এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

বৃহস্পতিবার, ২৯ মে, ২০২৫

এক কাপ চা আর একজোড়া কাঁপা হাত যে জীবনের যত গল্প ধারণ করে, তা অনেক উপন্যাসকেও হার মানায়। সংগৃহিত

 প্রথম দিন তাকে দেখেই আমি চমকে উঠেছিলাম। পরিপাটি সাদা চুল, চোখে পুরু ফ্রেমের চশমা, গলার নিচে একটা পুরনো লকেট। মনে হচ্ছিল যেন কোনো স্কুলের সাবেক প্রধান শিক্ষক চায়ের দোকানে বসে আছেন।


আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম,


"চাচী, আপনি এখানে বসেন প্রতিদিন?"


তিনি হেসে বলেছিলেন,


"হ্যাঁ মা, এখন আমার পাঠশালা এই রাস্তার ধারে। শুধু পাঠ নেই, শুধু শালা আছে।"


সেই হাসির আড়ালে ছিল এক গাঢ় বিষাদ। কিছুদিন পরেই তার সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব হয়ে যায়। প্রতিদিন বিকেলে আমি গিয়ে বসতাম তার পাশে। এক কাপ চা আর অজস্র কথা। ধীরে ধীরে খুলে গেল অতীতের বই।


“আমি এক সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষিকা ছিলাম। আমার ছাত্ররা এখন অনেকেই দেশের বড় বড় জায়গায়।”


এই কথা যখন বলেছিলেন, তার চোখে গর্বের দীপ্তি ছিল। কিন্তু পরের কথায় সে দীপ্তি ম্লান হয়ে গিয়েছিল।


“একটা প্রেম ছিল, যেটা আমার সমস্ত কিছু কেড়ে নিয়েছিল। ও বলেছিল, বিয়ে করলে আমায় কাজ করতে হবে না। আমিও ভাবলাম, ভালোবাসা মানেই তো নিরাপত্তা। ভুল ভেবেছিলাম।”


বিয়ের পর তার স্বামী একে একে বন্ধ করে দেয় তার সকল প্রকাশনা, লেখালেখি, পত্রিকা পড়া। ধীরে ধীরে সে হয়ে পড়ে গৃহবন্দী। সন্তান হয় না। আর সেটা নিয়েই চলতে থাকে মানসিক নির্যাতন। একদিন, এক কাপ চা খেতে খেতে সে সিদ্ধান্ত নেয়, আর নয়।


“তখন আমার বয়স ৪২। ঘর ছেড়ে বেরিয়ে এলাম। কিছুই ছিল না। শুধু একটা ব্যাগ আর বুকভরা যন্ত্রণা।”


শুরুর দিকে নানারকম কাজ করেছেন – ছাত্র পড়ানো, টাইপ করা, বইয়ের প্রুফ দেখা। কিন্তু বয়স বাড়ার সাথে সাথে কাজ কমে গেছে। এখন রাস্তায় বসে চা বিক্রি করেন। নিজেকে ছোট মনে করেন না।


“এই এক কাপ চা আমার সম্মান। কারো কাছে হাত পাতিনি।”


একদিন আমি বললাম, “চাচী, আপনার তো বই লেখার মতো জীবন। কেন লেখেন না?”


তিনি মুচকি হেসে বললেন,


“আমার লেখার সময় গেছে মা। এখন তোমরা লেখো। আমি শুধু চাই আমার গল্প হারিয়ে না যাক।”


আজ তিন মাস হয়ে গেছে চাচীকে দেখছি না। দোকানটা ফাঁকা পড়ে থাকে। অনেকে বলে, তিনি হয়তো গ্রামে চলে গেছেন, কেউ বা বলে তিনি মারা গেছেন।


কিন্তু আমি বিশ্বাস করি, চাচী আছেন। কোথাও বসে, কাঁপা হাতে চা বানাচ্ছেন – হয়তো স্বর্গে কোনো কবি বা গল্পকারের জন্য।


আর তার গল্প? আমি লিখে ফেললাম।


এক কাপ চা আর একজোড়া কাঁপা হাত যে জীবনের যত গল্প ধারণ করে, তা অনেক উপন্যাসকেও হার মানায়।


সংগৃহিত

কোন মন্তব্য নেই:

সৌন্দর্যের দেবী ক্লিওপেট্রাআত্মহনন করেন, একটি বিষাক্ত সাপ তুলে নিয়েছিলেন হাতে, আর সেই মুহূর্তে সাপ ছোবল মারে তাঁর বুকে।

 সৌন্দর্যের দেবী ক্লিওপেট্রাআত্মহনন করেন, একটি বিষাক্ত সাপ তুলে নিয়েছিলেন হাতে, আর সেই মুহূর্তে সাপ ছোবল মারে তাঁর বুকে। ক্লিওপেট্রা ....মিশ...