এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

বৃহস্পতিবার, ১৩ জুন, ২০২৪

সকাল ৭ টার  সংবাদ।  তারিখ: ১৩-০৬-২০২৪ খ্রি:।

 সকাল ৭ টার  সংবাদ। 

তারিখ: ১৩-০৬-২০২৪ খ্রি:।


আজকের শিরোনাম:


প্রযুক্তি ভিত্তিক, উন্নত, টেকসই ও জ্ঞান ভিত্তিক স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে চায় সরকার — জাতীয় সংসদে বললেন প্রধানমন্ত্রী।


গ্লোবাল ফান্ড অ্যান্ড স্টপ টিবি পার্টনারশিপ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তাদের নেতৃবৃন্দের জোট ও গ্লোবাল ফান্ড চ্যাম্পিয়ন এর অন্তর্ভুক্ত করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।


পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে রাজধানীর দুটি স্থায়ী হাটসহ ২২টি পশুর হাটে আজ শুরু হচ্ছে কোরবানির পশু বেচাকেনা।


সারাদেশে শুরু হয়েছে ঘরমুখো মানুষের ট্রেনে ঈদ যাত্রা।


পানি ব্যবস্থাপনা, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবেলা ও ক্রায়োস্ফিয়ার সংরক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী।


গ্রামীণ টেলিকমের ২৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও বিদেশে পাচারের অভিযোগে কোম্পানির চেয়ারম্যান ডক্টর ইউনূস ও অপর ১৩ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার একটি আদালতে অভিযোগ গঠন। 


গাজায় যুদ্ধাপরাধ সংঘটন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য ইসরাইলকে অভিযুক্ত করেছে জাতিসংঘ। 


নিউইয়র্কে আইসিসি টি—টোয়েন্টি বিশ্বকাপে যুক্তরাষ্ট্রকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে ভারত - ত্রিনিদাদে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ এখন  নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে খেলছে - আজ রাতে কিংসটাউনে নেদারল্যান্ডসের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।

বুধবার, ১২ জুন, ২০২৪

বিশ্বের সর্বপ্রথম "শীতাতপ" নিয়ন্ত্রিত মহাসড়ক...

 ✍️✍️বিশ্বের সর্বপ্রথম "শীতাতপ" নিয়ন্ত্রিত মহাসড়ক...!


গত [ফেব্রুয়ারি'23] ৯৩ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই মহাসড়কটি তৈরি হয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই শহরে! দুবাইয়ের একটি স্থাপনা সংস্থা ইউআরবি(URB)'র অধীনে এই মহাসড়কটি গড়ে তোলা হয়েছে!2040 সালে খুলে  দেওয়ার জন্য পরিকল্পিত...


এই মহাসড়কে কোন গাড়ি চলবে না,শুধু মাত্র বাই-সাইকেল রাইডার আর পায়ে হেঁটে চলা পাবলিকদের জন্যই কেবল।


এখানে মূলত জলবায়ু নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থায় তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা হবে...


মহাসড়কটি স্টিলের খাঁচার উপর দিয়ে কাঁচে মুড়ানো একটি আবরণ থাকবে।এই মহাসড়কের আশেপাশে কেনা কাটার জন্য থাকবে শপিংমল,রেস্তোরাঁ,আন্ডার গ্রাউন্ড সাইকেল পার্কিং, বাণিজ্যিক প্লেস,সিনেমা-থিয়েটার,এক্সারসাইজ বা ব্যায়ামাগার ও শিশুদের জন্য থাকবে নিরাপদ বিনোদনের ব্যবস্থা...


সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এবং জলবায়ু টেকসই মহাসড়কটির নাম দেয়া হয়েছে ‘‘সাসটেইনেবল আরবান হাইওয়ে’’ বা দ্যা লুপ (The Loop)।


কার্টেসি – আশা





সকাল ৭ টার  সংবাদ।  তারিখ: ১২-০৬-২০২৪ খ্রি:।

 সকাল ৭ টার  সংবাদ। 

তারিখ: ১২-০৬-২০২৪ খ্রি:।


আজকের শিরোনাম:


আশ্রয়ণের ঘর পেল আরও সাড়ে ১৮ হাজারের বেশি পরিবার — গৃহহীন ও ভূমিহীনদের আত্মমর্যাদা এনে দিয়েছে এসব বাড়ি, বললেন প্রধানমন্ত্রী — ২৬টি জেলাসহ আরও ৭০টি উপজেলাকে গৃহহীন ও ভূমিহীনমুক্ত ঘোষণা।


জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় স্থানীয় অভিযোজন কর্মসূচিতে বাংলাদেশের অগ্রণী ভূমিকার জন্য লোকাল অ্যাডাপ্টেশন চ্যাম্পিয়ন্স অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করলেন শেখ হাসিনা।


বিশ্বব্যাপী মন্দা বিরাজ করলেও সরকারের যুগোপযোগী ও সাহসী সিদ্ধান্তে সচল রয়েছে দেশের অর্থনীতি — বললেন রাষ্ট্রপতি।


রাজধানীর অস্থায়ী কোরবানির পশুর হাটগুলো সম্পূর্ণ প্রস্তুত — 

আজ থেকে পুরোদমে শুরু হবে পশু বেচাকেনা। 


হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার জন্য ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানালেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।


নর্থ সাউন্ডে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ক্রিকেটে এখন অষ্ট্রেলিয়ার মোকাবেলা করছে নামিবিয়া।

মঙ্গলবার, ১১ জুন, ২০২৪

বাবার পরী রানু,,,, ফেইসবুক থেকে নেওয়া

 বাবার পরী রানু


'কুচকুচে কালো সে জাতে স্প্যানিয়েল, 

তুলতুলে গা যেন রেশমি রুমাল। 

আমি তাকে বুশিবল নাম দিয়ে ডাকি 

বুশিবল এ শহরে আছে একটাই... 

বুশিবল বুশিবল তুমি যে আমার, 

বুশিবল বুশিবল আমিও তোমার।' 


একটি কালো রঙের কুকুরের প্রতি ভালবাসা নিয়ে এই গান আজও বাঙালির ঘরেঘরে জনপ্রিয়। 

বাংলা সঙ্গীত জগতে এক কিশোরীর মাদকতাময় কণ্ঠ নতুন বাঁক ঘুরিয়ে দিয়েছিল। সেই কিশোরীটি হলেন রাণু মুখোপাধ্যায়, কিংবদন্তী হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের কন্যা। কিন্তু রাণু হেমন্ত-কন্যা পরিচয়েই সীমাবদ্ধ থাকেননি, স্বতন্ত্র কণ্ঠ ও গায়কী দিয়ে নিজের আইডেন্টিটি তৈরি করে ফেলেছিলেন খুব অল্পদিনেই। স্টারকিড হওয়ার দৌলতে রাণুর সঙ্গীত জগতের লাইমলাইটে আসা হয়তো সহজ ছিল, কিন্তু বিপুল জনপ্রিয়তা পেয়ে যেভাবে রাণু মুখার্জীর নামটা এক নম্বরে উঠে এসেছিল, সেই লড়াইটা কিন্তু সহজ ছিল না। বাবা যে একজন কিংবদন্তী সঙ্গীতশিল্পী ও সুরকার, সেই বোধটা ছোটবেলায় ছিল না রাণুর। বাবার ব্যস্ততা, বাড়িতে নিয়মিত সঙ্গীত তারকাদের যাওয়া-আসার সঙ্গে পরিচিত ছিলেন জয়ন্ত ও রাণু, হেমন্তর পুত্র-কন্যা। জয়ন্ত বড়, রাণু ছোট। রাণু ছোট বলে সবার আদুরে। মুম্বইয়ের খারেতে তখন থাকেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়। বাড়ির নাম 'গীতাঞ্জলি'। হেমন্তর প্রতিবেশী ছিলেন বিখ্যাত গীতিকার শৈলেন্দ্র। একবার রাণু স্কুল থেকে ফিরে সুর করে নার্সারি রাইম শোনাচ্ছিলেন বাবা আর শৈলেন্দ্র আঙ্কলকে। সুরটা দু'জনেরই পছন্দ হয়ে গেল। তৈরি হল সেই বিখ্যাত গান, 'নানি তেরি মোরনি কো মোর লে গ্যয়ে'। রেকর্ডিং স্টুডিওয় যাওয়ার পথে গাড়িতেই পুরো গানটা মেয়েকে শিখিয়ে দিলেন বাবা। সহজেই গান তুলে নেওয়ার প্রতিভা রাণুর ছিল সেই বয়সেই।  বাবার সুরে ও রেকর্ডে রাণু মুখোপাধ্যায়ের প্রথম গান 'মাসুম' ছবিতে শোনা গিয়েছিল ১৯৬০ সালে।  এভাবেই খেলার ছলেই রাণুর গান শেখা। সেইসঙ্গে রক্তে তো গান ছিলই। মা বেলা মুখোপাধ্যায় আর বাবা হেমন্ত মুখোপাধ্যায় দুজনেই গানের জগতের দিকপাল।


হেমন্তর পরিবারে কন্যা সন্তান ই বেশি। একমাত্র পুত্র সন্তান হেমন্তর ছেলে জয়ন্ত। একমাত্র নাতিকে চোখে হারাতেন হেমন্তের মা। হেমন্তর বড়দার শক্তিদাসের ছয় মেয়ে। এক মেয়ে সুমিত্রা মুখোপাধ্যায় রবীন্দ্রনাথের গানে বিখ্যাত। কোন পুত্র সন্তান নেই। মেজ ভাই হেমন্তর মেয়ে রানু। সেজ ভাই তারাজ্যোতির একটিই মেয়ে শাশ্বতী। ছোট ভাই সুরকার অমল মুখোপাধ্যায়ের দুই মেয়ে পারমিতা ও মধুমিতা। সবে ধন নীলমণি জয়ন্ত। যদিও হেমন্তর বোন নীলিমার তিন মেয়ের সাথে এক ছেলে হয়। যদিও তাঁরা আলাদা গোত্রের। 


অগ্রদূত পরিচালিত ছোটদের ছবি 'বাদশা'তে বাবার সুরে রাণুর গাওয়া তিনটি গান বিশাল জনপ্রিয় হয় মাস্টার শঙ্কর ঘোষের লিপে। 'লালঝুঁটি কাকাতুয়া', 'শোন শোন শোন মজার কথা ভাই' এবং 'পিয়ারিলালের খেলা দেখে যা'। 'লালঝুঁটি কাকাতুয়া' তো ঘুমপাড়ানি গানই হয়ে গেল ঘরে-ঘরে। আজও ছোটদের গান বললেই এক নম্বরে আসবে রাণুর গাওয়া 'লালঝুঁটি কাকাতুয়া ধরেছে যে বায়না, চাই তাঁর লাল ফিতে চিরুনি আর আয়না।'


হেমন্ত-কন্যা ছবিতে নায়িকা হওয়ারও অফার পেয়েছিলেন সেসবে আর এগোননি রাণু। ছোটবেলায় রাণু কিন্তু শিশুশিল্পী রূপে অভিনয়ও করেছেন হিন্দি ছবিতে, 'বন্ধন', 'অনুরাধা' এবং 'বিশ সাল বাদ'।


হেমন্ত-রাণু বাবা-মেয়ের জুটির দ্বৈতকণ্ঠে  রবীন্দ্রসঙ্গীতের রেকর্ডও বেরিয়েছিল। 'অমল ধবল পালে লেগেছে' এবং 'এ পারে মুখর হল কেকা ওই'। 


মহুয়া রায়চৌধুরীর লিপে 'আশীর্বাদ' ছবিতে 'ফুলের গন্ধের মতো তোমায় জড়িয়ে আমি রাখব' রাণু গেয়ে সেরা গায়িকার বিএফজেএ পুরস্কার পান। হেমন্ত চেয়েছিলেন তাঁর সুরে মহুয়ার লিপে অরুন্ধতী এবার নয় রাণু গাইবেন। কিন্তু আশীর্বাদ ই মহুয়ার শেষ ছবি হল নিয়তিতে। যে কারণে রাণু-মহুয়া জুটির গান হিট হয়েও পরে আর হলনা। 


হেমন্তর মৃত্যুর পরও রাণু এ আর রেহমানের সুরে প্লে ব্যাক করেছিলেন রাম গোপাল ভার্মার দাউদ ছবিতে। গৌতম মুখোপাধ্যায়, রাণুর স্বামী অনেক গানেই হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের রেকর্ডিংয়ে সহকারী সংগীত পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন। হেমন্ত চেয়েছিলেন তাঁর মেয়ে সারা জীবন গান নিয়েই থাকুক। রাণু মনে-প্রাণে আজও গান নিয়েই আছেন কিন্তু বহু যুগ তিনি গানের জগতের বাইরে। কেন এই অভিমান? নাকি গানের জগত বদলে যাওয়াতেই তাঁর এই অন্তরাল?


হেমন্তর মৃত্যুর পর গানের জগতের দরজা রাণুর জন্য বন্ধ হতে থাকে। নিজের খামখেয়ালি পোনা, কিছুটা বাবার মেয়ে স্টারডম প্রদর্শন কখনও বা একেবারেই উদাসনীতার থেকে লাইমলাইটের বাইরে বেরিয়ে যান রাণু। অন্তরা চৌধুরী আর রানু মুখোপাধ্যায়ের পরপর জন্মদিন। দুজনেই ছোটদের গানে অসম্ভব জনপ্রিয় হন। কিন্তু দুজনেরই গলার টেক্সচার দূর্দান্ত ছিল। রোম্যান্টিক গানে সেভাবে ব্যবহার করেননি ওঁদের কেউ। ছোটদের গানেই দুজনে টাইপকাস্ট হয়ে গেলেন। অন্তরা হাজার বাঁধা পেরিয়ে নিজের গানের ক্যারিয়ার বাঁচিয়ে রাখলেও রাণু সে পথে একেবারেই হাঁটেননি। যে কারণে অন্তরা আট থেকে আশির কাছে চেনা কন্ঠ হলেও রাণু হননি। বাবার প্রস্থানের পর বাংলার সুরকাররা রাণুকে সেভাবে গানও দেননি। বম্বে থেকেও হিন্দি গানে কাজে লাগেনি ওমন পপ গানের কন্ঠ। যদিও 'লাল ঝুঁটি কাকাতুয়া' র গানের আসল শিল্পী কে তাতে রাণু মুখোপাধ্যায়ের নাম আসবেই? 


আজ জন্মদিনে ৬৬ বছরের রাণু কী আজও গেয়ে ওঠেন বাবার সুরে 'লাল ঝুঁটি কাকাতুয়া' ? কে জানে গুনগুন করেন কিনা যখন বেড়ান তিনি পাইন বনে!


কৃতজ্ঞতা  শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়

সম্রাট আকবরের রাজসভায় নবরত্নের অন্যতম রত্ন ছিলেন রামতনু পান্ডে 

 সম্রাট আকবরের রাজসভায় নবরত্নের অন্যতম রত্ন ছিলেন রামতনু পান্ডে । অনুমান করা হয় ১৫৮৯ সালে ৬ ই মে সুরলোকে যাত্রা করেন সুর সম্রাট রমতনু পান্ডে ওরফে তানসেন,

শ্রদ্ধাঞ্জলি

একটি প্রতিবেদন

ঋণ আপন কথা

*********

বিশিষ্ট সঙ্গীতজ্ঞ, সঙ্গীত জগতের সম্রাট কিংবদন্তি সুর স্রষ্টা তানসেন। তার পুরো নাম রামতনু পাণ্ডে। মোঘল সম্রাট আকবর তাকে তানসেন উপাধিতে ভূষিত করেন। তানসেন নামের অর্থ যিনি সঙ্গীত দিয়ে হৃদয় দ্রবীভুত করেন। যিনি চাইলেই গান গেয়ে আগুন জ্বালিয়ে দিতে পারতেন, আবার গান গেয়েই নামাতে পারতেন আকাশ থেকে অঝর ধারার বৃষ্টি। তানসেন শুধু বড় গায়কই ছিলেন না তিনি ছিলেন গীতিকার ও কবি। আধুনিক ধ্রুপদ সঙ্গীতের প্রবক্তা তানসেন কিছু রাগের নবরুপ দিয়েছিলেন সে সকল রাগ তার নামের সাথে আজও জড়িয়ে আছে। যথাঃ মিয়াকী দরবারী কানাড়া, মিয়াকী মল্লার, মিয়াকী তোড়ি। এসব রাগ সেই যুগ হতে আজও সকলের কাছে সমান জনপ্রিয়। কিংবদন্তি এই সঙ্গীত যাদুকরের আজ ৪২৫তম মৃত্যুবার্ষিকী। যদিও তার জন্ম-মৃত্যু সাল নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে। মাহবুবুল হক সংকলিত বিশ্বতারিখ অনুযায়ী ১৫৮৯ সালের ৬ মে তিনি মৃত্যুৃবরণ করেন। সঙ্গীত জগতের সম্রাট কিংবদন্তি সুর স্রষ্টা তানসেনের মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি

আলৌকিক ক্ষমতাধর, সঙ্গীতের যাদুকর তানসেন আনুমানিক ১৫০৬ সালের ডিসেম্বর মাসে ভারতের মধ্য প্রদেশের অন্তর্গত গোয়ালিয়ের বেহাটে জন্মগ্রহণ করেন। তার আসল নাম রামতনু পাণ্ডে। তার বাবা মুকুন্দ পাণ্ডে একজন কবি এবং তিনি ছিলেন বারাণসীর বাসিন্দা। তার কোনো সন্তানই বেঁচে থাকতো না। শোনা যায় মৃতবৎসা স্ত্রীকে তিনি গোয়ালিয়রের মুহাম্মাদ গওস এর মাদুলী গ্রহন করেন যাতে করে তানসেনের জন্ম হয়। শেখ মুহাম্মদ গাউস ষোড়শ শতাব্দীর অন্যতম সুফী দরবেশ ও ফকির ছিলেন। সকল ধর্ম বিশ্বাসের লোকের কাছে তিনি সনামধন্য ছিলেন। ছেলের জন্মে তিনি অতি আনন্দিত হন এবং এই জন্মের পিছনে সাধু গাউসের আশীর্বাদ রয়েছে বলে বিশ্বাস করতেন। তিনি ছেলের নাম রাখেন রামতনু (রামতনু পাণ্ডে)। ছোটবেলা থেকেই রামতনু সঙ্গীত শিক্ষা করতে শুরু করেন। এই শিক্ষায় তার গুরু ছিলেন বৃন্দাবনের তৎকালীন বিখ্যাত সঙ্গীত শিক্ষক হরিদাস স্বামী। মাত্র ১০ বছর বয়সে তার মেধার ক্ষমতা প্রকাশিত হয়।

কথিত আছে ১০ বছর বয়সে রামতনু গাছের আড়াল হতে বাঘের ডাক নকল করে সঙ্গীতাচার্য্য স্বামী হরিদাসকে ভয় দেখাতে চেষ্টা করে। তার মেধা দেখে স্বামীজি বিস্মিত হন এবং তার বাবাকে বলে নিজের সাথে বৃন্দাবন নিয়ে যান। সেখানেই রামতনু সঙ্গীতের তালিম নেন বেশ কয়েক বছর। এই বৃন্দাবনেই তানসেনের মূল ভিত রচিত হয়। বিভিন্ন রাগের সুষ্ঠু চর্চার মাধ্যমে তিনি বিখ্যাত পণ্ডিত শিল্পীতে পরিণত হন। অনেক বিখ্যাত হওয়ার পরও তাই তিনি সময় পেলেই বৃন্দাবন আসতেন। বৃন্দাবন থেকে বেহাটে ফিরে তানসেন শিব মন্দিরে সঙ্গীত সাধনা শুরু করেন। লোকমুখে শোনা যায়, তার সঙ্গীতে মন্দিরের দেয়াল আন্দোলিত হত। স্থানীয়রা পূর্ণভাবে বিশ্বাস করতে শুরু করেন যে, তানসনের সঙ্গীতের কারণেই মন্দিরটি এক দিকে একটু হেলে পড়েছে। তানসেন সম্বন্ধে আরও কিছু অলৌকিক ঘটনার উল্লেখ পাওয়া যায়। যেমনঃ বৃক্ষ ও পাথরকে আন্দোলিত করা, নিজ থেকেই বাতি জ্বালানো এবং যখন বৃষ্টির কোন চিহ্নই নেই তখন বৃষ্টি আনয়ন করা ইত্যাদি। পিতা-মাতার মৃত্যুর পর রামতনু গওসের কাছে যান আর তার সাথেই বসবাস শুরু করেন। এই সময় গওসের সহায়তায় রাজা মানসিংহের বিধবা স্ত্রীর সভায় যোগ দেন রামতনু। তিনি এসময় ধর্মান্তরীত মুসলমান রমনী প্রেমকুমারী, পরে যার নাম হয় হোসেনী তাকে বিয়ে করেন ও মুসলিম ধর্ম গ্রহন করেন। তার নাম হয় আতা আলি খাঁ। তবে তানসেন ইসলাম গ্রহন করেছিলেন কি না তা নির্ভরযোগ্য ভাবে জানা যায় না। এর পক্ষে ও বিপক্ষে দুইদিকেই প্রচুর মত পাওয়া যায়। তানসেনের দুজন স্ত্রী ও পাচ সন্তানের খবর পাওয়া যায় যথাঃ হামির সেন, সুরত সেন, তরঙ্গ সেন ও বিলাস খাঁ নামে ৪ পুত্র এবং স্বরস্বতী দেবী নামে এক কন্যা।

মোঘল সম্রাট আকবরের সভায় নবরত্নের এক রত্ন ছিলেন আতা আলি খাঁ। দিল্লীর সম্রাট আকবর সিংহাসনে বসার সাত বছর পর ১৫৬২ খ্রীস্টাব্দে আতা আলী খাঁ এর কথা জানতে পান ও তাকে দিল্লীর দরবারে অধিষ্ঠিত করেন। সে সময় তিনি রেওয়ার মহারাজা রাজারাম( রামচাঁদ) এর সভা গায়ক ছিলেন। সম্রাট আকবার একদিন আতা আলী খাঁ এর গান শুনে এতই বিমোহিত হয়ে পড়েন যে তার গলা থেকে কন্ঠহার খুলে তাকে পরিয়ে দেন এবং তার নাম দেন তানসেন। তানসেনের সময়ে আকবরের রাজসভায় আরো নামজাদা গায়ক ও সংগীতজ্ঞ ছিলেন। এদের মধ্যে মিয়া খোদাবক্স, জ্ঞান খাঁ, দারিয়া খাঁ, মিয়া মসনদ আলি খাঁ, বাবা রামদাস, সুরদাস, নবাব খাঁ, রাজ বাহাদুরসহ অনেকে।

তৎকালীন সমসাময়িক সঙ্গীতজ্ঞরা তানসেন এর এমন সৌভাগ্যে হিংসায় এক কুটকৌশলের আশ্রয় নেয়। তারা যড়যন্ত্র করে তাকে পুড়ে মারবার জন্য দীপক রাগইতে বলেন। দীপক রাগ এমনি এক শক্তিশালী রাগ যা গাইলে গান থেকে সৃষ্ট আগুনে তানসেনের শরীর ঝলসে যাবার সম্ভাবনা ছিলো। তানসেন তা জানতেন। তাই তিনি প্রথমে রাজী হননি। তিনি জানতেন, দীপক রাগ গাওয়ার পর যখন আগুন জ্বলবে তাকে নেভানোর জন্য প্রয়োজন হবে মেঘমল্লার রাগ। কিন্তু একার পক্ষে তো একসাথে দুটো রাগ গাওয়া সম্ভব নয়। ষড়যন্ত্রকারীও জানতেন, তানসেন কোনদিন এই রাগ পরিবেশন করবেন না তাই তানসেনের বিরোধীপক্ষ সম্রাট আকবরকে সংগীতানুষ্ঠানের সময় অনুরোধ করলেন তানসেনের কণ্ঠে দীপক রাগ শুনতে। সরল বিশ্বাসে সম্রাট আকবর তানসেনকে অনুরোধ করলেন দীপক রাগ গাইতে। বিচক্ষণ তানসেন বিপজ্জনক এই রাগের পরিবেশনার জন্য সময় চেয়ে নিলেন সম্রাটের কাছে। তিনি ষড়যন্ত্রকারীদের মোকাবেলা করার জন্য মেয়ে স্বরস্বতী ও গুরু কন্যাকে মেঘমল্লার গানে তালিম দিতে লাগলেন।

(চিত্রে রাগ মেঘ মল্লার)

নিজ কন্যা স্বরস্বতী ও গুরু কন্যাকে তালিম দেবার পর এক দিন রাজসভায় দীপক রাগ গাওয়ার ঘোষণা দিলেন। তানসেনের এই পূর্ব প্রস্তুতির কথা কেউ জানতেন না। নির্দিষ্ট দিনে রাজসভায় লোকে লোকারণ্য। মাঝখানে বসে আছেন স্বয়ং সম্রাট আকবর যথাসময়ে বসল গানের আসর। শত্রু পক্ষের ধারণা, কিছুক্ষণের মধ্যে তানসেনের ভবলীলা সাঙ্গ হয়ে যাবে। তানসেন শুরু করলেন দীপক রাগ। শুরু হওয়ার পর এক সময় সভাগৃহের সমস্ত মোমবাতিতে আগুন ধরে গেল। অবস্থা দেখে সবাই দিগ্বিদিক ছুটতে লাগলেন। তানসেনের নিজের শরীরেও আগুন জ্বলতে শুরু করলো। তিনি ছুটলেন বাড়ির দিকে। সেখানে নিজ কন্যা ও গুরুকন্যা সমস্বরে মেঘমল্লার গাইছে। আকাশ থেকে নামতে শুরু করেছে বৃষ্টিধারা। সেই বৃষ্টিজল নিভিয়ে দিলো তানসেনের শরীরের জলন্ত আগুন। শোনা যায় এই ঘটনার পর অসুস্থবস্থায় ছয়মাস তিনি শয্যাশায়ী ছিলেন। তিনি যেমন গানের সুর-মূর্ছনায় আগুন ধরাতে পারতেন, আবার মেঘমল্লারে বৃষ্টির ধারাও নামাতে পারতেন।তেমনি দরবারি গান গেয়ে সুস্থ করতে পারতেন দুরারোগ্য রোগীকে। তানসেন গান গেয়ে দিনের আলোকে অন্ধকার করে রাত। রাতের আঁধার দূর করে দিনের আলোয় ভরে দিতে পারতেন চারদিক। শুধু গানে নয়, যন্ত্র সংগীতেও তার অসীম ক্ষমতা। আধুনিক বাদ্যযন্ত্র বীণা। এটা তানসেনেরই আবিষ্কার।

