পেঁপে গাছের পাতা হলুদ/কুকড়িয়ে যাওয়ার সমস্যার সমাধান ও সতর্কতা।
পেঁপে গাছের পাতা হলুদ/কুকড়িয়ে যাওয়ার সমস্যার সমাধান ও
সতর্কতা বিষয়ে প্রায়ই জানতে চান চাষিরা। এ সমস্যার কারণে ফলন
অনেকাংশই কমে যায়।
অনেকক্ষেত্রে বড় বাগানে চাষিদের বড় লোকসানের বোঝাও বইতে
হয়। নানা কারণে এসব সমস্যা দেখা দেয়। পাঠক আসুন জেনে নেয়া
যাক এ সমস্যার সমাধান নিয়ে বিস্তারিত তথ্য।
যেসব কারণে পেঁপে গাছের পাতা হলুদ ও কুকড়িয়ে যায়: পাতার
বয়স হলে এমনিতেই ঝরে পড়ে।২. নাইট্রোজেন/ইউরিয়ার অভাবে
নিচের পাতা হলুদ হয়ে ঝরে পড়ে। ৩. পানির অভাব বা অতিরিক্ত
পানিতে এরকম হয়।
প্রতিকার: ইউরিয়া না দিয়ে থাকলে ফুল ধরার আগ পর্যন্ত প্রতি মাসে
গাছের গোড়া থেকে দুই ফুট দূর দিয়ে চারিদিকে ৫০ গ্রাম ইউরিয়া
মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। প্রয়োজনে হালকা সেচ দিতে হবে।
উপরের কারণ না থাকলে বয়সের কারণে হলুদ হয়েছে বুঝতে হবে।
তখন মরা পাতাগুলো ছিড়ে ফেলতে হবে। ফুল -ফল ধরার পর গাছ
প্রতি ইউরিয়া সারের পরিমাণ বাড়াতে হবে।
কচি পাতা হলুদ হলে বুঝতে হবে সালফারের অভাব হয়েছে। তখন
থিওভিট বা মাইক্রোথিওল বা অন্য কোন সালফার সমৃদ্ধ সার দিতে
হবে। যদি পাতায় সবুজ আর হলুদ রংয়ের মিশ্রন থাকে ও পাতা
কুকড়িয়ে যায় তবে বুঝতে হবে ভাইরাস রোগ হয়েছে।
সাদামাছি, মিলিবাগ, জাবপোকা ভাইরাস রোগ ছড়ায়। তাই রোগ
হওয়ার আগেই ইমিটাফ বা টাফগর বা এডমায়ার বা একতারা
যেকোন একটি স্প্রে করতে হবে। পেঁপে গাছ লাগানোর আগে বোরণ
সার না দিয়ে থাকলে ফুল-ফল ধরার পর গোড়ায় বা স্প্রে করে বোরণ
সার দিতে হবে।
প্রতি লিটার পানির সাথে এক মিলি বা এক গ্রাম হারে মিশাতে হবে।
এতে করে ফলের আকার আকৃতি ভালো হবে। সাধারণত উপরের
পাতায় ভাইরাসের লক্ষণ দেখা যায়।
গাছের উপরে সবুজ পাতা আর নীচে হলুদ পাতা দেখা দিলে মরা
পাতাগুলো ফেলে দিয়ে গাছের গোড়া থেকে দেড়-দুই ফুট দূর দিয়ে
গাছ প্রতি ৫০ গ্রাম করে ইউরিয়া ও ২৫ গ্রাম পটাশ দিলেই চলবে।
পটাশ না দিয়ে থাকলে সেটাও একই হারে দিতে বলবেন।
ফুল ঝরে যাওয়া সমস্যা মনে হলে প্রতি লিটার পানির সাথে হাফ চা
চামচ ইউরিয়া ও এক চিমটি থিওভিট মিশিয়ে বিকেলে স্প্রে করতে
হবে।
পরামর্শ/দরকারী: বাগানে প্রতি ১০ টি পেঁপে গাছের মধ্যে একটি
পুরুষ গাছ থাকা জরুরি। এতে সঠিক পরাগায়ন হবে। ফল টিকবে
বেশি।
গাছের গোড়ায় পানি জমতে দেয়া যাবে না। শুকিয়ে গেলে প্রয়োজনীয়
সেচ দিতে হবে। রোগ হয়ে গেলে ভালো করার উপায় নেই। তখন গাছ
উঠিয়ে ফেলতে হবে। তাই আগে থেকেই পোকা দেখামাত্র বা প্রতি
মাসেই স্প্রে করতে হবে।
লেখক: উপজেলা কৃষি অফিসার প্রেষণে সিনিয়র সহকারি পরিচালক
জাতীয় কৃষি প্রশিক্ষণ একাডেমি (নাটা), গাজীপুর।
![]() |
ফেইসবুক থেকে নেওয়া |
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন