এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

শনিবার, ২৭ জানুয়ারী, ২০২৪

অনু গল্প প্রতিবাদ,,,,,,,, ফেইসবুক থেকে নেওয়া

 সকালে ভা"বী যখন টেবিলে নাস্তা দেয় তখন বাবা ভা"বীর দিকে তাকিয়ে বললো,


  ~বউমা, তোমার গালে এটা কিসের দাগ?


বাবার কথা শুনে ভাবী কিছুটা চমকে গেলো। পাশে থাকা আয়নার দিকে তাকিয়ে ভাবী হাসতে হাসতে বাবাকে  বললো,


  -বাবা, আমার ঘুমের মধ্যে হাত পা ছোঁড়াছুড়ির অভ্যাস আছে৷ গতকাল রাতে ঘুমানোর সময় কয়েল জ্বালাইনি।  রাতে হয়তো গালে মশা বসেছিলো আর আমি হয়তো ঘুমের মাঝে মশা মা/রা/র জন্য নিজের গালে নিজেই থাপ্পড় মেরেছিলাম।  এটা সেই থাপ্পড়েরই দাগ!


 ভাবীর কথা শুনে বাবা কিছুটা অবাক হয়ে বললো,


~পাগলি মেয়ে বলে কি! এখন থেকে মনে করে সবসময় কয়েল জ্বালিয়ে ঘুমাবে। কেমন?


  ভাবী বাবাকে উদ্ভট মি/থ্যা গল্প বলে বুঝাতে পারলেও  আমি ঐ দাগের আসল কারণটা ঠিকই বুঝতে পেরেছিলাম। আমি নিচের দিকে তাকিয়ে  খেতে খেতে বাবাকে বললাম,


   — বাবা, এই ধরণের মশা খুব বিপজ্জনক। কয়েলের সামান্য বিষে এইসব মশা মরে না।


   আমার কথার ইঙ্গিতটা ভাবী ঠিকই বুঝতে পেরেছিলো।  তাই কিছু না বলে মাথা নিচু করে চুপচাপ অন্যমনস্ক হয়ে রইলো…


|


|


 ভাইয়া ভাবীর সংসারের বয়স ৪ বছর।  প্রথম প্রথম সব কিছু ঠিকঠাক ছিলো।  কিন্তু হুট করে মা মারা যাবার পর থেকেই ঝামেলা শুরু হলো। এখন ভাবী সামান্য একটু ভুল করলেই ভাইয়া ভাবীর গায়ে হাত তুলে।  অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। ভাবীর সহ্য করার ক্ষমতা অসীম ।  জোরে জোরে থাপ্পড় খাওয়ার পরেও তার কান্নার আওয়াজ রুমের বাহিরে আসে না। দাঁতের সাথে দাঁত চেপে সব কষ্ট সহ্য করে নেয়।


  ছাদের একটা কোণে বসে এইসব কথা ভাবছি আর সি'গারেটের ধোঁয়া ছাড়ছি। ভাবী কখন যে ছাদ থেকে কাপড় নিতে এসেছে আমি  খেয়াল করি নি।  সিগারেট হাতে ভাবী আমাকে দেখে ধমক দিয়ে বললো,


   – বা বা বা খুব ভালো। মাত্র  ভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছিস এখনি সিগারেট ধরেছিস। কয়েকদিন পর তো মদ গাঁজা এইসব ও খাওয়া শুরু করবি!


   আমি হাতে থাকা সিগারেটের আগুনটা নিভাতে নিভাতে বললাম, 


   — তাও ভালো আমি তো শুধু সিগারেট খাই।  ভাইয়ার মত তো প্রতিদিন কারো র/ক্ত চুষি না!


 ভাবী আমার দিকে অসহায়ের মত তাকিয়ে বললো,


– পিয়াস, তোর এইসব খোঁচা দেওয়া কথা গুলো আমার সহ্য হয় না। 


  আমি ভাবীর চোখে চোখ রেখে বললাম,


— রোজ রোজ যে মা/র খাও সেটা সহ্য হয়?