এই মহান সঙ্গীত সাধক ৮৩ বছর বয়সে ১৫৮৯ সালের ৬ মে আগ্রায় মৃত্যুবরণ করেন। গোয়ালিয়ের কাছে বেহাটে গোয়ালিয়রের মহান সুফি সাধক শেখ মুহাম্মদ গাউসের সমাধি কমপ্লেক্সেই মিয়া তানসেনে সমাধি রচিত হয়েছিল। গাউস এবং তানসেনের দুইটি সমাধি পাশাপাশি রয়েছে। সাধু গাউসের সমাধির ডান পাশে তানসেনের সমাধি অবস্থিত। সমাধিটি আজও অটুট রয়েছে। সমাধিস্থলে প্রতি বছর ডিসেম্বর মাসে তানসেন স্মরণে জাতীয় পর্যায়ে সঙ্গীত উৎসব হয়। দেশ, বিদেশের সঙ্গীত শিল্পী, সঙ্গীতজ্ঞ, সংগীতানুরাগীরা সেখানে যোগ দেন।

From দা শুর ডাইরি

 সংগৃহীত


হুগলি জেলার নাম-মাহাত্ম্য 

হুগলি জেলার নাম-মাহাত্ম্য 

******************************************

যেকোনো স্থানের নাম ওই স্থান বা বৃহত্তর অঞ্চলের মানব ইতিহাসের স্বাক্ষর বহন করে৷ আবার, নামের উৎপত্তি নিয়েও নানা বৈচিত্র্য রয়েছে। কখনও ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট, কখনও স্থানীয় ঘটনা, ধর্ম-দেবতা, বিশিষ্ট ব্যক্তি, বিখ্যাত জিনিসের নামেই অধিকাংশ স্থানের নামকরণ হয়েছে। তাই, নামকরণ শুধুমাত্র পরিচয়জ্ঞাপক শব্দরাজি নয়, যেকোনো স্থানের নামকরণের উৎপত্তি, সেই স্থান/অঞ্চলের ইতিহাস ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরে৷

আজ আমরা আলোচনা করব আমাদের প্রিয় জেলা হুগলির নামকরণ কিভাবে হয়েছে৷ 


'হুগলি' নামটির উৎপত্তি সম্পর্কে প্রধানত দুটি মত প্রচলিত রয়েছে। ঐতিহাসিক যদুনাথ সরকারের মতে, ষোড়শ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে পর্তুগিজ বণিকেরা সপ্তগ্রাম থেকে সরে এসে বর্তমান হুগলি অঞ্চলে পণ্য মজুত করার জন্য গুদাম বা গোলা তৈরি করেছিল। সেই 'গোলা' শব্দ থেকেই 'হুগলি' নামটির উৎপত্তি হয়েছে। তাঁর মতে, পর্তুগিজদের ভাষায় 'ও-গোলিম'/'ও-গোলি' কথাটিই বাঙালিদের উচ্চারণে 'হুগলি'-তে পরিণত হয়েছিল। কিন্তু পর্তুগিজ আগমনের পূর্বেই, ১৪৯৫-৯৬ সালে রচিত বিপ্রদাস পিপলাই-এর মনসাবিজয় কাব্যগ্রন্থে 'হুগলি' নামটি পাওয়া যায়, যা উপরোক্ত মতকে প্রতিষ্ঠা করেনা। পন্ডিত হরপ্রসাদ শাস্ত্রী মতেও, হুগলি নামটি পর্তুগিজদের দেওয়া নয়৷ তবে, শম্ভুচন্দ্র দে-এর মতে, ভাগীরথী (গঙ্গা) তীরবর্তী এই অঞ্চলে প্রচুর হোগলা গাছ ছিল। এই হোগলা গাছ থেকেই নদী ও এলাকার নাম হয়েছে হুগলি। হুগলি নামটিই পর্তুগিজদের বিকৃত উচ্চারণে 'ও-গোলি', ও-গোলিম', 'হোয়েগলি' ইত্যাদিতে পরিণত হয়েছিল। 


এরকম আরো ভালো পোস্টের জন্য পেজটিকে ফলো করে রাখুন ,জনস্বার্থে শেয়ার করবেন ,আর নুতুন কোন্ বিষয়ের উপর পোস্ট চান কমেন্ট করে জানান 



চতুর্থ মাত্রা যেভাবে এলো

 # ***চতুর্থ মাত্রা যেভাবে এলো***


১৮৯৫ সাল। সে বছর সারা বিশ্বে আলোড়ন ফেলে দেয় ব্রিটিশ লেখক এইচ জি ওয়েলসের উপন্যাস দ্য টাইম মেশিন। সময় ভ্রমণ নিয়ে সেটাই প্রথম কোনো উপন্যাস। সেই উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র একজন সময় পর্যটক।


তিনি এমন একটা যন্ত্র বানিয়েছেন, যাতে বসে অতীত ও বর্তমানে ঘুরে আসা যায়। সময় পর্যটক প্রথমে ভবিষ্যতে চলে যান। একের পর এক ঘটনা-দুর্ঘটনার শিকার হন সেই অভিযানে, ঘটে মর্মস্পর্শী ঘটনাও। ভবিষ্যৎ থেকে ভালোয় ভালোয় ফিরে আসেন বর্তমানে।


তারপর অতীত যাত্রা। কিন্তু সে যাত্রা থেকে আর ফিরে আসতে পারেননি সময় পর্যটক।


ওয়েলসের এই অবিশ্বাস্য কাহিনির শুরুতেই সময়কে চতুর্থ মাত্রা হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন লেখক। তারপর একে একে বুনেছেন কাহিনির জাল।


আজকের ‘টেনেট’, ‘প্রিডেস্টিনেশন’ মুভি বা ডার্কের মতো জটিল সিরিজের কাছে ‘দ্য টাইম মেশিন’ নিতান্তই সরল মনে হবে, কিন্তু মনে রাখতে হবে এই গল্প লেখা হচ্ছে আইনস্টাইনে বিশেষ আপেক্ষিকতা প্রকাশের ১০ বছর আগে, আইনস্টাইন যখন নিতান্তই এক কিশোর। সেই সময় ‘সময়’কে মাত্রা হিসেবে দেখানো দুঃসাহিসক কাজই ছিল বটে। তখনো সময়কে রেফারেন্স কাঠামোর সাপেক্ষে পরিবর্তনশীল হিসেবে দেখাননি ওয়েলস, কারণ তখন কে-ই বা থিওরি অব রিলেটিভিটির ভবিতব্য বুঝতে পেরেছিল! তবু ওয়েলসের কল্পবিজ্ঞানকেও তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের অগ্রসর চিন্তা বলা যায়।


১৯০৫ সালে আইনস্টাইন সালে আইনস্টাইন বিশেষ আপেক্ষিকতা প্রকাশ করলেন, তাতে দেখালেন, সময় পরম কিছু নয়, প্রসঙ্গ কাঠামোনির্ভর। এরপর একটা বড়সড় পরিবর্তন এলো তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানে।


আগে স্থান ও কালকে আলাদা আলদা ভৌত রাশি হিসেবে দেখানো হতো। এ ঘটনার পর স্থান আর কালকে এক করে ফেললেন বিজ্ঞানীরা। অর্থাৎ দুয়ে মিলে এক সত্তা—স্পেস টাইম বা স্থান-কাল। আর এই স্থান-কাল বস্তুর গতি কিংবা মহাকর্ষ বলের দ্বারা প্রভাবিত হয়।


১৯০৭ সালে আইনস্টাইনের সাবেক স্কুল শিক্ষক হারমান মিনকোভস্কি এ ধারণায় একটা বিপ্লব ঘটিয়ে দিলেন।


স্থান হলো ত্রিমাত্রিক। তার তিনটি মাত্রা থাকে—দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতা। মিনকোভস্কির যুক্তি ছিল, যদি স্থান আর কাল আলাদা সত্তা না হয়, তাহলে এই দুয়ে মিলে মোট মাত্রা হবে চারটি। চতুর্থ মাত্রাটাই হলো কাল বা সময়—বললেন মিনকোভস্কি। কোনো বস্তু কোথায় অবস্থান করছে, এটা বোঝার জন্য মাত্রার প্রয়োজন হয়। আমাদের স্থানের জগৎ ত্রিমাত্রিক। এই ত্রিমাত্রিক জগতের কোথায় একটা বস্তু অবস্থান করছে, সেটা বোঝার জন্য স্থানাঙ্ক ব্যবহার করা হয়।   ২. স্থানাঙ্ক আবার কী?


