে স্বনির্ভর উদ্যোগ - বঙ্গজীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই ছিল মতিশীলের অবদান। আর তাঁর এই অর্থের উৎস ছিল দাপুটে বাণিজ্য। ব্রিটিশ বণিকদের সাথে আপন বুদ্ধির জোরে সমানে সমানে পাল্লা লড়ে এই বাঙালি ব্যবসাকে দিয়েছিলেন সাফল্যের নতুন সংজ্ঞা। তবুও ব্যবসায়ী মতিলাল শীলের থেকে দানবীর মতিলাল শীল সর্বদাই অধিক স্মরণীয় কারণ আজও তাঁর ট্রাস্টের টাকাতেই বেলঘরিয়ার আশ্রম ও মতিলাল শীল ফ্রি কলেজ পরিচালিত হয়।


তথ্যসূত্র - 

ক্যালকাটা, দ্য লিভিং সিটি -সুকান্ত চৌধুরী (সংকলিত)


হিস্ট্রি অফ দি বৈশ্যজ অফ বেঙ্গল-প্রমথনাথ মল্লিক

উইকিপিডিয়া


সৌন্দর্যের দেবী ক্লিওপেট্রাআত্মহনন করেন, একটি বিষাক্ত সাপ তুলে নিয়েছিলেন হাতে, আর সেই মুহূর্তে সাপ ছোবল মারে তাঁর বুকে।

 সৌন্দর্যের দেবী ক্লিওপেট্রাআত্মহনন করেন, একটি বিষাক্ত সাপ তুলে নিয়েছিলেন হাতে, আর সেই মুহূর্তে সাপ ছোবল মারে তাঁর বুকে। ক্লিওপেট্রা ....মিশ...