আমার কথা শুনে ভাবী কিছু না বলে চুপচাপ নিচে চলে গেলো।  আর আমি পকেট থেকে আরেকটা সিগারেট বের করে তাতে আগুন ধরালাম….


|


|


অনেকক্ষণ ধরে খেয়াল করছি ভাবী আমার রুমে এসে আলনা থেকে গোছানো কাপড় নামিয়ে  আবার গুছিয়ে আলনায় রাখছে।  টেবিলের গোছানো বইপত্র গুলো আবার গোছাচ্ছে।  ভাবীর এইসব কাজ কর্ম দেখে আমি কিছুটা অবাক হয়ে ভাবীকে বললাম,


  — ভাবী, তুমি কি আমায় কিছু বলবে?


ভাবী আমার পাশে বসে আমতা আমতা করে বললো,


  – পিয়াস,  তোর কাছে হাজার খানিক টাকা হবে? আমি কয়েকদিন পর তোকে দিয়ে দিবো।  তোর ভাইয়া আজকে একটু রেগে ছিলো তাই আর টাকা চাই নি।  


 আমি কিছু না বলে ভাবীর হাতে ১৫০০ টাকা দিলাম। ভাবী টাকাটা নিয়ে তাড়াহুড়ো করে নিচে গেলো।  আমি কিছুটা কৌতূহল বসত চুপিচুপি ভাবীর পিছনে গেলাম।  নিচে গিয়ে খেয়াল করি ভাবী তার ছোট ভাইকে টাকাটা দিচ্ছে আর বলছে,


  — ” তোর দুলাভাইয়ের কাছ থেকে নিলাম। তোর টাকা লাগবে শুনে তোর দুলাভাই তো হাসতে হাসতে দুই হাজার টাকা দিলো।  সেখান থেকে তোকে দিলাম ১৫০০, আর আমি ৫০০ রেখে দিলাম। “


 ভাবীর কথা শুনে আমি হাসছি আর ভাবছি,


   -হায়রে মেয়ে মানুষ। স্বামী স্ত্রীকে পায়ের নিচে ফেলে রাখলেও স্ত্রী তাকে মাথায় তুলে রাখে।  স্বামী হাজার অন্যায় করলেও সেটা কারো কাছে বলে না বরং নিজের স্বামীকে সবার কাছে বড় করে তুলে যতই নিজে ছোট হোক…


|


|


 বিকালের দিকে আমি আর বাবা বেলকনিতে বসে আছি।  বাবা পত্রিকা পড়ছে আর বলছে, “এই দেশে কিছুই হবে না। দেশটা পঁচে গেছে, নষ্ট হয়ে গেছে। চারদিকে শুধু খুন-আহাজারি ধর্ষণ আর নির্যাতন! “


  এমন সময় ভাবী এসে বাবাকে বললো,


-বাবা, আমি একটা জব পেয়েছি।  মোটামুটি টাইপের খুব ভালো একটা জব।  


  ভাবীর কথা শুনে আমি হাসতে হাসতে বললাম,


— তুমি জব পেয়েছো সেটা এমন আসামীর মত শুকনা মুখে বলছো কেন? 


 আমার কথা শুনে ভাবী নিচু গলায় বললো,


 –  মামুন ( আমার বড় ভাই) সেটা মেনে নেয় কি না বুঝতে পারছি না।  


 বাবা তখন মুচকি হেসে ভাবীকে বললো,


— চিন্তা করিস না মা। মামুনকে আমি বুঝিয়ে বলবো… 


|


|


রাতে খাবার টেবিলে বাবা যখন ভাইয়াকে ভাবীর চাকরির বিষয়ে কথা বলে।  ভাইয়া রেগে গিয়ে বাবাকে বললো,


  -আমি কম টাকা ইনকাম করি না কি  যে আমার বউকে চাকরি করতে হবে? 