কোনো একটা বস্তু কোথায় অবস্থান করছে, কোনো একটা মাত্রায় বস্তুটির স্থান কোথায়, সেটা যে দূরত্ব দিয়ে বোঝা যায়, সেটাই স্থানাঙ্ক।  ধরা, যাক দূরে একটা আয়তকার ঘাসজমির ঠিক একটা কোনায় আপনি অবস্থান করছেন। আপনার অবস্থানকে শূন্য বিন্দু ধরুন। নিচের ছবির মতো।


ধরা যাক, আপনার ডান দিকে যে আইলটা সেটা জমিটার দৈর্ঘ্য নির্দেশ করে এবং বাম দিকের আইলটা প্রস্থ। দৈর্ঘ্যকে নির্দেশকারী আইলটাকে আমরা x-অক্ষ এবং বাম দিকের আইল যেটা, প্রস্থ নির্দেশ করে, সেটাকে y-অক্ষ ধরা যাক।


দ্বিমাত্রিক স্থান


এবার ধরা যাক, ডান দিকের আইলে একটা মোহনচূড়া পাখি এসে বসেছে, ঘাসের ভেতর থেকে পোকা ধরে খাচ্ছে। অর্থাৎ পাখিটা ঠিক x-অক্ষের ওপর বসে। আপনার থেকে পাখিটার দূরত্ব ধরা যাক ১০ মিটার। তাহলে আপনার সাপেক্ষে পাখিটার অবস্থান P = (x, y, z) = (১০, ০, ০)।


আইলের ওপর


পাখিটা x-অক্ষের ওপর বসে আছে, তাই y, z অক্ষের সাপেক্ষে এর কোনো মান পাওয়া যাবে না। ধরা যাক, কিছুক্ষণ পর পাখিটা উড়ে গিয়ে ঘাসজমির ভেতর গিয়ে বসল। সেটা এমন জায়গায়, যেখান থেকে আপনার দূরত্ব ডান দিকের আইল অর্থাৎ x-অক্ষ বরাবর ১২ মিটার, ডান দিকের আইল অর্থাৎ y-অক্ষের দিকে দূরত্ব ৮ মিটার। তাহলে পাখিটা বসে আছে xy-সমতলে, তাই z-অক্ষ বরাবর এর কোনো মান থাকবে না। সুতরাং পাখিটার বর্তমান অবস্থান P = (x, y, z) = (10,8,0)।


জমির ভেতর


এবার ধরুন, ঘাসজমির মাঝখানে একটা খুঁটি পোঁতা আছে। পাখিটা উড়ে গিয়ে বসল সেই খুঁটির ওপর বসল। খুঁটির দূরত্ব আপনা কাছ থেকে x-অক্ষ বরাবর ১২ মিটার, y-অক্ষ বরাবর ৯ মিটার এবং খুঁটির উচ্চতা ৬ মিটার। আপনার সাপেক্ষে এখন তাহলে পাখিটার অবস্থান P (x, y, z) = (12,9,6). এই ছিল কোনো বস্তুর অবস্থানের ত্রিমাত্রিক হিসাব-নিকাশ।


একটু সোজাসুজি হিসাবটা দেখে নিতে পারি। আপনি যে ঘরে অবস্থান করছেন, সেই ঘরের দৈর্ঘ্য, প্রস্থ আর উচ্চত হলো ঘরটির তিনটি মাত্রা। ধরা যাক, ঘরের সিলিং থেকে একটা ঝাড়বাতি ঝুলছে সেই বাতিটার ত্রিমাত্রিক অবস্থান হলো, কোনো একটি কোনা বা শূন্য বিন্দু থেকে দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ বরাবর কতটা দূরে ও কতটা উচ্চতায় ঝুলছে, এই সবগুলো মান কত, কত ও কত?


এভাবে যেকোনো স্থির বস্তুর অবস্থান নির্ণয় করা সম্ভব। কিন্তু বস্তুটি যদি গতিশীল হয়, তাহলে প্রতি মুহূর্তে এর অবস্থান পরিবর্তন হচ্ছে। তখন কী হবে?   ৩. আবার আমরা সেই ঘাসজমিতে ফিরে যাই। আমাদের সেই মোহনচূড়া পাখিটি এখন আর স্থির হয়ে কোথাও বসে নেই। উড়ে বেড়াচ্ছে সেই ঘাসজমির ওপরে। এখন এর নির্দষ্ট অবস্থা আর তিন মাত্রা দিয়ে বলতে পারবেন না। এর অবস্থান নির্দিষ্ট করতে হলে সময়ের প্রয়োজন সময়ের। একটা নির্দিষ্ট মুহূর্তে পাখিটার অবস্থান কোথায় সেটা হয়তো বলতে পারবেন। অর্থাৎ আপনি বলতে t1, t2, t3… ইত্যাদি মুহূর্তে পাখিটার অবস্থা P1, P2, P3…ইত্যাদি বিন্দুতে। তাই স্থানাকে আরেকটা মাত্রা যোগ হবে, সেটা হলো সময়ের মাত্রা।


ধরা যাক, আপনি সেই আইলের কোনায় অর্থাৎ শূন্য স্থানাঙ্কের বিন্দুতে বসে আছে। ধরা যাক, আপনি যখন পর্যবেক্ষণ শুরু কলেন, সেই সময়টা t0=0 সেকেন্ড। সঙ্গে আপনি অবস্থান মাপতে পারলেন না। ধরা যাক, t1 সেকেন্ডে আপনার সাপেক্ষে পাখিটার অবস্থান দৈর্ঘ্যে ৯ মিটার প্রস্থে ৭ মিটার এবং উচ্চতায় ১৭ মিটার। তাহলে t1 সময়ে পাখিটার অবস্থা P = (x,y,z.t) = (9,7,17,t1)। t1-এরও একটা মান থাকবে। সেটা ধরায, আপনার পর্যবেক্ষণ শুরু তিন সেকেন্ড পর, তাহলে t1=2 সেকেন্ড। তাহলে ওই সময়ে উড়ন্ত পাখিটার অবস্থান P = (9,7,17, t1)। এখন একটু উল্টো করে বলি। যদি কোথাও লেখা থাকে, ঘাসজমিতে পাখিটা অবস্থান P = (9,7,17, t1) তাহলে আপনি নিশ্চিতভাবে বলতে পারেন, পর্যবেক্ষণ শুরুর ২ সেকেন্ড পর পাখিটা পর্যবেক্ষকের সাপেক্ষে ডান দিক থেকে ৯ মিটার, বাম দিক থেকে ৭ মিটার দূরত্বে ১৭ মিটার উচ্চতায় অবস্থান করছিল। এভাবেই আসলে সময়কে চতুর্থমাত্রা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেন হারমান মিনকোভস্কি।


আমরা সময়কে নিরবচ্ছিন্ন মনে করি। আসলেই কি সময় নিরবচ্ছিন্ন? বস্তু থেকে তরঙ্গ, শক্তি থেকে বলক্ষেত্র—কোনো কিছুই আসলে নিরবচ্ছিন্ন নয়। কোয়ান্টাম বলবিদ্যা আমাদের সে তথ্যই দেয়। সময়ের কোয়ান্টাম তত্ত্ব থাকা উচিত। সে বিষয়ে এ লেখায় বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। সময়ের কোয়ান্টাম তত্ত্বের কথা বিজ্ঞানীদের মাথায় আসার আগেই মিনকোভস্কি বলেছিলেন সময়ের বিচ্ছিন্নতার কথা। বস্তুর বিল্ডিং ব্লক যেমন পরমাণু, আর গভীরে গেলে ইলেকট্রন ও কোয়ার্ক—মিনকোভস্কি দেখালেন স্থান-কালের এমন বিল্ডিং ব্লক আছে। একটা ফটোগ্রাফকে যেমন সময়ের একটা নিশ্চল ফ্রেম হিসেবে দেখা যায়।


আমরা সময়কে দেখি নিরবচ্ছিন্নভাবে চলমান কোনো রাশি হিসেবে (আসলে অনুভব করি ঘটনাপ্রবাহ দেখে)। কিন্তু মিনকোভস্কিও সময়ের দেখলেন বিচ্ছিন্ন কাঠামো হিসেবে। তিনি স্থান আর কালের একটা কাঠামো দাঁড় করালেন, যেটাকে স্থান-কালের বিল্ডিং ব্লক বলা যায়। তিনি প্রতিটা মহূর্তে স্থান-কালের জন্য একটা ব্লক কল্পনা করলেন, এমন অজস্র ব্লকের সমন্বয়ে তৈরি গোটা মহাবিশ্বের স্থান-কাল।


ধরা যাক, সাকিব আল হাসান একটা অবিশ্বাস্য ক্যাচ ধরেছেন। পরদিন সেটা পত্রিকায় ছাপা হলো। সাকিবের ক্যাচ যতটা অবিশ্বাস্য, তার চেয়েও অবিশ্বাস্য ছবিটা। সাকিব পুরো শূন্য ভেসে আছেন, সেই অবস্থায় ক্যাচটা তাঁর মুঠোবন্দি হয়েছে।


ভাবতে পারেন, ছবিটাকে অবিশ্বাস্য কেন বলছি? হরহামেশাই এমন দৃশ্য ক্রিকেটে দেখা যায়, আর পত্রিকায় সেসব ছাপাও হয়। তাহলে এই ছবি বিশেষ কেন?


আসলে এ ধরনের প্রতিটা দৃশ্যই বিশেষ। কারণ বাস্তবে সাকিব কেন, বিশ্বের কোনো খেলোয়াড়কেই আপনি শূন্যে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ভেসে থাকতে দেখবেন না। কিন্তু ছবিতে দেখবেন।


ভাবতে পারেন, ছবিতে এমন দৃশ্য অস্বাভাবিক নয়, তাহলে বিশেষ কিভাবে হলো?


একটা ছবিতে বিশেষ কিছু বুঝবেন না। এবার আপনি ইউটিউবে গিয়ে সাকিবের ক্যাচ নেওয়ার সময়টুকু পুরোটা দেখুন। তাও বুঝতে পারলেন না তো?


ধরা যাক পুরো ভিডিওটা পাঁচ সেকেন্ডের। এই পাঁচ সেকেন্ড তৈরি হয়েছে প্রচুর সংখ্যক ফটোগ্রাফ বা স্থিরচিত্র দিয়ে। বিশ্বাস না হলে ভিডিওটা কোনো ভিডিও অ্যাডিটর টুল ব্যবহার করে দেখুন। প্রতি সেকেন্ডে হয়তো এমন ৬০-১০০টা ফটোগ্রাফ পাবেন। সেগুলো পর পর সাজানো। একদম শুরুর ফটোতে হয়তো আপনি দেখবেন ব্যাটসম্যান শট নিচ্ছেন। একই ধরনের ছবি পরপর অনেকগুলো পাবেন।


আসলে কোনো ঘটনার যখন ভিডিও করা হয়, তখন ক্যামেরা খুব দ্রুত পর পর প্রচুর স্টিল ফটোগ্রাফ বা স্থিরচিত্র তোলে। সেটা ক্যামেরাভেদে হতে পারে সেকেন্ডে ৩০ থেকে ১০০০-২০০০ পর্যন্ত। এদের একেকটিকে বলা হয় ফ্রেম। পরে ভিডিও প্লেয়ার অ্যাপের সাহায্যে খুব দ্রুত ছবিগুলো ওপেন ও সুইপ করানো হয়। তখন সেটাকেই আমরা ভিডিও হিসেবে দেখি।


হারম্যান মিনকোস্কি সময়কে এমন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ফ্রেমে ভাগ করেছিলেন। শুধু সময় নয়, এর সঙ্গে যুক্ত করেছিলেন স্থানকেও। আমরা ভিডিওতে যে স্টিল ফটোগ্রাফ বা ফ্রেম দেখি, সেগুলো কিন্তু শুধু সময়ের নয়, স্থান-কাল একসঙ্গে আছে প্রতিটা ছবিতে। তবে কাগজের পৃষ্ঠা বা টিভি/ফোন/পিসির মনিটরে এগুলো দেখা যায় দ্বিমাত্রিক ছবি হিসেবে। কারণ কাগজের পৃষ্ঠা, ফোন বা টিভির স্ক্রিনও দ্বিমাত্রিক।


একটা ফটোগ্রাফের পৃষ্ঠের দৈর্ঘ্য-প্রস্থ আছে, কিন্তু উচ্চতা নেই। তাই ত্রিমাত্রিক ছবিকে আমরা দুই মাত্রায় দেখি। কিন্তু এই যুগে থ্রিডি বা ত্রিমাত্রিক ছবি তোলার মতো যথেষ্ট ভালো ক্যামেরা আছে। সেই ছবি অবশ্য শুধু একটা দ্বিমাত্রিক স্ক্রিনেই সীমাবদ্ধ থাকে না। মনিটরের বাইরে এসে ত্রিমাত্রিক ছবি তৈরি করে। তখন আর সেটা দ্বিমাত্রিক ফ্রেমের মতো থাকে না। একটা চারকোনা বাক্সের আকার নেয়, যেটাকে আমরা ব্লকও বলতে পারি। নির্দিষ্ট সময়ে কোনো ঘটনার এ ধরনের ত্রিমাত্রিক কাঠামোকে মিনকোভস্কি বললেন চার মাত্রিক ব্লক, যেখানে দৈর্ঘ্য, প্রস্থ্য ও উচ্চতার সঙ্গে জড়িয়ে আছে একটা নির্দিষ্ট সময়। সুতরাং পুরো ব্লকটি স্থান-কালের চার মাত্রিক একটা ব্লক। এ ধরনের অসংখ্য ব্লক পর পর যুক্ত হয়ে ঘটনা তৈরি করে। অর্থাৎ প্রতিটি ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে আছে কালের মাত্রা। ঠিক এভাবেই মিনকোভস্কি স্থানের সঙ্গে কালের মাত্রা যুক্ত করলেন। তখন থেকেই সময় হয়ে উঠল চতুর্থ মাত্রা। 


সূত্র : নিউ সায়েন্টিস্ট


সকাল ৭ টার  সংবাদ।  তারিখ: ১১-০৬-২০২৪ খ্রি:।

 সকাল ৭ টার  সংবাদ। 

তারিখ: ১১-০৬-২০২৪ খ্রি:।


আজকের শিরোনাম:


টানা তৃতীয় মেয়াদে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদির শপথ অনুষ্ঠানে যোগদানের পর দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী।


দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও জোরদার করার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ ও ভারত।


আজ ১৮ হাজার ৫শো ৬৬টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমিসহ বাড়ি হস্তান্তর করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 


জনস্বার্থকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে সরকারি কর্মকর্তাদের প্রতি নির্দেশ দিলেন রাষ্ট্রপতি।


জাতীয় সংসদে পাস হলো চলতি ২০২৩—২৪ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেট।


আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানানো হবে — জানালেন দলের সাধারণ সম্পাদক।


গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবে সমর্থন জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের।


নিউইয়র্কে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ৪ রানে হারলো বাংলাদেশ।

সকাল ৭ টার  সংবাদ।  তারিখ: ১০-০৬-২০২৪ খ্রি:।

 সকাল ৭ টার  সংবাদ। 

তারিখ: ১০-০৬-২০২৪ খ্রি:।


আজকের শিরোনাম:


টানা তৃতীয় মেয়াদে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন নরেন্দ্র মোদী - নতুন দিল্লিতে শপথ অনুষ্ঠানে বিশ্ব নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যোগ দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।


 ভুটান থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানি করতে আগ্রহী বাংলাদেশ - ভুটানের প্রধানমন্ত্রীকে বললেন শেখ হাসিনা। 


প্রতি জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রতি বিভাগে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে সরকার - জাতীয় সংসদে তথ্য প্রকাশ।


বিএনপি’র আমলে যে লুটপাটের রাজত্ব কায়েম হয়েছিল তা থেকে দেশকে রক্ষা করেছেন শেখ হাসিনা - বললেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।


সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট সাংবাদিকদের সুরক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর সদিচ্ছার প্রমাণ - মন্তব্য তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর। 


ইউরোপীয় পার্লামেন্টের নির্বাচনে নিজ দলের পরাজয়ের পর ফ্রান্সের পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দিলেন দেশটির প্রেসিডেন্ট। 


নিউইয়র্কে আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে ৬ রানে হারালো ভারত - একই ভেন্যুতে আজ রাতে দক্ষিণ আফ্রিকার মোকাবেলা করবে বাংলাদেশ।

নন্দিত নাট্যজন অধ্যাপক মমতাজউদদীন এর প্রতিটি উচ্চারণ বড় বেশী মনে পড়ে আজ।

 ❝বাংলাদেশের প্রতিটি ধুলিকণা আমার। মসজিদ, মন্দির, গির্জা, মঠ- সব আমার। পৃথিবীর সেরা দেশ আমার দেশ।❞ - অধ্যাপক মমতাজউদদীন।  