 বাবা তখন বললো,


    ~চাকরি কি মানুষ শুধু টাকার জন্য করে? সংসারে আমরা শুধু ৩ জন।   কাজের লোক আছে দুইজন।  বউমা চাকরি করলে সমস্যা কি? তুই হাজার হাজার টাকা ইনকাম করলেও বউমাকে কি কখনো ৫০০ টাকা দিয়ে বলেছিস,  এটা তুমি খরচ করো।  মেয়েটা আজ একটা চাকরি পেয়েছে। করলে দোষের কি?


  বাবার কথা শুনে ভাইয়া আরো রেগে গিয়ে বললো,


– আমি চাই না আমার বউ চাকরির নাম করে অফিসের কলিগদের সাথে গিয়ে ঢলাঢলি করুক। 


  ভাইয়ার এমন নিম্নমানের কথা শুনে নিজেকে আর কন্ট্রোল করতে পারলাম না। জীবনে এই প্রথমবার ভাইয়ার চোখে চোখ রেখে বললাম,


    — তুমিও তো চাকরি করো। তারমানে  তুমিও নিশ্চয়ই তোমার অফিসের মেয়ে কলিগদের সাথে ঢলাঢলি করো? তা না হলে এমন নিম্নমানের চিন্তা তোমার মাথায় আসার কথা না। 


  আমার মুখ থেকে এমন কথা শুনে ভাবী আমার গালে থাপ্পড় মেরে কাঁদতে কাঁদতে  বললো,


   –  খুব বড় হয়ে গেছিস তুই তাই না? বড় ভাইকে যা তা বলছিস। 


আমিও তখন চোখের পানি আটকে রেখে ভাবীকে বললাম,


   — তোমাদের মত মেয়েদের না গলা টিপে মেরে ফেলা উচিত।  কারণ তোমাদের মত কিছু মেয়ে আছে যারা স্বামীকে মাথায় করে রাখে; যার ফলে ভাইয়ার মত কিছু কাপুরুষ সেটার সুযোগ নেয়।  ভাইয়া যখন প্রথম তোমার গালে থাপ্পড় মেরেছিলো তোমার উচিত ছিলো সেদিনই ভাইয়ার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের মামলা করা। তাহলে হয়তো ভাইয়া তোমাকে দ্বিতীয় বার থাপ্পড় মারার আগে একটু হলেও ভাবতো…


 বাবার দিকে তাকিয়ে বাবাকে বললাম, 


— তুমি দেশ নষ্ট হয়ে যাবার কথা ভাবছো অথচ তোমার অজান্তে যে তোমার ঘরটা নষ্ট হয়ে গেছে সেটা একবারও ভাবো নি…


|


|


আমি আর শ্রাবণী ভার্সিটির ক্যাম্পাসের একটা কোণে বসে আছি।  আমি শ্রাবণীকে তখন বললাম,


  — আচ্ছা,  আমি বিয়ের পর কখনো যদি তোমার গালে থাপ্পড় মারি তখন তুমি কি করবে? 


আমার কথা শুনে শ্রাবণী বললো,


  – আমি তোমার নাক বরাবর ঘুষি মারবো। অন্যায় করলে বুঝিয়ে বলবে, আমি শুধরে নিবো। শুধু শুধু মারবে কেন?


আমি শ্রাবণীর কথা শুনে হাসতে লাগলাম। আর ওর হাতটা শক্ত করে ধরে মনে মনে ভাবতে লাগলাম, আমিও চাই আমার স্ত্রী এমন হোক। ভাবীর মত অন্যায় সহ্য না করে অন্যায়ের প্রতিবাদ করুক…

.

#অনুগল্প:-#প্রতিবাদ


#সমাপ্ত।


.👉 গঁল্পেঁরঁ শেঁষঁ লা হতে সংগৃহীত। 

        ছবি পরিবর্তন করা হয়েছে।

ফেইসবুক থেকে নেওয়া 




কোন মন্তব্য নেই:

নিজে ভালো থাকুন! পরিবার কে ভালো রাখুন!

 অনেকেই শোকেসে গাদাগাদি করে অনেক বছর ধরে জিনিস জমিয়ে রাখেন।  নিজেরা মেলামাইন ব্যবহার করেন।  মেহমান আসলে কাঁচের জিনিস বের করেন আবার ধুয়ে তুলে...