নন্দিত নাট্যজন অধ্যাপক মমতাজউদদীন এর প্রতিটি উচ্চারণ বড় বেশী মনে পড়ে আজ। বহুমাত্রিক গুণীমানুষটি যা চেয়েছেন, নিজের অদম্য চেষ্টায় তাই পেয়েছেন। বলা যায় জীবনের সকল ক্ষেত্রেই সাফল্য অর্জন করেছিলেন। তিনি ছিলেন একাধারে তুখোড় অভিনেতা, লেখক ও শিক্ষাবিদ। বৃত্তের বাইরে তিনি ছিলেন ভাষা সৈনিক, মুক্তিযোদ্ধা, সবার প্রিয় শিক্ষক। বাঙালির চেতনায় ঋদ্ধ মানুষটি বাংলা ভাষা আন্দোলন, এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছেন। শিক্ষক ও লেখক হিসেবে পরিচিতি পেলেও থিয়েটারের মাধ্যমে তাঁর কর্মজীবনকে নিয়ে গেছেন অন্য উচ্চতায়। তিনি যেমন ছিলেন মঞ্চের মানুষ, তেমনি ছিলেন একজন সফল নাট্যকার এবং আমাদের শ্রদ্ধাভাজন প্রিয়জন। 


মমতাজ স্যারের জন্ম বাংলার অবিভক্ত ভারতের মালদহে নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারে ১৮ জানুয়ারি ১৯৩৫ সালের পৌষ মাসে এক রোববারে। মা সখিনা খাতুন, বাবা কলিমুদ্দিন আহমদ। ৬ বোন ও ৬ ভাইয়ের মধ্যে তিনি বাবা মায়ের তৃতীয় সন্তান। ব্যক্তিজীবনে ১৯৬৩ সালে কামরুন্নেসা মমতাজকে তাঁর জীবন সঙ্গী করে নিয়েছিলেন। তাঁদের দু'ছেলে, দু'মেয়ে সবাই প্রবাসী।   


জীবনে সূর্যের মতই তিনি জ্বলে উঠেছিলেন। মালদহের আইহো স্কুলে লেখাপড়া শুরু, চতুর্থ শ্রেণীর পর ভর্তি হন সে সময়ের সেরা মালদহ জেলা স্কুলে। গ্রাম থেকে ৫ মাইল দুরের জেলা শহর, সে সময়ে মালদহ জেলা স্কুলে পঞ্চম শ্রেণীর স্কুল ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম হয়ে সবাইকে চমকে দেন। তখন প্রতিবছর দুটি নাটক হতো, প্রতিযোগিতায় উত্তীর্ণ হয়ে তিনি অভিনয় করতেন সে সব নাটকে। শরৎচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন শিক্ষক। ভালোদের জন্য তিনি সুযোগ দিতেন অভিনয়ের। মমতাজ স্যারের প্রতিভার স্ফুরণ হয় সে সময় থেকে। 

 

দেশভাগ তাঁকে দুঃখ দিয়েছে। তিনি দেশভাগের দুঃখ প্রকাশ করে বলেছিলেন, দেশভাগ আমার মানুষ পরিচয় মুছে মুসলমান পরিচয় দিয়েছে, তাঁর জন্য এ ছিল অত্যন্ত বেদনাদায়ক, কষ্টের। দেশ ভাগের ফলে সেই মালদহ স্কুল থেকে পূর্ববঙ্গের ছাত্রদের বিতাড়িত করেছিল। ধর্ম দিয়ে মানুষকে চিহ্নিত করা, বোধ শক্তির পর থেকে মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তাঁর কাছে কখনোই গ্রহণযোগ্য ছিল না। 


১৯৪৭ এর দেশভাগের পর স্থায়ী আবাস গড়েন চাঁপাইনবাবগঞ্জ। ১৯৫১ ভোলাহাট রামেশ্বর পাইলট থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তখন তিনি মার্ক্সবাদ আর ছাত্র ইউনিয়নের মাধ্যমে ছাত্র রাজনীতি করেন। তিনি মানুষকে মানুষের পরিচয়ে দেখতে চেয়েছেন। পুরো পৃথিবীর বন্ধুত্ব আর সখ্যতা চেয়েছেন। চেয়েছেন মানুষের সামাজিক আর অর্থনৈতিক সমতা।  ১৯৫২ সালে তিনি আন্দোলন, ভাষায় দাবী আদায়ে সোচ্চার হয়েছেন, ১৯৫৩ সালে কারাবরন করেছেন। 


সে এক বৈরী সময় এসেছিল তাঁর জীবনে। ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের নির্বাচন চলছে, তিনি পরীক্ষা দিচ্ছেন, অর্ধেক পরীক্ষার পর ছুটেছেন কেন্দ্রে নির্বাচনকে সামনে রেখে। চলছে রাজনীতি, পেয়েছেন বাঙালি জাতির প্রতি উদাত্ত কণ্ঠ বঙ্গবন্ধুর প্রেরণা। ১৯৫৪ সালে রাজশাহী কলেজ থেকে সেদিনের সেরা ছাত্র উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন গ্রেস নিয়ে। পরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৬ বাংলায় বি.এ অনার্স। এর পর চলে আসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। সে সময়ে ক্লাসে পেয়েছিলেন জহির রায়হান, আবদুল গাফফার চৌধুরীর মত বন্ধুদের। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে ১৯৫৮ সালে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে এম.এ পাশ করেন। 


সে সময়ে তিনি গল্প আর প্রবন্ধ লিখতেন সমকালে। সিকান্দার আবুজাফর, হাসান হাফিজুর রহমান সহ বরেণ্য সাংবাদিক ও লেখকদের সহচর্যে ধন্য হয়েছেন। মালদহ জেলা স্কুল, রাজশাহী কলেজ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, অতঃপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কার্জন হলে চলেছে অভিনয়, পেয়েছেন প্রথম পুরস্কার। আর এভাবে ভাষা আন্দোলন, বাম ছাত্র রাজনীতি করেও নাটকে যুক্ত থেকেছেন আজীবন। 


সময়টা ১৯৫৮, আইয়ুব খানের মার্শাল'ল। তিনি চাকুরী খুঁজছেন, এ সময়ে এগিয়ে আসেন অনেকেই। শিক্ষক হিসেবে কাজ শুরু করেন বাংলার অধ্যাপক হিসেবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১৬ বছর ছিলেন সে জীবনে। ১৯৬০ এ ঘূর্ণিঝড়ের প্রাদুর্ভাবের পর অর্থ সংগ্রহের জন্য লেখেন একটি নাটক, 'তবুও আমরা বাঁচবো' এ শিক্ষকতা আর নাটকই তাঁর জীবনে আশীর্বাদ হয়ে আসে। বোধ করি সেই শক্তিতেই মুক্তিযুদ্ধের প্রাক্কালে তিনি মুক্তির সংগ্রামকে উদ্দীপ্ত করতে নাটক লিখেছিলেন, 'এবারের সংগ্রাম' যা পরে নামকরণ হয় 'স্বাধীনতা আমার স্বাধীনতা'। স্যার বলেছিলেন ১৯৭১ এর ২৫ মার্চ সে নাটকের দর্শক ছিল প্রায় দেড় লক্ষ। সেদিনের প্লাবনের পর আর একাত্তরের স্বাধীনতার আহ্বানের পক্ষে কাজ করাই ছিল তাঁর সে শক্তির উৎস। 


পেছনে ফিরে তাকালে দেখি স্যার বলছেন; মামা, চাচা, বড় বোন সহ পরিবারের প্রায় অনেকেই অভিনয় করতেন বা দর্শক সারিতে থাকতেন। রামচন্দ্র, সীতা পালা নিয়ে অভিনয়, তিনি শিখতেন তাঁদের কাছে। ছোট বেলায় বেশ বুদ্ধিমত্তার ছিলেন 'মমতাজ', তাঁর ভাষায় অত্যন্ত চালাক ও চতুর। এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, পয়সা দরকার হলে বাবা বা মায়ের পয়সা চুরিও করেছেন। বাল্যকাল কেটেছে দাদীর অপরিসীম স্নেহ, ভালোবাসায়। ছোট বেলায় জন্মে দাদীর উপহার হিসেবে পাওয়া কোমরের সোনার বিছা বা চেন হারিয়ে ফেলেছিলেন মঞ্চে, পরে মা বলেছিলেন 'তুই নাটকে নাটক করছিস, নাটকে সোনার বিছা পাবি না।'। কিন্তু ব্যক্তিজীবনে তিনি শিক্ষানুরাগী মা সখিনা খাতুনের সে কথা ভুল প্রমাণ করেছিলেন। বরং নাটকের পাগলামিকে তিনি আশীর্বাদ হিসেবে নিয়েছিলেন। খুব ভালো খেলতেন না বটে, তবুও ছোট বেলা থেকেই ফুটবল, ভলিবল, হকি খেলাধুলা সহ নাটকে অংশ নিতেন। আর চলতো নাটকে অভিনয়।


বাবা কলিমউদদীন চান নি তিনি নাটকে চাকরের অভিনয় করেন, চাইতেন তিনি নায়কের ভূমিকায় অভিনয় করবেন। কিন্তু নাটক পাগল মমতাজউদদীন দুর্দান্ত অভিনয়ে সীমানা ভেঙ্গেছিলেন, কোন চরিত্রই তাঁর কাছে ছোট মনে হয় নি। খুব ছোট চরিত্র করেও তিনি অনন্য হয়েছেন। বাংলা নাটকে মঞ্চে তিনি যেমন ছিলেন দক্ষ অভিনেতা, তেমনি সফল নাট্যকার, এবং নির্দেশক। ছোট বেলায় শখের থিয়েটারে কাজ শুরু করে জীবনে কখনো নাটককে ছেড়ে থাকেন নি। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা কালে থিয়েটার ৭৩ এর সাথে কাজ শুরু। পরে ঢাকা এসে যুক্ত হন নাট্যদল 'থিয়েটার' এর সাথে। শুরু হয় গ্রুপ থিয়েটারে কাজ।         


তাঁর লেখা নাটক ‘কি চাহ শঙ্খ চিল’ এবং ‘রাজা অনুস্বরের পালা’ রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচিতে তালিকাভুক্ত হয়েছে। কর্মজীবনে তিনি ছিলেন অত্যন্ত বিচিত্র ও বহুমাত্রিক। তিনি বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিকসমূহে নিয়মিত কলাম লিখতেন। তাঁর বেশ কিছু নাটক, বাংলাদেশের প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। তাঁর লেখায়, নাটকে হাসি, আনন্দ, দুঃখ বেদনা, সাম্প্রদায়িকতা, ক্ষয়িষ্ণু জীবন বা জীবনের দুর্নিবার আকর্ষণ, সমসাময়িক রাজনীতি, বিচ্ছেদ, লোভ, হিংসা-বিদ্বেষ, ক্ষমতায়ন সহ জীবনের নানা উপাখ্যান উঠে এসেছে। এবং তা সহনীয় হাস্যরস, কৌতুক, প্রহসনের মত নিজ নিজ জায়গায় পাঠকের এবং দর্শকের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। বলা যায় ধন্য হয়েছে সে সব নির্মাণ। নাটকের বাইরে ভাষাতত্ত্ব নিয়ে তাঁর ছিল প্রবল আগ্রহ।         


৩২ বছরের বেশি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি কলেজে বাংলা ভাষা, সংস্কৃতি ও ইউরোপীয় নাট্যকলায় শিক্ষাদান করেছেন। ১৯৬৪ সালে চট্টগ্রাম কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষক হিসেবে যোগদানের মাধ্যমে শিক্ষকতা শুরু করেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা ও সংগীত বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে শিক্ষকতা করেছেন। ১৯৭৬-৭৮ সালে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যসূচি প্রণয়নে বিশেষজ্ঞ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৯ থেকে নিউ ইয়র্কে জাতি সংঘের বাংলাদেশ মিশনে সংস্কৃতি মন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন তিনি। সেখানে তিনি বাংলা ভাষা, এবং বাঙালি জাতির প্রতিনিধিত্ব করেছেন, পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন বহির্বিশ্বে। ২০১৩ সালে অবসর গ্রহণ করেন। তিনি কখনোই মিথ্যায় জীবন যাপন করেন নি। শেষ জীবনেও তিনি সাম্প্রদায়িকতা, এবং মৌলবাদের বিরুদ্ধে কণ্ঠ ধারণ করেছেন, লেখায় অকপট সত্য তুলে ধরেছেন। 


তাঁর সৃজনশীলতা আর বাংলা সাহিত্যে অবদানের জন্য তিনি ১৯৭৬ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার,  বাংলা নাটকে অবদানের জন্য ১৯৯৭ সালে একুশে পদক, ২০০৮ সালে নাট্যকলায় অবদানের জন্য বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি কর্তৃক বিশেষ সম্মাননা ও বাংলাদেশ শিশু একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার। 


এ পৃথিবীর সর্বত্র যখন শিক্ষা, সংস্কৃতির ছোঁয়া স্পষ্ট, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি যখন ঊর্ধ্বমুখী, অত্যন্ত দুঃখজনক ভাবে তখনো বাংলা উইকিপিডিয়ায় মমতাজউদদীন স্যার সহ অনেকের প্রোফাইলে মনগড়া কথা লেখা হচ্ছে, আজও বিভ্রান্ত হচ্ছে বাংলার জনগণ। বাংলার আর এক দার্শনিক ড. মমতাজউদ্দিন আহমেদ, ২৪ ডিসেম্বর ১৯০৩ – ১২ সেপ্টেম্বর ১৯৭১, তাঁর প্রোফাইলে বলা হয়েছে তিনি ১৯৩৯ সালে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে ঢাকা কলেজের প্রথম মুসলিম অধ্যক্ষ হন। একজন শিক্ষাবিদকে মুসলিম অধ্যক্ষ বলার কারণ কি, যদি তাঁর আগে পরের অন্য ধর্মের অধ্যক্ষদের ধর্মীয় দৃষ্টিতে দেখা না হয়। প্রত্যাশা করি এসব ভুলগুলো সংশোধনে তৎপর হবেন বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নীতিনির্ধারক ও আইন প্রণেতারা। সকল বাঙালি আইন প্রণেতাদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বলছি; মমতাজউদদীন স্যার ছিলেন ১৯৭৭ থেকে ১৯৮০ পর্যন্ত বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে গবেষণা ও প্রকাশনা বিভাগের পরিচালক, কোন বিশিষ্ট বাঙালিকে তো নয়ই, তাঁর মত শ্রেষ্ঠ বাঙালিকে আমরা উইকিপিডিয়ার মত গুরুত্বপূর্ণ তথ্যে ধর্মান্ধর চোখে দেখতে চাই না। চাই মানুষ হিসেবে বিষয়গুলো বুঝে নিতে, সেভাবে বর্তমান ও আগামী প্রজন্মকে জানাতে। কারণ তাঁরা যুগ যুগ ধরে যেমন আমাদের শ্রেষ্ঠ শিক্ষক, আমাদের প্রেরণা দিয়েছেন, তেমনি বর্তমানে; এবং আগামীতে আমাদের প্রেরণা দেবেন আগামীর কোন 'মমতাজউদদীন' স্যার, যিনি সবে মাত্র ভূমিষ্ঠ হয়েছেন, বা এখনো তাঁর জন্মই হয় নি।


বলছিলাম মমতাজ স্যারের কথা। স্যারের নাটক দেখার জন্য আমরা যেমন মঞ্চে ভিড় জমাতাম, তেমনি টেলিভিশনের সামনে অপেক্ষা করতাম, যখন তিনি ছিলেন টেলিভিশনের নিয়মিত অভিনেতা। 'মমতাজউদদীন' স্যার নাটকে আছেন মানেই ধরে নিতাম সে নাটক সুপার হিট হবে। হতোও তাই। নাটক শেষে স্যারের মুখে সংলাপ হয়ে যেতো আমাদের সংলাপ। সুনিপুণ অভিনয় শৈলী, নির্মল আনন্দ হাসি, আড্ডার মাঝেই আমরা শিখেছি তাঁর কাছে। স্যার যেমন ক্যামেরার সামনে আমাদের শেখাতেন, তেমনি ক্লাসে, নেপথ্যে, লেখায়, সৃষ্টিতে, নির্মাণে। স্যার ছিলেন সকল শিক্ষার্থীর প্রিয় শিক্ষক। এতো কিছুর পরও তিনি না পারার যন্ত্রণায় বিদ্ধ হয়েছেন। জীবনের শেষ প্রান্তে এসেও তিনি অব্যক্ত ব্যথায় বলেছিলেন; ❝শিশুর মতো হয়ে গেছি আমি। আমার বাঁচার কোনও যোগ্যতা নেই, আমি আবর্জনা মাত্র।❞ তাঁর মতো মাটি ও মানুষকে ভালোবাসতে, সত্য উচ্চারণ করতে, খুব কম বাঙালিকেই দেখেছি। তাঁর মতো মানুষকে ভালো না বেসে থাকা যায় না। 


চিত্রসূত্র: আন্ত:র্যোগ !


বাত ব্যথা হলেই হোমিও ঔষধের  আবশ্যকতা হয়ে পরে,— গেঁটে বাত (Gout)। ---

 🎋বাত ব্যথা হলেই হোমিও ঔষধের  আবশ্যকতা হয়ে পরে,— গেঁটে বাত (Gout)। --- 🔖 Ledum Palustre 30 🌹 প্রধান লক্ষণ: ▪ গেঁটে বাতের ব্যথা, যা নিচ থে...